হাওর ডেস্ক::
সিলেটে এক বন্যার ধাক্কা সামলে উঠার আগেই ফের তলিয়ে যেতে শুরু করেছে নিম্নাঞ্চল। গতকাল শনিবার (১৫ জুন) থেকে সিলেটের কয়েকটি উপজেরলায় ফের বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। আবারও বাড়তে শুরু করেছে সিলেটের নদ-নদীর পানি।
সিলেটে টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে ঢলের কারণে সিলেটে আবারও বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, গতকাল থেকে আজ (রবিবার) পর্যন্ত সিলেটের অন্তত ৪টি উপজেলার নিম্নাঞ্চল নতুন করে তলিয়ে গেছে। উপজেলাগুলো হচ্ছে- কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনগাট, কানাইঘাট ও ওসমানীনগর।
গোয়াইনঘাট উপজেলা সদর, রুস্তুমপুর, লেংগুড়া, ডৌবাড়ি, নন্দীরগাঁও, পূর্ব ও পশ্চিম আলীরগাও, পশ্চিম জাফলং, মধ্য জাফলং ইউনিয়নের হাওর ও নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে। উপজেলার সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়কটি ইতোমধ্যে পানিতে তলিয়ে গেছে। যার কারণে ওই সড়ক দিয়ে যান চলাচল অনেকটা বন্ধ রয়েছে। গোয়াইনঘাট-রাধানগর-জাফলং সড়কের শিমুলতলায় সড়কের উপর দিয়েও পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
আর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ছনবাড়ি, চিকাডহর, শাহ-আরেফিন বাজার ও জালিয়ারপাড় গ্রাম ইতোমধ্যে বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে পানিতে। যার কারণে মানুষজন বাড়িঘর থেকে বের হতে পারছেন না। এখানকার ছনবাড়ি-ভোলাগঞ্জ রাস্তাটি পানিতে তলিয়ে যাওয়ার কারণে রাস্তা দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এছাড়া উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলোতে আগে থেকেই ছিল কিছু বন্যার পানি।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব হোসাইন জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় গত ২৪ ঘন্টায় (শনিবার সকাল ৬টা থেকে রবিবার সকাল ৬টা)
সিলেটে বৃষ্টিপাতের পরিমান ৬৬.৫ মিলিমিটার। আর সকাল ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত ছিলো ২৮ মি.মি.।
এর আগের ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৬ টা পর্যন্ত)
সিলেটে ৬২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর শনিবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৫৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। শনিবার রাতেও সিলেটে বৃষ্টি হয়েছে। রবিবার সকাল থেকে ফের থেমে থেমে বৃষ্টি ঝরছে।
সিলেটে সোমাবার ঈদের দিনও অতিবৃষ্টি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত এবং বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, সিলেটে দুটি নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় কানাইঘাটে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৪০ সেন্টিমিটার এবং ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার ৫৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
সিলেটে সুরমা এবং আমলসীদ ও শেওলায় কুশিয়ারা বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও দুটি নদীতেই পানি বাড়তির দিকে।
পাউবো
সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ জানান, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে অতি বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে সিলেটের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন যদি সেখানে এভাবে বৃষ্টিপাত অবিরাম চলতেই থাকে, তাহলে সিলেটের অবস্থা খুবই ভয়াবহ হবে। চেরাপুঞ্জিতে যদি প্রতিদিন ২০০ মিলিমিটারের অধিক বৃষ্টিপাত হয় তা হলে
সিলেটে বড় বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৭ মে থেকে সিলেটে আগাম বন্যা দেখা দেয়। দুই সপ্তাহ ব্যাপী চলমান এ বন্যায় আক্রান্ত হন ১২টি উপজেলার সাড়ে ৭ লাখ মানুষ। সেই বন্যার পানি পুরোপুরি নেমে যাওয়ার আগেই সিলেটে আবার দেখা দিলো বন্যা।