বিশেষ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জ-৪ (সদর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা) আসনে নৌকার প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচনী মাঠ থেকে সরে দাড়ালেন সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন। মঙ্গলবার বিকেলে সুনামগঞ্জ শহরের হাসননগরস্থ বাসভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করে এই ঘোষণা দেন তিনি। এসময় সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। নির্বাচন থেকে সরে দাড়ানোর পাশাপাশি তিনি নেতাকর্মীদের নিয়ে নৌকার প্রার্থী ড. মোহাম্মদ সাদিককে বিজয়ী করতে মাঠে কাজ করার অঙ্গিকার ব্যক্ত করেন। সংবাদ সম্মেলনের আগে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ড. মোহাম্মদ সাদিকও ব্যরিস্টার এম. এনামুল কবির ইমনের বাসভবনে এসে সৌজন্য সাক্ষাত করে যান।
সাংবাদিক সম্মেলনে ব্যরিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন বলেন, আমি ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ করে গণমানুষের সঙ্গে রাজনীতি করছি। আমার বাবা ও মা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন আমৃত্যু। সেই উত্তরাধিকার ধারণ করেই আমি রাজনীতি করছি। তিনি আরো বলেন, ২০১৪ সনে আমি নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পেয়েছিলাম। দল ও জাতীয় স্বার্থে সেদিন প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেছিলাম। তখন আওয়ামী লীগ মহাজোটের শরিক দল জাতীয় পার্টিকে আসনটি ছেড়ে দেয়। তখনই আওয়ামী লীগ বঞ্চিত হয়। কিন্তু আমি বসে থাকিনি গত ১৫ বছর ধরে এই আসনে স্বাধীতার প্রার্থী ও নৌকার প্রার্থী দেওয়ার পক্ষে পক্ষে মাঠে থেকে আওয়াজ উঠিয়েছি। সাধারণ নেতাকর্মীরা আমার সঙ্গে ছিলেন, তারা এই আওয়াজে শরিক হয়েছেন। আমি আওয়াজ তুলতে পেরেছিলাম ‘ লাঙ্গল হঠাও, নৌকা ভাসাও’। জননেত্রী শেখ হাসিনা এবার আমাদের কথা শুনেছেন।
ব্যরিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন আরো বলেন, আমি এবার যখন স্বতন্ত্র মনোনয়ন দিয়েছিলাম তখন কথা দিয়েছিলাম এবার এই আসন শরিকদের শেষ পর্যন্ত ছেড়ে দিলে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হবো। কিন্তু এবার শেষ পর্যন্ত আসনটি ছেড়ে দেওয়া হয়নি। গত ১৭ ডিসেম্বর জাতীয় পার্টি বিকাল ৪টা পর্যন্ত সময় দিয়েছিলো নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে ষ্পষ্ট করার জন্য। এ কারণে আমি ওই সময় প্রার্থীতা প্রত্যাহার করতে পারিনি। এখন পরিস্থিতি ভালো। তাই আওয়ামী লীগ প্রার্থী ড. মোহাম্মদ সাদিককে সমর্থন দিয়ে আমি প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে সরে দাড়ালাম। নেতাকর্মীদের নিয়ে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক নৌকাকে সমর্থন করলাম। এখন থেকে নেতাকর্মীদের নিয়ে নৌকাকে বিজয়ী করতে কাজ করবো। তবে নির্বাচনে একটি মহল ষড়যন্ত্র করতে পারে এই আশঙ্কার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে অবশ্যই আগামী ৭ জানুয়ারি নৌকাকে বিজয়ী করতে হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগ নেতা এডভোকেট নান্টু রায়, সুবীর তালুকদার বাপ্টু, দেওয়ান ইমদাদ রেজা চৌধুরী, সিরাজুর রহমান সিরাজ, নূরে আলম সিদ্দিকী উজ্জ্বল প্রমুখ।
উল্লেখ্য গত তিনটি জাতীয় নির্বাচনেই এই আসনটি মহাজোটভুক্ত দল জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ। এই আসনে টানা দুইবার এমপি নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টির এডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ। তবে এবার আসনটিতে নিজেদের প্রার্থী দেয় আওয়ামী লীগ। পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে হিসেবে নৌকা প্রতীকে লড়ছেন।