হাওর ডেস্ক::
নিজের ১২ জন বন্ধু ও পরিচিতকে সায়ানাইড দিয়ে হত্যা করেছেন সন্দেহে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বিবিসি জানায়, কয়েকদিন আগে সারারাত রংসিউথাপর্ণর এক বন্ধুর রহস্যজনক মৃত্যু হয়। তা নিয়ে তদন্তের মধ্যেই মঙ্গলবার পুলিশ রংসিউথাপর্ণকে গ্রেপ্তার করে।
রংসিউথাপর্ণর ওই বন্ধু এ মাসের শুরুতে তার সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিল। সেখানেই তার মৃত্যু হলে বন্ধুর পরিবার ওই মৃত্যুকে স্বাভাবিক বলে মেনে নিতে পারেনি। তারা বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে।
ওই মৃত্যু নিয়ে তদন্ত করতে গিয়ে এ সপ্তাহে পুলিশ জানায়, তাদের বিশ্বাস রংসিউথাপর্ণই তার ওই বন্ধুকে হত্যা করেছে। শুধু তাই নয়, এর আগে সে তার আরো ১১ জন বন্ধু ও পরিচিতকে হত্যা করেছে। যাদের মধ্যে তার একজন সাবেক ছেলেবন্ধুও রয়েছে।
পুলিশের অভিযোগ, আর্থিক কারণে রংসিউথাপর্ণ ওই সব হত্যাকাণ্ড করেছে।
যদিও এই নারী আদালতে তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করেছে।
পুলিশ জানায়, দুই সপ্তাহ আগে রংসিউথাপর্ণ তার বন্ধুকে নিয়ে পশ্চিম জাভায় বৌদ্ধদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যান।
অনুষ্ঠানটি ছিল একটি নদীর পাড়ে। অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরপরই তার বন্ধু শ্রীপর্ণ খানওয়াং নদীর পাড়েই ঢলে পড়েন এবং মারা যান।
ময়নাতদন্তে শ্রীপর্ণর শরীরে সায়ানাইড এর উপস্থিতি পাওয়া যায়।
তার মোবাইল ফোন, কাছে থাকা অর্থকড়ি এবং ব্যাগ সবই খোয়া গিয়েছিল।
পুলিশ জানায়, আরো একজনকে ঠিক একই ভাবে হত্যা করা হয়েছে। যদিও নিহতের নামপরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
২০২০ সাল থেকে রংসিউথাপর্ণ এ হত্যাকাণ্ড শুরু করে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
পুলিশ এখনও নিহত সবার নামপরিচয় সনাক্ত করতে পারেনি। তবে রংসিউথাপর্ণর সাবেক ছেলেবন্ধুর পরিচয় পাওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে দুইজন নারী পুলিশ কর্মকর্তাও রয়েছেন।
থাইল্যান্ডের পুলিশ রংসিউথাপর্ণর বর্তমান সঙ্গী যিনি রাচাবুড়ি প্রদেশের একজন জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
এই জুটি কয়েকদিন আগে আলাদা হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম।
পুলিশের বিশ্বাস, রংসিউথাপর্ণর হামলার শিকার হওয়া তার এক বন্ধু খুব সম্ভবত তাকে আড়াই লাখ বাথ ঋণ দিয়েছিল।
তিনি রংসিউথাপর্ণর সঙ্গে দুপুরের খাবার খাওয়ার পরপরই বমি করতে করতে জ্ঞান হারান। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন।
এর আগে নিহতদের স্বজনরা গহনা ও নগদ অর্থ খোয়া যাওয়ার অভিযোগ করেছে। কিন্তু তাদের কারো পরিবার থেকেই হত্যাকাণ্ড হতে পারে বলে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়নি।
ওইসব মৃতদের কবর দেওয়া হয়ে গেছে। তাই তাদের শরীর থেকে নমূনা সংগ্রহ করা এখন বেশ কঠিন বলে মনে করে পুলিশ।
থাইল্যান্ডে সায়ানাইডের উপর কঠোর নজরদারি আইন রয়েছে। যদি কারো কাছে অবৈধভাবে সায়ানাইড পাওয়া যায় তবে তার দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।