স্টাফ রিপোর্টার::
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে রাস্তা থেকে তুলে বাড়িতে নিয়ে হাত পা ভেঙ্গে ও পায়ের নখ তুলে যুবককে হত্যার ঘটনায় থানায় ১০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে নিহত যুবক সাকিব রহমানের পিতা মুজিবুর মিয়া তাহিরপুর থানায় এই হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে তাহিরপুর কয়লা আমদানিগ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ও তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোশারফ হোসেন তালুকদারকে।
মামমলার বিবরণ ও নিহতের পিতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সোমবার রাতে তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের ঘাগটিয়া গ্রামের উল্লাসের মোড় থেকে সাকিব রহমানকে তুলে নিয়ে যায় ১০-১২ জন লোক। তারা মোশারফ হোসেন তালুকদারের বাড়িতে নিয়ে বেদম মারপিট করে ওই যুবককে। মারের চোটে অজ্ঞান হয়ে গেলে তার হাত পা ভেঙ্গে দেয়া হয়। এক পর্যায়ে পায়ের নোখ তুলে নেওয়া হয়। গভীর রাতে এই খবর পেয়ে ছেলেকে উদ্ধার করতে তার বাবা মুজিবুর রহমান নির্যাতনকারীদের বাড়িতে গেলে তাকেও লাঞ্চিত করা হয় এবং হত্যার হুমকি দিলে তিনিও পালিয়ে আসেন। সকালে খবর পান তার ছেলে তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আছে। সেখান থেকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল ও পরবর্তীতে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পথেই তার মৃত্যু হয়। এখনো লাশ ওসমানী হাসপাতালে রয়েছে। সেখানে পোস্ট মর্টেম শেষে সুনামগঞ্জে পাঠানো হবে। উল্লেখ্য এর আগেও ২০১৯ সালে নির্যাতনকারীরা ওই যুবককে এলোপাথারি কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছিল এবং তাদের বাড়িঘর আগুনে জ্বালিয়ে দিয়েছিল।
নিহতের পিতা ও মামলার বাদী মুজিবুর রহমান ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামি করেছেন মোশারফ হোসেন তালুকদারকে। অন্য আসামিরা হলো মহিনুর তালুকদার, মোশাহিদ তালুকদার, মোনায়েম হোসেন রাজু, রফি তালুকদার, নূরুজ আলী, আব্দুল কাহার, আব্দুল বাহার, পটল তালুকদার ও শামসু মিয়া। তবে আসামিদের একজনকেও এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
মামলার বাদী নিহতের পিতা মুজিবুর রহমান বলেন, মোশারফ হোসেন তালুকদার এলাকার একচ্ছত্র প্রভাবশালী। তার বাহিনী তার নির্দেশে আমার নীরিহ ছেলেকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে হাত পা ভেঙ্গে পায়ের নখ তুলে নির্যাতন করে হত্যা করেছে। এর আগেও আমার ছেলেকে কুপিয়েছিল এবং আমাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছিল। এই সন্ত্রাসী বাহিনীর সর্বোচ্চ শাস্তি চাই আমি।
তাহিরপুর থানার ওসি সৈয়দ ইফতেখার হোসেন বলেন, বাড়িতে তুলে নিয়ে যুবককে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় দশজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। নিহত যুবকের লাশ এখনো সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে। সেখানে পোস্ট মর্টেম ও সুরত হাল রিপোর্ট শেষে সুনামগঞ্জে পাঠানো হবে। তবে মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে বলে জানান তিনি।