হাওর ডেস্ক:
বিশ্বের অর্ধেক মানুষই ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও)।
গতকাল শুক্রবার (২১ জুলাই) জাতিসংঘের এক সংবাদ সম্মেলনে এ সতর্কবার্তা দেন সংস্থাটির গ্রীষ্মমন্ডলীয় রোগের ইউনিট প্রধান রমন ভেলাউধন।
ভেলাউধন বলেন, ডাব্লিউএইচও ২০০০-২০২২ সালের মধ্যে ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে আটগুণ বৃদ্ধি রেকর্ড করেছে। এ সময় আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ লাখ থেকে বেড়ে ৪২ লাখ হয়েছে। এ ছাড়াও প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। কারণ সংস্থাটি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আরো বেশি সঠিক পরিসংখ্যান পেয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বিশ্ব জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক ডেঙ্গুর ঝুঁকিতে রয়েছে। ডেঙ্গু আনুমানিক ১২৯টি দেশকে প্রভাবিত করে।’ প্রতিদিন প্রায় ১০০ থেকে ৪০০ আক্রান্তের খবর নথিভুক্ত করা হয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ডা. রমন ভেলাইউধান আরও বলেন ঘুমানোর সময়ে মশারির ব্যবহার, বাসাবাড়ি ও অফিস আদালতে পানি জমতে না দেয়া- এগুলো হয়তো খানিকটা সুরক্ষা দিতে পারে। কিন্তু এই রোগটি ঠেকানোর সবচেয়ে কার্যকর পন্থা হলো এডিস মশা ও সেটির প্রজনন ক্ষেত্র সম্পূর্ণ ধ্বংস করা। তাই ডব্লিউএইচওর পক্ষ থেকে বিশ্ববাসীকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
সংস্থাটি বলছে, বিশ্বজুড়ে বাড়ছে ডেঙ্গুতে আক্রান্তদের সংখ্যা। এই মুহূর্তে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন। বৃষ্টিবহুল ও উষ্ণ অঞ্চলে অকল্পনীয় দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে রোগটি। বর্তমানে ডেঙ্গুর বিস্তার রোধ করা না গেলে চলতি বছরই রেকর্ড সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হবেন। সামনের দিনে আসতে পারে ডেঙ্গু মহামারির ঘোষণা।
ডা. রমন ভেলাইউধান বলেন, ডেঙ্গু একটি গুরুতর অসুস্থতা। এটি সাধারণত মশার কামড়ের মাধ্যমে এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির কাছে ছড়িয়ে পড়া একটি ভাইরাল সংক্রমণ। আর ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে ডেঙ্গু হতে পারে উপসর্গবিহীন। এর বিরুদ্ধে বর্তমানে একমাত্র ভ্যাকসিন হলো সানোফি পাস্তুর।
ডেঙ্গুর এ ভ্যাকসিনটি ব্যবহারের জন্য প্রায় ২০টি দেশে নিবন্ধিত আছে। এটি শুধু তাদের ক্ষেত্রে কাজ করে যারা একবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এর জন্য তাদের তিনটি ডোজ নিতে হয়।
তিনি আরও বলেন, প্রতি বছর ডেঙ্গুতে প্রায় ৪০ থেকে ৭০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। তবে অনেক দেশ আছে যারা ডেঙ্গুতে মৃত্যু সংক্রান্ত তথ্য ডব্লিউএইচওকে জানায় না।
ডাব্লিউএইচওর কর্মকর্তা ভেলাউধন বলেন, মৃত্যুর হার বেশিরভাগ দেশে প্রায় এক শতাংশেরও কম এবং আমরা এটি আরও কমানোর প্রত্যাশা করছি।