হাওর ডেস্ক::
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্রনীতির প্রধান জোসেপ বোরেল সোমবার বলেছেন, গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান এই অঞ্চলটিকে বিশ্বের বৃহত্তম ‘উন্মুক্ত কবরস্থানে’ পরিণত করেছে।
ব্রাসেলসে ইইউ মন্ত্রীদের এক বৈঠকে বোরেল বলেন, ‘যুদ্ধের আগে গাজা ছিল সর্বশ্রেষ্ঠ উন্মুক্ত কারাগার। আজ এটি সর্বশ্রেষ্ঠ উন্মুক্ত কবরস্থান। এটি হাজার হাজার মানুষের জন্য একটি কবরস্থান ও মানবিক আইনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নীতির জন্যও একটি কবরস্থান।
’
গাজায় ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশের অনুমতি না দিয়ে ইসরায়েল দুর্ভিক্ষকে ‘যুদ্ধের অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করছে বলেও বোরেল তাঁর অভিযোগ পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি একটি মানবিক সম্মেলনে বলেন, ‘ইসরায়েল দুর্ভিক্ষের উসকানি দিচ্ছে।’
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বোরেলকে পাল্টা আঘাত করে ‘ইসরায়েলকে আক্রমণ বন্ধ করতে এবং হামাসের অপরাধের বিরুদ্ধে আমাদের আত্মরক্ষার অধিকারকে স্বীকৃতি দিতে’ বলেছেন। কাটজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘সাহায্য করতে ইচ্ছুক যে কাউকে ইসরায়েল গাজায় স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ব্যাপক মানবিক সহায়তার অনুমতি দেয়।
’
ইসরায়েলি সরকারি পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে এএফপির সমীক্ষা অনুসারে, ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী গাজা যুদ্ধ শুরু হয়। সেই হামলায় ইসরায়েলে প্রায় এক হাজার ১৬০ জন নিহত হয়, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক। পাশাপাশি হামাসের যোদ্ধারা প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে। জিম্মিদের মধ্যে ১৩০ জন গাজায় রয়ে গেছে বলে ইসরায়েল বিশ্বাস করে।
তাদের মধ্যে ৩৩ জন নিহত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে ইসরায়েল হামাসকে ধ্বংস ও বন্দিদের মুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে গাজায় নিরলস বোমা হামলা ও স্থল আক্রমণ চালাচ্ছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, এতে কমপক্ষে ৩১ হাজার ৭২৬ জন নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
২৭ জাতির ইইউ গাজায় যুদ্ধের জন্য ঐক্যবদ্ধ প্রতিক্রিয়া নিয়ে আসতে সংগ্রাম করছে। কারণ কিছু সদস্য দৃঢ়ভাবে ইসরায়েলকে সমর্থন করে এবং অন্যরা ফিলিস্তিনপন্থী।
ইইউ মন্ত্রীদের ইসরায়েলের সঙ্গে একটি সহযোগিতা চুক্তি স্থগিত করার জন্য আয়ারল্যান্ড ও স্পেনের একটি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করার কথা ছিল। তবে এই পদক্ষেপটিতে ২৭টি দেশের সবার সমর্থন পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল না। যদিও ব্লকটি ৭ অক্টোবর সহিংসতার জন্য হামাসের বিরুদ্ধে এবং ফিলিস্তিনিদের আক্রমণের জন্য পশ্চিম তীরে সহিংস ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে উভয় নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে একমত হবে বলে আশা করা হয়েছিল। ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে অল্পসংখ্যক ‘চরমপন্থী’ বসতি স্থাপনকারীদের লক্ষ্য করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
সূত্র : এএফপি