স্টাফ রিপোর্টার::
সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডের মধ্যবর্তী ফাঁকা জায়গা দীর্ঘদিন ময়লার ভাগার হিসেবে ব্যবহৃত হত। ক্লিনিক্যাল বর্জ্যসহ রোগি ও তাদের স্বজনরাও সেখানে ময়লার স্তুপ বানিয়েছিলেন। তাই হাসপাতালে ডুকতে নাক চেপে ধরতো হতো রোগি ও তাদের স্বজনদের। এখন দেখে উপায় নেই এখানে একদা ময়লার ভাগার ছিল। ময়লার ভাগারে এখন দিনভর ফুলের সৌরভ ছড়াচ্ছে। নানা ধরনের ফুলের গাছ হাল্কা বাতাসে দোলে মনেও দোলা দিচ্ছে।
জানা গেছে গত ফেব্রুয়ারি মাসে সুনামগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন হিসেবে যোগ দেন এই এলাকার সুসন্তান ডা. আশুতোষ দাশ। এরপর স্বাস্থ্যবিভাগের নানা উন্নয়ন ও পরিবর্তনের কর্মসূচি হাতে নেন তিনি। ভোরে ওঠে মাঝে-মধ্যে তিনি নিজেই হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঝাড়– দিয়েছেন এই রেকর্ডও আছে। যোগদানের পর তিনি একদিন ভোরে সদর হাসপাতালে এসে দেখেন উন্মুক্ত ওই স্থান থেকে উৎকট দুর্গন্ধ বেরুচ্ছে। নিচ ও উপর থেকে রোগিরা ময়লা ফেলছে। উন্মুক্ত ওই স্থানে পড়ে থাকতে দেখেন হাসপাতালের বিভিন্ন ক্লিনিক্যালি বর্জ্য। তাৎক্ষণিক নির্দেশনা দেন এখানে যাতে আর কোন ময়লা না ফেলা হয়। পরক্ষণেই তিনি সংশ্লিষ্টদের বাগান তৈরি করার পরিকল্পনার কথা জানান। পরবর্তীতে সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূরুল হুদা মুকুটের কাছে এ বিষয়ে সহযোগিতা চাইলে তিনিও বাগান করার জন্য সহায়তা প্রদান করেন। পরবর্তীতে ডা. আশুতোষ দাস ময়লার ওই ভাগারে নিজের তত্বাবধানে ফুলের বাগান তৈরি করে বেস্টনি দিয়ে দেন। জানা গেছে সিভিল সার্জন ডা. আশুতোষ দাশ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের প্রবেশের ডানের খোলা জায়গা ও নতুন হাসপাতালের বামের খোলা জায়গায় আরো তিনটি ফুলের বাগান তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছেন। শিঘ্রই আরো তিনটি ফুলের বাগান তৈরির কাজ শুরু হবে বলে জানা গেছে।
সরেজমিন গত ২৯ আগস্ট সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় শেষ বিকেলের আলো পড়ছে বাগানে। কোমল রোদের আলোয় হাসছে নানা প্রজাতির ফুলগাছগুলো। হাসপাতালের অবস্থানকারীদের যেন দোলে দোলে আশীষ জানাচ্ছে রঙিন সেই ফুলগাছ। এর মধ্যে বাগান সংলগ্ন গভীর লনকুপে রোগির স্বজনরা পানি নিতে এসে তম্ময় হয়ে বাগানের সৌন্দর্য্য দেখছিলেন। সদর উপজেলার ঢুপিকোণা গ্রামের রোগির স্বজন শ্রীকান্ত বিশ্বাস পানি নিতে এসে বারবার চেয়ে দেখছিলেন বাগান। বাগানে মোহাবিষ্ট শ্রীকান্ত বলেন, আসপাতালও আরো খতবার আইছি। কিন্তু অত ভালা লাগছেনা। আগে ইকানের গন্ধ আসপাতালের বেডে গিয়াও লাগতো। এখন গন্ধ নাই। দেখতেও সুন্দর।
সিভিল সার্জন ডা. আশুতোষ দাশ বলেন, ময়লার ভাগার বাগানে রূপ দিতে পেরে আনন্দ লাগছে। শিঘ্রই আরো তিনটি বাগান করব হাসপাতালের ভিতরের খোলা জায়গায়। রোগি ও তাদের স্বজনরা হাসপাতালে আসতে যেতে ফুলের গন্ধ অনুভব করবেন। শুধু এই হাসপাতাল নয় জেলার সকল হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতা রক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।