1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫১ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

দ্বিতীয় শতাব্দীর পদার্পণের জন্য কী প্রস্তুতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের?

  • আপডেট টাইম :: সোমবার, ১ জুলাই, ২০২৪, ১২.১৯ পিএম
  • ৩০ বার পড়া হয়েছে

হাওর ডেস্ক::

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ পেরিয়ে দ্বিতীয় শতাব্দীকে সামনে রেখে একটি অ্যাকাডেমিক উন্নয়ন পরিকল্পনা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, যেখানে ২০৪৫ সালের মধ্যে এ শিক্ষায়তনকে গবেষণামুখ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্নেগি শ্রেণিবিভাগ অনুযায়ী ২০৩৫ সালের মধ্যে আর-২ (উচ্চ গবেষণা কার্যকলাপ) এবং ২০৪৫ সাল নাগাদ আর-১ ((খুব উচ্চ গবেষণা কার্যকলাপ) বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছানো লক্ষ্য ধরা হয়েছে পরিকল্পনায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার ১০৪তম বছরে পদার্পণ করছে সোমবার। এ উপলক্ষে রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল।

তিনি বলেন, “দেশে এখন নতুন নতুন অনেক বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এখন শুধু পাঠদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে, সেটি ভাবার কোনো কারণ নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এখন গবেষণা প্রধান বা মুখ্য হবে, এটাই ভাবা উচিত।”

 

লক্ষ্য অর্জনের প্রাথমিক ধাপ হিসেবে চলতি বছর থেকেই পিএইচডি শিক্ষার্থীদের জন্য ‘বঙ্গবন্ধু ডক্টরাল ফেলোশিপ প্রোগ্রাম’ চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এ নিয়ে একটি নীতিমালাও প্রণয়ন করা হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল।

উপাচার্য মাকসুদ বলেন, “আমাদের নিজেদের তহবিল থেকেও কিছু অর্থ দিয়ে প্রোগ্রামটা শুরু করব। আমাদের নিজস্ব পিএইচডি প্রোগ্রাম থাকবে, উন্নত দেশগুলোতে যেমন পিএইচডি প্রোগ্রাম আছে।

“বঙ্গবন্ধু ডক্টরাল ফেলোশিপ প্রোগ্রামে আমাদের দেশের বাস্তবতা বিবেচনায় প্রত্যেককে ৪৫ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা নীতিমালায় বলা হয়েছে। এছাড়া যন্ত্রপাতি দেওয়া, বিদেশি সুপারভাইজার ও বিদেশি আর্টিকেল উপস্থাপনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।”

পিএইচডি ডিগ্রি পাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদেরকে ‘ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর’ জার্নালে (কিউ-১/ কিউ-২) দুটি প্রকাশনা থাকতে হবে।

২০২১ সালে প্রতিষ্ঠার একশ বছর পূর্তি উপলক্ষে ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য ৯ হাজার কোটি টাকা বাজেটে ১৫ বছরের একটি মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

উপাচার্য বলেন, “আমরা যে ফিজিক্যাল মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করেছি, সেটা যদি বাস্তবায়ন করা যায় তাহলে এই বিশ্ববিদ্যালয় অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে।”

শিল্প-বিশ্ববিদ্যালয় সহযোগিতার উদ্যোগ

গবেষণা ও উদ্ভাবনে বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিতে শিল্পখাত ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরির উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে। এজন্য একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে।

উপাচার্য বলেন, “উচ্চ শিক্ষায় ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। উচ্চ শিক্ষায় এখন গবেষণা ও উদ্ভাবন, ইন্ডাস্ট্রি- অ্যাকাডেমিয়া সহযোগিতা ও আন্তর্জাতিক কোলাবরেশন প্রাধান্য দেওয়া হয়।

“ইন্ডাস্ট্রি- ইউনিভার্সিটি কোলাবরেশনের মুখ্য বিষয় হলো ইনোভেশন। এ বছর প্রথমবারের মত আমরা উদ্ভাবন মেলা করেছি। সেখানে ৬১টির মতো ছিল প্রোডাক্ট ইনোভেশন, আর ৪০টির মত ছিল আমাদের সার্ভিস ইনোভেশন। আমরা চাচ্ছি যাদের কাজ ভালো হয়েছে, যেখান থেকে প্যাটেন্ট বের করা যাবে, সেগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে এই প্রজেক্টগুলোতে ফান্ড দেওয়ার চেষ্টা করব। এগুলোকে কেন্দ্র করে ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে কোলাবরেশন করব।”

সমাবর্তনে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা।

বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বাড়ানোর কথা তুলে ধরে উপাচার্য বলেন, “তাদের সঙ্গে যদি আমরা কোলাবরেশন করতে যাই, তাহলে তারা প্রথমে দেখতে চাইবে, আমাদের গবেষণায় ইথিক্যাল মানদণ্ড কেমন। ইথিক্যাল মানদণ্ডের জন্য আমাদের কোনো নীতিমালা ছিল না। সম্প্রতি আমরা সেই নীতিমালাটাও খসড়া করেছি।

