স্টাফ রিপোর্টার::
সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে মসজিদে দান করা কাঁঠাল নিলাম নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিনজন খুনের ঘটনার প্রায় এক সপ্তাহ পর এক পক্ষ দুটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। ১৬ জুলাই রাতে ও ১৭ জুলাই সকালে এই মামলা দুটো দায়ের করা হয়। একটি মামলায় আসামি করা হয়েছে ৬৯ জনকে এবং আরেকটি মামলায় আসামি করা হয়েছে ৯৪ জনকে। দুটি মামলাই দায়ের করেছেন হাসনাবাদ গ্রামের দ্বীন ইসলাম পক্ষের নিহত নজরুল ইসলাম ও বাবুল মিয়ার স্বজনরা।
এদিকে গ্রামের মামলদার আলী পক্ষের নিহত শাহজাহান আলীর পক্ষ থেকে এখনো কেউ মামলা দায়ের করেনি। তবে সংঘর্ষের দুদিন পর বার্ধ্যক্যজনিত রোগে আক্রান্ত মামলদার আলী পক্ষের মোখলেছুর রহমান ১১ জুলাই চিকিৎসা নিতে গিয়ে অটো রিক্সা থেকে ছিটকে পড়ে রাতে বাসায় মারা গিয়েছিলেন। এটিকে সংঘর্ষের মৃত্যু হিসেবে প্রচার করছে একটি পক্ষ। তবে এটির সঙ্গে সংঘর্ষের কোন সম্পর্ক নেই বলে জানায় তার পরিবার ও পুলিশ।
পুলিশ জানায়, শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের হাসনাবাদ গ্রামের মালদার আলী ও দ্বীন ইসলাম পক্ষের মধ্যে অন্তত চার দশকের পুরনো বিরোধ আছে। এ নিয়ে একাধিকবার দুই পক্ষ সংঘর্ষ ও মামলায় জড়িয়েছে। গত ৭ জুলাই হাসনাবাদ গ্রামের মসজিদে একটি কাঠাল দান করেন এক ব্যক্তি। নামাজ শেষে ওই কাঠাল নিলাম ওঠে। নিলামে কাঠালটি কিনে নেন হাসনাবাদ গ্রামের মালদার আলী পক্ষের খসরু মিয়া। নিলাম ডাক শুনতে পাননি এই দাবি জানিয়ে ফের নিলামে তোলার আহ্বান জানান দ্বীন ইসলাম পক্ষের আব্দুল বাহার। এ নিয়ে দু’জনের আতœীয়-স্বজনরা মসজিদেই তর্কাতর্কিতে জড়ান এবং হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় উত্তেজনা দেখা দিলে স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা টনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষকে নিবৃত করে আসেন। তারা শালিসে বিষয়টি দেখে দেবার আহ্বান জানালেও এক পক্ষ শালিস মানতে চায়নি। ১০ জুলাই সকাল ১১টার দিকে দুই পক্ষই দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। এতে দ্বীন ইসলাম পক্ষের নূরুল হক ও বাবুল মিয়া মারা যান। মালদার আলী পক্ষের শাহজাহান মিয়া মারা যান। সংঘর্ষে আহত হন অন্তত ৪০জন। এ ঘটনাটি দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। ঘটনার পর থেকেই গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে গ্রাম ঘটনার পরই পুরুষশুন্য হয়ে গেছে। এ কারণেই মামলায় বিলম্ব হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।