শাল্লা প্রতিনিধি ::
শাল্লায় হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ মেরামত কাজে নানা অনিয়মের দায়ে উপজেলা ইউএনও’র কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছে হাওর বাঁচাও আন্দোলন শাল্লা উপজেলা কমিটি। অনিয়ম-দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা, নীতিমালা উপেক্ষা করে প্রকল্প গ্রহণ, অক্ষত অল্প ক্ষতিগ্রস্ত প্রকল্পে বিপুল বরাদ্দ দিয়ে সরকারের অর্থ নষ্ট এবং বর্ধিত সময়েও বাঁধের কাজ শেষ না হওয়ার প্রতিবাদে এ ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি। বুধবার (১৫ মার্চ) বুধবার দুপুর ১২টায় সংগঠনের অস্থায়ী কার্যালয় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে উপজেলা পরিষদের গেটের সামনে গিয়ে শেষ হয়। ঘেরাও কর্মসূচির পরে এক সমাবেশে ঘণ্টাব্যাপী বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রিয়, জেলা ও উপজেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে হাওর বাঁচাও আন্দোলন শাল্লা উপজেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক তরুণ কান্তি দাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত সেনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন তালুকদার। আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রিয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায়, সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হক মিলন, বাঁধ বিষয়ক সম্পাদক রাজু আহমেদ, একাত্তর টেলিভিশন ও দৈনিক কালেরকণ্ঠ পত্রিকার সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি শামস শামীম, শাল্লা উপজেলা কমিটির সহ-সভাপতি অবিনাশ চন্দ্র দাশ, হবিবপুর ইউনিয়ন কমিটির আহ্বায়ক ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সহ-সভাপতি রথীন্দ্র চন্দ্র সরকার, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সাধারণ সম্পাদক মিঠু চন্দ বিশ্বাস প্রমুখ।
বক্তারা বলেন নির্ধারিত সময় ২৮ফেব্রয়ারির পরে বর্ধিত সময় বাড়িয়েও হাওররক্ষা বাঁধের কাজ শেষ করতে পারেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড। এর পেছনে রয়েছে নানা অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতি। অনেক প্রকল্পে প্রকৃত কৃষকদেরকে বাঁধ রক্ষার দায়িত্ব না দিয়ে বাজার ব্যবসায়ীদের বাঁধের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। হাওরে ফসলডুবি হলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা। বাঁধ নির্মাণে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে লোটপাট করা হচ্ছে সরকারের কোটি কোটি টাকা। এজন্য সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। ইউএনও’র অফিস ঘেরাও কর্মসূচিতে সংগঠনের নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি সমাজের নানা শ্রণি পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে উপজেলার ৬টি হাওরের ১০৬ কিঃমিঃ বাঁধের ভাঙা বন্ধকরন ও মেরামত কাজে ১৯৭টি প্রকল্পে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে প্রায় ৪০কোটি টাকা। যা গত অর্থ বছরে ৮৭কিঃমিঃ বাঁধ সংস্কারে ১৩৮টি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ছিল ২৪কোটি টাকা। এবছর উপজেলায় প্রায় ২৪হেক্টর বোরোজমি আবাদ করা হয়েছে।