“আমাদের এখানে মেধাস্বত্ব নীতিমালা ছিল না, সেটাও আমরা প্রস্তুত করতে যাচ্ছি। এগুলোর সবকিছু মিলিয়ে বলা হয় রিসার্চ এনভায়রনমেন্ট।”

উদ্ভাবনের আগ্রহী হলেও বাজেট কম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবার গবেষণা ও উদ্ভাবন খাতে ২০ কোটি ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। কিন্তু উদ্ভাবন খাতে রাখা হয়েছে মাত্র ৫ লাখ টাকা।

উদ্ভাবনের জন্য এই বাজেট কতটুকু যৌক্তিক জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, “আমাদের এখানে গবেষণা ছিল, কিন্তু ইনোভেশন ছিল না। আমাদের এখানে উদ্ভাবনের যে কনসেপ্ট, সেটাই অনুপস্থিত। সেটা হল আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।

“বর্তমান পৃথিবীর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যে ধরন, উদ্ভাবন না থাকলে সেগুলোর সঙ্গে মানের দিক থেকে আমাদের যোজন যোজন দূরত্ব তৈরি হয়ে যাবে। যে পাঁচ লাখ টাকা রাখা হয়েছে, সেটিকে আমরা রিভাইজ করার চেষ্টা করব। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে এই বাজেট বাড়ানোর জন্য আমরা অনুরোধ করব।”

গবেষণায় যে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে, এর সদ্ব্যবহার করতে পারলে ভালো গবেষণা সম্ভব বলেও মত দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।

গবেষণায় বরাদ্দ অপ্রতুল হলেও বিভিন্ন উৎস থেকে সেটার আরও সর্বোচ্চ ব্যবহার করা হবে বলে জানান অধ্যাপক মাকসুদ কামাল। তিনি বলেন, “প্রতি শিক্ষককে আমরা গবেষণার জন্য সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকা করে দেব, যাতে করে একজন শিক্ষক গবেষণা করে একটি মানসম্মত আর্টিকেল প্রকাশ করতে পারে। আর্টিকেল যদি মানসম্মত হয়, তখন আমরা ইনোভেশনে যেতে পারব।

“আমরা যে উদ্ভাবন করেছি, সেখান থেকে চারটির মত প্যাটেন্ট পাব আমরা। আরও নতুন নতুন প্যাটেন্ট উদ্ভাবনের জন্য আমরা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রণোদনাও দেব।”

পূর্বাচলে হবে গবেষণা ও উদ্ভাবন ক্যাম্পাস

২০১৭ সালে ঢাকার পূর্বাচলে একটি প্রাতিষ্ঠানিক প্লট পাওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রাজউক বরাবর আবেদন করে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে রাজউক পূর্বাচলে প্রায় ৫২ একর জমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রাথমিক বরাদ্দ দেয়। ওই জমি প্রতীকী মূল্যে বা ‘বুক টু বুক’ ট্রান্সফারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২০২২ সালে উদ্যোগ গ্রহণ করে, যা হস্তান্তরের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

 

কার্জন হল

উপাচার্য বলেন, “পূর্বাচলে রিসার্চ ও ইনোভেশন ক্যাম্পাস গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। ইন্ডাস্ট্রি-ইউনিভার্সিটি সম্পর্ক জোরদার ও প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের লক্ষ্যে সেখানে গড়ে তোলা হবে স্টার্ট-আপ স্টুডিও।”

বেইজিং, টোকিও, সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিসহ পৃথিবীর প্রায় সকল বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুকরণে সেই জমিতে মেডিকেল ফ্যাকাল্টি কাম হসপিটাল গড়ে তোলার পরিকল্পনাও আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের।

মাকসুদ কামাল বলেন, “মেডিকেল ফ্যাকাল্টি গড়ে তোলা সম্ভব হলে সমন্বিত প্রচেষ্টায় তা বাংলাদেশের চিকিৎসাবিজ্ঞানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হবে।”

কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে দুটি ইনস্টিটিউটে আইসিটি প্রশিক্ষণ

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি দক্ষতায় উন্নত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে দুটি ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

কলা অনুষদে হবে ইনস্টিটিউট অব ডিজিটাল হিউম্যানিটিজ, সেখানে আর্টস ফ্যাকাল্টির যারা গবেষণা করবে, তাদেরকে আইসিটিতে দক্ষ করে তোলা হবে যেন মাঠ পর্যায় থেকে তথ্য-উপাত্ত নিয়ে এসে সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করা যায়।

অন্যদিকে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ হবে ইনস্টিটিউট অব কম্পিউটেশন অ্যান্ড সোস্যাল সায়েন্স।

“এ দুটি ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে আমরা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করব”, বলেন উপাচার্য মাকসুদ কামাল।

 

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!