হাওর ডেস্ক::
হিমালয় পর্বতশৃঙ্গ থেকে ১১ টন বর্জ্য, চারটি মৃতদেহ এবং একটি কঙ্কাল সরানোর কথা জানিয়েছে নেপালের সেনাবাহিনী।
এভারেস্ট, নুপুৎসে ও লোৎসে পর্বত থেকে এসব সরাতে সেনাদের সময় লেগেছে ৫৫ দিন।
বিবিসি লিখেছে, কেবল এভারেস্টেই ৫০ টন বর্জ্য এবং দুই শতাধিক মৃতদেহ পড়ে আছে বলে ধারণা করা হয়।
বিশ্বের সবচেয়ে উঁচুর বর্জ্য ভাগাড় হিসাবে পরিচিত এই পর্বতে ২০১৯ সালে পর্বতারোহীদের উপচেপড়া ভিড়ের মধ্যে বিপজ্জনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে পর্বতটিতে বার্ষিক পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা শুরু করে সেনাবাহিনী।
এখন পর্যন্ত পাঁচটি পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ১১৯ টন আবর্জনা, ১৪টি মৃতদেহ এবং কিছু কঙ্কাল সরিয়েছে সেনাবাহিনী।
এই বছর সেখানকার কর্তৃপক্ষ বর্জ্য কমানোর লক্ষ্য নিয়েছে; তার অংশ হিসেবে পর্বতারোহীদের মল নিজেদেরই ফিরিয়ে আনতে হবে। আর জরুরি পরিস্থিতিতে সহজেই যাতে পর্বতারোহীদের উদ্ধার করা যায়, সেজন্য পর্বতারোহীদের ট্র্যাকিং ডিভাইস পরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নেপালের পর্যটন অধিদপ্তরের পর্বতারোহণ বিভাগের পরিচালক রাকেশ গুরুং বিবিসিকে বলেন, ভবিষ্যতে সরকার বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় একটি মাউন্টেইন রেঞ্জার দল গঠন করতে চায় এবং বর্জ্য সংগ্রহের জন্য আরও অর্থ বরাদ্দের ভাবনা আছে।
নেপালের সেনাবাহিনীর বার্ষিক পরিচ্ছন্নতা অভিযান।
মে মাসে শেষ হওয়া বসন্তকালীন মৌসুমে সরকার এবার ৪২১ জনকে পর্বতারোহণের অনুমতি দেয়, যেখানে গতবছর এ মৌসুমে রেকর্ড ৪৭৮ জন অনুমতি পেয়েছিলেন। অবশ্য এই পরিসংখ্যানের মধ্যে নেপালি গাইডদের হিসাব ধরা হয়নি। তাদের ধরলে এ বছর প্রায় ছয়শ মানুষ পর্বতারোহণ করেন।
এ বছর মোট আটজন পর্বতারোহী মারা গেছে বা নিখোঁজ হয়েছে, যেখানে গত বছর এই সংখ্যা ছিল ১৯।
তাদের মধ্যে ব্রিটিশ নাগরিক ড্যানিয়েল প্যাটারসন ও তার নেপালি গাইড পাস্তেঞ্জি শেরপা আছেন, যারা তুষারপাতের মধ্যে গত ২১ মে থেকে নিখোঁজ রয়েছেন।
তাদের সন্ধানের জন্য প্যাটারসনের পরিবার তহবিল সংগ্রহ শুরু করেছিল; তবে ৪ জুন তাদের তরফে বলা হয়, অবস্থান ও ঝুঁকিগত কারণে এই মুহূর্তে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা সম্ভব নয়।
নেপাল সরকারের পর্বতারোহণ বিভাগের কর্মকর্তা রাকেশ গুরুং বলেন, এবার চীনও পর্বতারোহীদের অনুমতি দিয়েছে। তাছাড়া বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং ভারতের জাতীয় নির্বাচনের কারণে এবছর পারমিট সংখ্যা কম ছিল।
পর্বতারোহণের অনুমতি সীমিত করতে নেপালের সুপ্রিম কোর্ট গত মে মাসে দেশটির সরকারকে নির্দেশ দেওয়ায় পারমিট সংখ্যা আরও কমতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও প্রাথমিক আদেশে সর্বোচ্চ সংখ্যা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়নি।
এই আদেশকে স্বাগত জানিয়ে রাকেশ গুরুং বলেছেন, পর্বতআরোহণে যাতে জট তৈরি না হয়, সেজন্য সেখানকার নীতি পরিবর্তনের কথা ভাবছে সরকার।
কতজনকে অনুমতি দেওয়া নিরাপদ হবে তা ঠিক করতে সরকার বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেবে জানিয়ে তিনি বলেন, “বৈজ্ঞানিক গবেষণা ছাড়া মাউন্ট এভারেস্ট আরোহণের জন্য কতজনকে অনুমতি দেওয়া যুতসই হবে তা বলা ঠিক হবে না।”