হাওর ডেস্ক::
মঞ্চ ও টেলিভিশন জগতে তিনি ছিলেন পরিচিত মুখ। সবার প্রিয় রুমি ভাই। অভিনয় নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন। মাসখানেক আগে হঠাৎ করেই তাঁর শরীরে ক্যানসার ধরা পড়ে। এরপর ভারতে চিকিৎসা নিতে যান। সেখানে থেকে দেশে ফিরে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। তবে সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। অবশেষে মৃত্যুর কাছে হেরে গেছেন এই দাপুটে অভিনেতা।
টেলিভিশন নাটকের জনপ্রিয় মুখ অলিউল হক রুমি আজ সোমবার ভোরে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। অভিনেতা জিয়াউল অপূর্ব নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে রুমির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ফেসবুকে এ-সংক্রান্ত বার্তা দিয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন অভিনয়শিল্পী ও নির্মাতা।
অভিনয়ে তিন দশকের বেশি সময় পার করেছেন রুমি। দীর্ঘ এ পথচলায় অভিনয় করেছেন অসংখ্য নাটক ও সিনেমায়। অভিনয়নৈপুণ্য দিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করে গেছেন। পর্দায় তাঁর উপস্থিতি বাড়তি আনন্দ দিয়েছে দর্শকদের। ১৯৮৮ সালে রুমির অভিনয়ের শুরু থিয়েটার বেইলি রোডের ‘এখনো ক্রীতদাস’ নাটকের মধ্য দিয়ে। একই বছর ‘কোন কাননের ফুল’ নাটকের মাধ্যমে ছোট পর্দায় অভিষেক হয় তাঁর। টেলিভিশনের পাশাপাশি অভিনয় করেছেন সিনেমায়ও।
২০০৯ সালে ‘দরিয়াপাড়ের দৌলতি’ চলচ্চিত্রে প্রথম অভিনয় করেন রুমি। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে রয়েছে ‘সাজেশন সেলিম’, ‘বোকাসোকা তিনজন’, ‘মেকআপ ম্যান’, ‘ঢাকা টু বরিশাল’, ‘ঢাকা মেট্রো লাভ’, ‘বাপ–বেটা দৌড়ের উপর’, ‘আমেরিকান সাহেব’, ‘জার্নি বাই বাস’, ‘বাকির নাম ফাঁকি’, ‘যমজ-৫ ’, ‘যমজ-৬ ’, ‘যমজ-৭ ’, ‘যমজ-৮’, ‘যমজ-৯ ’, ‘যমজ-১০ ’, ‘রতনে রতন চিনে’, ‘২০০ কদবেলী ইত্যাদি’, ‘সোনার শিকল’, ‘কমেডি ৪২০ ’, ‘প্রেসিডেন্ট সিরাজউদ্দৌলা’, ‘আকাশ চুরি’, ‘চৈতা পাগল’, ‘জীবনের অলিগলি’, ‘মেঘে ঢাকা শহর’ ইত্যাদি।
এবারের ঈদে বেশ কটি নাটকেও দেখা গেছে এই অভিনেতাকে। গত কয়েক বছর এই অভিনেতা বরিশালের আঞ্চলিক ভাষাতে বেশি অভিনয় করে আসছিলেন। এ ভাষাতেই তিনি দর্শকদের হাসিয়েছেন, কাঁদিয়েছেনও। চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন। বর্তমানে তাঁর অভিনীত ‘বকুলপুর’ নামের একটি জনপ্রিয় ধারাবাহিক নাটক দীপ্ত টিভিতে প্রচার হচ্ছে।
বরগুনায় জন্ম রুমির। তাঁর বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল হক। মা হামিদা হক। তিন ভাই ও তিন বোনের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন রুমি। তিনি স্ত্রী ও দুই সন্তান রেখে গেছেন।