স্টাফ রিপোর্টার::
আগামীকাল ৩ সেপ্টেম্বর রবিবার বাদ জোহর দেশখ্যাত বিশিষ্ট প্রবীণ সাংবাদিক ও একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা সালেহ চৌধুরীর নামাজে যানাজা অনুষ্ঠিত হবে। তার জন্মভিটা সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার গচিয়া বাজারে মরহুমের যানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। যানাজায় ধর্মপ্রাণ সকল মুসল্লিদের অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন তার স্বজনরা। তাছাড়া সকল মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য তার মরদেহ বাজারে রাখা হবে। এর আগে ঢাকায় দুই দফা তার নামাজে যানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় প্রেসক্লাবে জানাযার আগে তার মরদেহে শ্রদ্ধা জানান সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।
গত শুত্রবার সকালে সালেহ চৌধুরী ৮১ বছর বয়সে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান। তার মৃত্যুতে বর্ণাঢ্য সাংবাদিক ও একাত্তরের যোদ্ধার জীবনাবসান হয়েছে। পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী সালেহ চৌধুরী ভাষা আন্দোলনেও ছাত্র হিসেবে সম্পৃক্ত ছিলেন। ছাত্র জীবন থেকেই তিনি সাংবাদিকতায় যুক্ত ছিলেন। দৈনিক পাকিস্তানের সাব এডিটর হিসেবে কাজ করার পর মুক্তিযুদ্ধের পর দৈনিক বাংলার ফিচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের প্রভাবশালী সদস্য ছিলেন তিনি। কমনওয়েলত জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি ছিলেন। নিয়মিত জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকে লেখালেখি করেছেন। সাহিত্যেও তার অগাধ পা-িত্য ছিল। অনুবাদসহ নানা ক্ষেত্রে কাজ করেছেন। তার একাধিক গ্রন্থও রয়েছে। কবি প্রজেশ রায়কে নিয়েও তিনি একটি গ্রন্থ লিখেছেন। মুক্তিযুদ্ধের উপর তার মৌলিক একাধিক গ্রন্থ রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য্য ‘অপরাজেয় বাংলা’ ভাস্কর্য্য নাম তার দেওয়া। তিনি সুনামগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ডিজাইনার ও স্লোগান দাতা। একাত্তরে হবিগঞ্জ, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ নিয়ে গঠিত হাওরাঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধের আঞ্চলিক সমন্বয়ক ছিলেন তিনি। সালেহ চৌধুরী সেক্টরস কমা-ার ফোরামের উপদেষ্টাও ছিলেন। দাবা ও আকাআকিতেও পারঙ্গম ছিলেন। বহুমখি প্রতীভাধর এই মানুষটিকে হারানোয় বিভিন্ন মহলে শোকগ্রস্ত।
টেকেরঘাট সাব সেক্টর প্রতিষ্ঠায় তাঁর বিশেষ ভূমিকা ছিল। এই সাব সেক্টর থেকে পরিচালিত দাসপার্টিকে তিনি যুদ্ধ পরিচালনার নির্দেশনা দিতেন।