বিশেষ প্রতিনিধি::
মেঘমধুর দিনে বিশ^কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রিয় বর্ষার গান গেয়ে সুনামগঞ্জ মাতিয়ে গেলেন বিশ^ভারতী বিশ^বিদ্যালয়ের সঙ্গীতের মেধাবী ছাত্রী সুনামগঞ্জের মেয়ে জয়ীতা তিথি। গানের সঙ্গে আবৃতির ঢঙে পশ্চিমবঙ্গের রবীন্দ্র গবেষক পীতম সেনগুপ্তের উপস্থাপনা ছিল বর্ষার উছলানো রূপ। ‘বহুযুগের ওপার হতে আষাঢ় এলো’ শিরোনামে প্রকাশনা সংস্থা চৈতন্য সুনামগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমিতে শুক্রবার সন্ধ্যারাতে আয়োজন করে রবীন্দ্রনাথের প্রিয় ঋতু বর্ষার গান নিয়ে এমন ব্যতিক্রর্মী আয়োজনের। সুনামগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমির হাসনরাজা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত অনন্য এই সঙ্গীত আসরে রবীন্দ্র অনুরাগীরা উপস্থিত ছিলেন। বর্ষায় রবীন্দ্রনাথের বর্ষার গান গুলো মোহাছান্ন হয়ে শুনেন তারা।
সুনামগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার আহমেদ মঞ্জুরুল হক চৌধুরী পাভেলের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন চৈতন্য প্রকাশনের স্বত্তাধিকারী রাজীব চৌধুরী। পরে পশ্চিমবঙ্গের রবীন্দ্র গবেষক পীতম সেনগুপ্ত মাইক্রোফোন নিয়ে আবৃত্তির ঢঙে রবীন্দ্রনাথের বর্ষার বন্দনায় মাতেন। রবি ঠাকুরের বর্ষার গানের ভিতর-বাহিরের সুলুক সন্ধান করে করে তিনি গানে গানে এগিয়ে দেন শিল্পী জয়ীতা তিথিকে। জয়ীতার পরিশীলিত মধুর কণ্ঠে শুরু করেন, ‘বহুযুগের ওপার হতে আষাঢ় এলো’ দিয়ে। রবীন্দ্র অনুরাগীরা গানটি উপভোগ করেন শব্দহীন নীরবতায়। সুনামগঞ্জের আসমানে যখন মেঘ ডমরু বাজাচ্ছে তখন জয়ীতা গান শেষ করেন ‘মেঘের পরে মেঘ জমেছে’ দিয়ে। শেষ গানের পর বোদ্ধা শ্রোতারা শিল্পী ও উপস্থাপককে হাততালি দিয়ে অভিনন্দন জানান।
মাঝখানে আরো ৫টি গান করেন শিল্পী জয়ীতা তিথি। প্রতিটি গানেরই মর্মকথা ও রচনার প্রসঙ্গকথা তুলে ধনের গবেষক পীতম সেনগুপ্ত। বরষার গানের সঙ্গে গবেষকের পরিবেশনা এক অন্যরকম দ্যোতনা দেয় শ্রোতাদের মনে।
জয়ীতা তিথি একে একে পরিবেশন করেন ‘কে তুমি মম অঙ্গনে দাড়ালে একাকী-তিমিরও অবগুণ্ঠনে’, ‘ওই মালতি লতা দোলে, পিয়ালও তরুর কোলে’, ‘আজি ঝরো ঝরো মুখরও বাদল দিনে’, ‘ছায়া ঘনায়েছে বনে বনে’। অুনষ্ঠান শেষে রবীন্দ্র অনুরাগীরা রবীন্দ্রনাথের বরষার গানের এই ব্যাতিক্রমী পরিবেশনার প্রশংসা করেন। তারা আয়োজক চৈতন্য প্রকাশন ও সুনামগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমিকেও এমন নান্দনিক আয়োজনের আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠান শুরুর আগে পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট রবীন্দ্র গবেষক পীতম সেনগুপ্ত ও শিল্পী জয়ীতা তিথিকে চৈতন্যের পক্ষ থেকে উত্তরীয় পড়িয়ে দেন সুধীজন। শেষে সুনামগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমির প্রকাশনা স্মারকও তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।