স্টাফ রিপোর্টার::
৬ এপ্রিল শনিবার সকাল ৭টা ৫২ মিনিট ১৬ সেকেন্ড থেকে শুরু হয়ে দুপুর ১টা ৪৯ মিনিট ২৪ সেকেন্ডের মধ্যে ¯œানের লগ্ন ছিল। হবিগঞ্জের মাধবপুরের স্বপন পাল (৫২) সপরিবারে শুক্রবার রাতেই এসেছিলেন পূণ্য¯œানের জন্য রাজারগাওয়ে। সকাল সকাল লগ্নের শুরুতেই ¯œান করে রওয়ানা দেন ফেরার উদ্দেশ্যে। সকাল ১০টার দিকে রওয়ানা দিলেও রাত ১২টায় এসে সুনামগঞ্জে পৌছেছেন তিনি। বিন্নাকুলি থেকে পলাশ পর্যন্ত ভয়াবহ জ্যামে আটকা পরে চরম দুর্ভোগ সয়েছেন পরিবারের নারী ও শিশুদের নিয়ে।
তার মতো একই অভিজ্ঞতা ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার যুবক শান্ত দাসের। তিনিও দুপুর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত জ্যামে আটকা ছিলেন। সাড়ে ১২টার দিকে এসে পলাশ পৌছে হাফ ছেড়ে বাঁচেন। ব্রাম্মণবাড়িয়া সদরের বাসিন্দা হরিলাল দাস (৫৫) বিশ্বম্ভরপুরের মাছিমপুরে যানজট দেখা দিলে সামনে পিছনে দীর্ঘ সারি দেখে তিনি সিএনজি থেকে নেমে পড়েন। পরিবারের শিশু ও নারীরা তখন সিএনজিতে। তিনি জানালেন, দুপুর ২টার দিকে রওয়ানা হয়ে বিন্নাকুলি থেকে মাছিমপুর আসতে তার রাত সাড়ে ১১টা বেজে গেছে। তিনি জানালেন কোনও যৌক্তিক কারণ ছাড়াই যানবাহন আটকে দেওয়া হয়েছিল মাছিমপুরে। সামনে পিছনে যানজট লাগার কোন কারণ ছিলনা।
এভাবে শনিবার দুপুর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত হাজার হাজার পূণ্যার্থী চরম দুর্ভোগ সয়েছেন পূণ্য¯œান শেষে ফিরতি পথে। এসময় নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের অবস্থা নাজুক ছিল। পানি, খাবার সমস্যার মধ্যে বাথরুমের জন্য চরম দুর্ভোগ সয়েছেন নারীরা। পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবীদের উদাসীনতা, খামোখা কারণ ছাড়াই যানবাহন দাড় করিয়ে রাখা, মন্দির ও ওরস কমিটির সড়ক যানবাহন মুক্ত রাখার প্রচেষ্টার চেয়ে নিজেদের কালেকশনের দিকে জোর দেওয়ার কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল বলে মনে করেন ভুক্তভোগীরা। শনিবার রাত সাড়ে ১২টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিন্নাকুলি থেকে পলাশ পর্যন্ত যানজট ছিল।
আইন শৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে গত ২-৩ বছর করোনার কারণে পণাতীর্থে পূণ্যার্থীদের ঢল কম ছিল। এবার সারাদেশ এমনকি ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকেও পূণ্যার্থীরা এসেছেন। যার ফলে তাদের সঙ্গে প্রাইভেট গাড়ি ছির। তারা শ্রী অদ্বৈত আচার্য্যরে মন্দির রাজারগাও পর্যন্ত প্রাইভেট কার, লাইটেস ও লেগুনা নিয়ে যান। সেখানে পার্কিং এর কোন ব্যবস্থা না থাকায় তীব্র যানজট দেখা দেয়। যার ফলে পূণ্য¯œান শেষে ফেরার পথে শুরু থেকেই ভয়াবহ যানজটে পড়েন তারা। ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে পড়ে দুর্ভোগ সয়েছেন পূণ্যার্থীরা।
বিশ্বম্ভরপুর থানার ওসি শ্যামল বণিক বলেন, স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি পূণ্যার্থীর সমাগম ঘটেছে বারুণী ¯œানে। লাখো পূণ্যার্থীর অংশগ্রহণে মুখর ছিল এলাকা। তারা অনেকেই প্রাইভেট কার ও সিএনজি নিয়ে এসছিলেন। রাজারগাওয়ে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা না থাকায় রাস্তায় এগুলো এলোমেলো করে রাখেন। যার ফলে যাবার সময় চরম যানজটে পড়েন তারা। শনিবার মধ্যরাত পর্যন্ত এই অবস্থা ছিল। এই সময়ে যানজটে পড়ে পূণ্যার্থীদের দুর্ভোগ দেখা দিলেও তারা কোথাও অপ্রীতিকর কোনও ঘটনার মুখোমুখি হননি। পুলিশ খুব সর্তক ছিল। তবে ওয়ানওয়ে রাস্তা করেও যানজন এড়ানো যায়নি বলে জানান তিনি।