হাওর ডেস্ক::
ম্যাচের গতিপথ বুঝে ওঠার আগেই গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। সেই ধাক্কা প্রথমার্ধে আর সামাল দিতে পারেনি সাইফুল বারীর শিষ্যরা। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে চেনা রূপে দেখা মেলে সুরভী-মরিয়মদের। গোল পরিশোধ করে ম্যাচ নিয়ে যায় টাইব্রেকারে।
সেখানেই বাজিমাত করে বাংলাদেশের কিশোরীরা। ফাইনালে ৩-২ ব্যবধানে ভারতকে হারিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী সাফের শিরোপা জয়ের আনন্দে মাতোয়ারা হয় কিশোরীরা। টাইব্রেকারে তিনটি শট আটকিয়ে জয়ের নায়ক গোলরক্ষক ইয়ারজান বেগম।
কাঠমান্ডুর আনফা কমপ্লেক্সে শুরুতেই বাংলাদেশের ওপর চাপ ফেলানোর চেষ্টা করে ভারত।
সুবাদে চতুর্থ মিনিটে এগিয়ে যায় ভারত। নিজেদের অর্ধ থেকে বোনিফিলিয়ার লম্বা ক্রস অফসাইড ফাঁদ ভেঙে বক্সে ঢুকে বাম পায়ের শটে দুরের পোস্টে লক্ষ্যভেদ করেন আনুশকা কুমারি। ঝাঁপিয়েও বলের নাগাল পায়নি বাংলাদেশের গোলরক্ষক ইয়ারজান।
পিছিয়ে পড়ে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করে বাংলাদেশ কিন্তু ভারতের রক্ষণদূর্গে সেভাবে হানা দিতে পারেনি।
আসরে পাঁচ গোল করা ফরোয়ার্ড সুরভী আকন্দ প্রীতিকে কড়া পাহারায় রাখে ভারতের ডিফেন্ডাররা। ফলে আক্রমণগুলো পূর্ণতা পাচ্ছিল না। মধ্যমাঠের দখলও ছিল ভারতের পায়েই। এই অর্ধের শেষ দিকে টানা দুইটি সেট পিস পায় বাংলাদেশ। কর্নার থেকে উড়ে আসা বল প্রথমবারের চেষ্টায় ফেরাতে পারেনি ভারতের গোলরক্ষক কিন্তু জটলার মধ্যে থেকে পরের অবশ্য বিপদ মুক্ত করেন।
দ্বিতীয়ার্ধে ঢিমেতালে চলা ম্যাচে হঠাৎ করেই প্রাণ ফেরায় বাংলাদেশ। ৭০ মিনিটে সমতায় ফেরা গোল পায় সাইফুল বারীর দল। অনন্যা বিথীর কর্নারে ছোট বক্সের ভেতর থেকে পা ছুঁইয়ে সমতা ফেরান মরিয়ম বিনতে। সমতায় ফেরার পর আরো গোছাল ফুটবল খেলেছে মেয়েরা। রক্ষণও জমাট ছিল বাংলাদেশের ফলে আর বিপদে পড়তে হয়নি। নির্ধারিত সময় ১-১ সমতায় থাকার পর ম্যাচের ভাগ্য গড়ায় টাইব্রেকারে। ম্যাচের এক মিনিট থাকতে গোলরক্ষক পরিবর্তন করে ভারত। বদলি নামা গোলরক্ষককে বেশ আত্মবিশ্বাসী লাগলেও বাজিমাত করেছে বাংলাদেশের ইয়ারজান বেগম।
যদিও টাইব্রেকারে শুরুর শটেই হতাশায় ডুবান সুরভী। দলের সেরা তারকার দুর্বল শট আটকে দেন বদলি নামা গোলরক্ষক। তবে প্রথম শটে ভুল করেনি ভারতের সবিতা রানী। নির্ধারিত সময়ের খেলায় সমতার স্বস্তি এনে দেওয়া মরিয়ম বিনতে টাইব্রেকারেও পান জালের দেখা। এরপর ভারতের আলেনা দেবির শট ফেরান ইয়ারজান বেগম। তৃতীয় শটে লক্ষ্যভেদ করেন থুইনুই মারমা কিন্তু ভারতের বোনিফিলিয়ার শট ইয়ারজান ফিরিয়ে দিয়ে এগিয়ে নেন বাংলাদেশকে। কিন্তু চতুর্থ শটে আলপি আক্তারের পোস্ট কাঁপিয়ে ফিরে আসে। এরপর অনিতার লক্ষ্যভেদে সমতায় ফিরে ভারত। পঞ্চম শটে লক্ষ্যভেদ করেন সাথী মুন্ডা। তাতে জয়ের পথ খুলে যায় বাংলাদেশের সামনে। সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিয়েছেন ইয়ারজান বেগম। দিবানি লিন্ডার পঞ্চম শট দারুণ দক্ষতায় আটকিয়ে শিরোপা উৎসবের আমেজ বইয়ে দেন পুরো দলের মধ্যে।