হাওর ডেস্ক::
মঙ্গলের পৃষ্ঠে ‘পপকর্নের মতো’ দেখতে অদ্ভুত ধরনের পাথর খুঁজে পেয়েছে নাসার পার্সিভ্যারেন্স রোভার।
এজন্য মঙ্গলে বেশ কয়েক মাস অভিযান চালিয়ে ‘ব্রাইট এঞ্জেল’ নামের এক অঞ্চলে পৌঁছাতে হয়েছে রোভারটিকে, যেখানে এ অদ্ভুত গঠনের পাথরের খোঁজ মিলেছে, যা এর আগে কখনও দেখা যায়নি।
এমন মাইলফলক অর্জনে মিশনের দলটি খুবই উচ্ছসিত। পাশাপাশি, এইসব পাথর কোথা থেকে এসেছে ও তা সে অঞ্চলের ভূতত্ত্বের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না, সে বিষয়ে ধারণা পেতে তারা রোভারটিকে ওই অঞ্চলের কাছাকাছি থাকা ঢালু অঞ্চলে পাঠানোর পরিকল্পনাও করছে।
এর আগে ‘মাউন্ট ওয়াশবার্ন’ নামের একটি জায়গা খুঁজে পেয়েছিল রোভারটি, যেখানে বেশ কয়েক ধরনের পাথর নিয়ে গবেষণা করেছে যানটি।
সেখান থেকে রোভারটি উত্তরের দিকে যেতে থাকে ও কয়েকটি স্তরযুক্ত হালকা রঙের পাথরের সামনে গিয়ে থেমে যায়।
মিশনের দলটি সেইসব পাথর আরও গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে চেয়েছিল। তাই পশ্চিমের দিকে এর চেয়েও বড় পাথরের চূড়ায় যাওয়ার আগে সেইসব পাথরের কিছু ছবি তুলেছিল পার্সিভ্যারেন্স। আর সে অঞ্চলে গিয়ে এ ধরনের পাথর নিয়ে আরও বিস্তারিত গবেষণা করবে রোভারটি।
পার্সিভ্যারেন্স ওই বড় পাথুরে অঞ্চলে গিয়ে পৌঁছেছিল ১১৭৫ ‘সল’-এ। মঙ্গলের এক দিনকে এক সল হিসাবে বর্ণনা করা হয়। আর গবেষণা দলটি এ অঞ্চলে যা দেখেছে, তা দেখে তারা উচ্ছসিত। এইসব হালকা রঙের পাথরগুলোর গঠন বেশ অদ্ভুত। আর এগুলো তীক্ষ্ণ শৈলশিরায় পরিপূর্ণ।
এইসব শৈলশিরার মিল রয়েছে অঞ্চলটির কাছাকাছি একটি ফ্যান আকৃতির বস্তুতে খুঁজে পাওয়া খনিজ শিরার সঙ্গে। তবে, সে অঞ্চলে এর প্রাচুর্য অনেক বেশি। এর পাশাপাশি, কয়েকটি পাথরের মধ্যে ছোট ছোট বৃত্তাকার গোলকও দেখা গেছে, যার ফলে এগুলো দেখতে ‘পপকর্নের মতো’।
বিজ্ঞানীদের ধারণা সেগুলো দিয়ে এক সময় পানি প্রবাহিত হয়েছে, যার ফলে পাথরের এইসব নকশা তৈরি হয়েছে।
পরবর্তীতে, সেই পাথরের চূড়ায় ধীরে ধীরে আরোহণ করবে পারসিভারেন্স, যা পথেই পাথর পরিমাপ করতে করতে যাবে। এতে করে এইসব পাথর ও এদের ইতিহাস সম্পর্কে আরও ভালোভাবে বোঝার সুযোগ পাবে মিশনের দলটি।
সপ্তাহ শেষে এ পাথরকে আরও কাছ থেকে দেখতে ও এর রাসায়নিক উপাদান সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পেতে রোভারের হাতের বাহুতে থাকা এ টুলটিকে ব্যবহার করা হবে। এরপর গবেষণা দলটি সিদ্ধান্ত নেবে, এইসব পাথর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হবে কি না।
মঙ্গলের ‘ব্রাইট এঞ্জেল’-এ অভিযান শেষ হলে পার্সিভ্যারেন্সে আবার লাল গ্রহটির দক্ষিণ দিকের ‘নেরেতভা ভ্যালিস’ নামের অঞ্চল পাড়ি দেওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেবে। আর এর পরবর্তী গন্তব্য হবে ‘সার্পেন্টাইন র্যাপিডস’ নামের একটি জায়গা।