ধর্মপাশা প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নের সরিষাকান্দা ইসলামপুর গ্রামের সামনের সড়ক থেকে শনিবার (২৪ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে ১০টার দিকে একটি ভ্যানিটি ব্যাগ ও একটি কাপড়ের ব্যাগের ভেতরে পলিথিনে মোড়ানো ১০কেজি গাঁজাসহ
খোকন মিয়া (৫৫) ও বানেছা বেগম (৪৫) নামের দুই মাদকব্যবসায়ী কে আটক করেছেন স্থানীয় কয়েকজন যুবক। খবর পেয়ে রাত সোয়া ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই দুইজন মাদকব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার ও ১০কেজি গাঁজা জব্দ করেছেন ধর্মপাশা থানা পুলিশ। ওই দুইজন মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে খোকন মিয়ার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার ধজনগর গ্রামে।আর বানেছা বেগমের বাড়ি একই জেলার আখাউড়া উপজেলার নীলাহাদ পশ্চিমহাটি সওদাগর পাড়া গ্রামে।
ধর্মপাশা থানা পুলিশ,স্থানীয় এলাকাবাসী ও ওই দুইজন মাদকব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই দুই মাদকব্যবসায়ী সম্পর্কে শালি-দুলাভাই হলেও তাঁরা দুইজন স্বামী -স্ত্রী পরিচয় দিয়ে শনিবার সকাল নয়টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলা সদর থেকে তাঁরা সুনামগঞ্জ হয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। ওইদিন রাত পৌনে ১০ টার দিকে ওই দুইজন ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নের সরিষাকান্দা ইসলামপুর গ্রামের সামনের সড়কে এলে স্থানীয় কয়েকজন যুবক তাঁদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাঁরা নিজেদেরকে স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন বলে জানান। তাঁদের কথাবার্তা অসংলগ্ন মনে হওয়ায় স্থানীয় যুবকেরা ওই দুইজনের সঙ্গে থাকা ভ্যানিটি ব্যাগ ও কাপড়ের ব্যাগের ভেতর তল্লাসি করতে চাইলে এতে তাঁরা অপারগতা প্রকাশ করেন। এ নিয়ে স্থানীয় যুবকদের সঙ্গে তাঁদের ধস্তা ধস্তি শুরু হয়। এক পর্যায়ে তাঁদের সঙ্গে থাকা ভ্যানিটি ব্যাগ ও কাপড়ের ব্যাগ খুলে স্থানীয় নয়জন যুবক ভ্যানিটি ব্যাগের ভেতরে পলিথিনে মোড়ানো এক প্যাকেট গাঁজা ও কাপড়ের ব্যাগের ভেতরে পলিথিনে মোড়ানো তিন প্যাকেট গাঁজা দেখতে পান।পরে যুবকদের মধ্যে একজন ঘটনাটি ধর্মপাশা থানার ওসি মো.শামসুদ্দোহাকে মোবাইলে জানান। পরে ওসির নির্দেশে ওই ইউনিয়নে অভিযানরত থানার এসআই আমিনুর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই দুইজন মাদকব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার ও ১০কেজি গাঁজা জব্দ করে রাত ১২টার দিকে থানায় নিয়ে আসা হয়।
ধর্মপাশা উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ও সরিষাকান্দা ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা তামীম আহমেদ সুজন (২৫) বলেন, আমার এক পরিচিতজন শনিবার রাত নয়টার দিকে মোবাইলে দুইজন মাদকব্যবসায়ীর চেহারা ও পোশাকের বর্ণনা দিয়ে আমাকে জানান যে, একজন নারী ও একজন পুরুষ ভ্যানিটি ব্যাগ এবং কাপড়ের ব্যাগের মধ্যে গাঁজা নিয়ে ধর্মপাশা উপজেলা সদরের উদ্দেশ্যে যাচ্ছে।এই খবর পেয়ে আমার আরও আটজন বন্ধুকে নিয়ে সড়কের ওপর ওই দুইজন মাদকব্যবসায়ীর জন্য অপেক্ষা করতে থাকি। পথচারীদের সন্দেহ হলেই আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। রাত পৌনে দশটার দিকে ওই দুইজন মাদকব্যবসায়ী আমাদের গ্রামের সামনের সড়কে এলে আমরা তাঁদেরকেও জিজ্ঞাসা করি। এই দুইজনের কথাবার্তা অসংলগ্ন মনে হওয়ায় আমরা তাঁদের সঙ্গে ভ্যানিটি ব্যাগ ও কাপড়ের ব্যাগ খুলে দেখাতে বললে তাঁরা দেখাতে অপরাগতা প্রকাশ করে। এ নিয়ে ওই দুইজনের সঙ্গে আমাদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এক পর্যায়ে তাঁদের ভ্যানিটি ব্যাগ ও কাপড়ের ব্যাগ খুলে দেখা যায়, পলিথিনে মোড়ানো গাঁজা রয়েছে। ঘটনাটি সঙ্গে সঙ্গে আমরা থানার ওসিকে মোবাইল করে জানিয়েছি।
মাদকব্যবসায়ী খোকন মিয়া ও বানেছা বেগম দাবি করেন, টাকার লোভে পড়ে তাঁরা দুইজন এই মাদকব্যবসায় জড়িয়েছেন।কসবা থেকে ঢাকার রোডটি নিরাপদ নয় মনে করে তাঁরা ধর্মপাশা টু ঢাকার পথটি বেছে নিয়েছেন। এই অপরাধমূলক কাজ আর ভবিষ্যতে করবেন না বলে এই প্রতিবেদককে জানান।
ধর্মপাশা থানার এসআই আমিনুর রহমান বলেন,আমি সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নে মাদকবিরোধী অভিযানে ছিলাম। ওসি স্যারের কাছ থেকে খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই দুইজনকে গ্রেপ্তার করি ও ১০কেজি গাঁজা জব্দ করে থানায় নিয়ে আসি। মাদকব্যবসায়ী ওই দুইজনের পরিচয় প্রথমে স্বামী-স্ত্রী বলা হলেও পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা দুইজন সম্পর্কে শালি-দুলাভাই হন বলে স্বীকার করেছেন।এ ঘটনায় রাতেই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ থানায় মামলা হয়েছে। ওই দুজন মাদকব্যবসায়ী রবিবার (২৫ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে,।