জগন্নাথপুর প্রতিনিধি::
জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনে আজ বৃহষ্পতিবার ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। উপজেলার ৮৯টি কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। এ উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ১৪৮ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২৩১ জন এবং নারী ভোটার ৯৯ হাজার ৯১৭ জন। নির্বাচনে স্থায়ী বুথ রয়েছে ৫২৯টি ও অস্থায়ী ৭০টি। প্রতিটি কেন্দ্রে একজন পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৪ জন পুলিশ সদস্য, ১২ জন আনসার সদস্যসহ পর্যাপ্ত র্যাব, বিজিবি, ভ্রাম্যমাণ ম্যাজিষ্ট্রেট উপস্থিত পালন করছেন। তবে ভোট উত্তাপহীন লক্ষ্য করা গেছে।
উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়, গত ২ নভেম্বর সর্বশেষ জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী আকমল হোসেন নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২৬ ডিসেম্বর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আকমল হোসেন মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর শূন্য পদে আজ ২৫ মে চেয়ারম্যান পদে উপ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এদিকে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ব্যাপক নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রত্যেকটি ভোটকেন্দ্রে পুলিশ ও আনসার সদস্যরা নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবেন। এছাড়া জরুরী প্রয়োজনে মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং টিম সার্বক্ষণিক ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে। যে কোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সাদা পোষাকে জেলা বিশেষ শাখার সদস্য ও জেলা গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা প্রতিটি কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করবেন। প্রত্যেকটি কেন্দ্রের আইন শৃঙ্খলা পর্যবেক্ষণে সার্বক্ষণিক বিজ্ঞ জুডিসিয়াল ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণও উপস্থিত রয়েছেন।
নির্বাচনে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রার্থীরা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি নুরুল ইসলাম (নৌকা), জাতীয় পার্টির আতাউর রহমান (লাঙ্গল), জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের প্রার্থী যুক্তরাজ্য প্রবাসী আব্দুল কাইয়ুম কামালি সিতু (খেজুর গাছ), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী যুক্তরাজ্য প্রবাসী হারুন রাশীদ (আনারস) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী যুক্তরাজ্য প্রবাসী সৈয়দ তালহা আলম (কাপ পিরিচ)।
ভোটাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, প্রবাসী অধ্যুষিত এ উপজেলায় স্থানীয় নির্বাচন থেকে জাতীয় নির্বাচনে এখানকার মানুষজন নির্বাচনি উৎসবের রঙে মেতে উঠেন। তবে এবারের উপ নির্বাচনে উৎসবের বদলে চারদিকেই যেন নিরবতা। ভোটেরদের মাঝে নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ কম, নেই নির্বাচনী আমেজও। উপনির্বাচনে বিএনপির কোন নেতা অংশ নেননি। ভোটকেন্দ্রেও নেতাকর্মীদের না যাওয়ার জন্য উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে।
জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের প্রার্থীও তাঁদের প্রতীকের ভোট বহাল রাখতে মাঠে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াই বিদ্রোহী প্রার্থী ভোটে লড়াইয়ের চেষ্টা করছেন। মাঠে গ্রহণযোগ্যতা না থাকায় জামানত হারাতে পারেন জাপা প্রার্থী। তবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা তাঁদের জয়ের ব্যাপারে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান জানান, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্পন্নের লক্ষে আমরা সকল প্রস্তুুতি শেষ ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন সম্পন্নের লক্ষ্যে ৩ স্তরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে আছে। এছাড়াও সাদা পোষাকসহ বিভিন্ন কেন্দ্রে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োগ করা হয়েছে।