স্টাফ রিপোর্টার::
অব্যবস্থাপনা ও অনিয়ন্ত্রণ এবং সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতার কারণে পণাতীর্থে যাওয়া লাখো পূণ্যার্থীরা এবার অবর্ণণীয় দুর্ভোগ সয়েছেন। অদ্বৈত মন্দির এলাকা থেকে বিশ্বম্ভরপুরের পলাশ পর্যন্ত পথে ৮-১০ ঘন্টা আটকে ছিলো হাজার হাজার গাড়ি। এই সময়ে এলাকার উঠতি তরুণরা ছিনতাই ও চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে। হিন্দু ধর্মের অনেক নারীদের বালা, চেইন, ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়েছে। গাড়ি থেকে চাঁদাবাজিও করেছে তারা। মাছিমপুর, ধনপুর ও চিনাকান্দিতে বিনাযুক্তিতে গাড়ি আটকিয়ে যানজটকে আরো বিলম্বিত করা হয়েছে বলে ক্ষোভ জানিয়েছেন তারা। শনিবার রাত ৮ টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত লাউড়েরগড় থেকে পলাশ পর্যন্ত সরেজমনি ঘুরে এই চিত্র লক্ষ্য করা গেছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, মানবিক দুর্ভোগের সঙ্গে মানসিক নির্যাতনে হতাশ ও অসহায় ছিলেন তারা। লাউড়েরগড় থেকে পলাশ পর্যন্ত চিকন সড়কে একাধিক ছিনতাই ও চুরির ঘটনা ঘটেছে। মোবাইল ফোন, ব্যাগ, স্বর্নের চেইনসহ পণাতীর্থে যাওয়া পূণ্যার্থীদের মূল্যবান জিনিষ খোয়া গেছে। দলবেধে কিশোর ও তরুণদের কয়েকটি দল এই অপকর্ম করে দাপিয়ে বেড়িয়েছে। অনেক তরুণীকে শারিরিকভাবেও লাঞ্চিত করেছে।
ভ্রাম্মণবাড়িয়া সদরের মুক্তা পাল (৫৫) বলেন, আমরা লাউড়েরগড় বাজার থেকে গাড়ি করে আসার পর বিশ্বম্ভরপুরের ধনপুর এলাকায় আসার আগে জ্যামে আটকা পড়ি। এই সময় রাত ছিল। রাস্তায় কোন বৈদ্যুতিক বাতি ছিলনা। শিশু ও নারীদের বাথরুমের সমস্যা ও পানির সমস্যা হয়েছে। কোনও খাবার কিনেও খেতে পারেনি। এই অবস্থার মধ্যে কিছু উঠতি কিশোররা চুরি ও ছিনতাই করেছে। আমাদের পিছনের সিএনজিতে বসা এক নারীর চেইন ছিনিয়ে নিয়ে গেছে।
হবিগঞ্জের মাধবপুরের আশুতোষ বর্মণ বলেন, পথে পথে দুর্ভোগের সঙ্গে মানসিক নির্যাতিতও হয়েছি। পুলিশ অযৌক্তিভাবে গাড়ি বন্ধ করেছিল। এতে যানজট আরো প্রকট হয়েছে। এই সুযোগে চুরি, ছিনতাই হয়েছে। এমনকি রাতের অন্ধকারে অনেক নারীকে শ্লীলতাহানিরও চেষ্টা হয়েছে। তিনি বলেন, আমার সামনে ও পিছনে ৩টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। ছিনতাইকারীরা মোবাইল ও ব্যাগ নিয়ে গেছে।
বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অদ্বৈতধাম থেকে শহরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেওয়া সময় টিভির স্টাফ রিপোর্টার হিমাদ্রী শেখর ভদ্র বলেন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, মন্দির কমিটি ও স্বেচ্ছাসেবকদের কাজে ত্রুটি আছে। সমন্বয় না থাকায় যানজট প্রকট আকার ধারণ করে। চালকরাও বেপরোয়া ছিল। তাছাড়া সন্ধ্যার পর অনেকে গাড়িতেই চুরি ও ছিনতাই হয়েছে। এমনকি চাদাবাজিও হয়েছে। অনেক ঘটনার খবর পেয়েছি।
বিশ্বম্ভরপুর থানার ওসি শ্যামল বণিক বলেন, আমার উপজেলার সড়কগুলোতে কিছু হয়নি। শুনেছি তাহিরপুরের মোকসেদপুর এলাকায় কিছু সমস্যা হয়েছিল। পরে তাহিরপুর থানা পুলিশ এসে তাৎক্ষণিক সমাধান করেছে। চুরি ও ছিনতাইয়ের কোনও অভিযোগ পাইনি এবং ঘটনাও ঘটেনি।