হাওর ডেস্ক::
অভিষেক ম্যাচের ব্যর্থতা ঝেড়ে ফেলে বিস্ফোরক এক সেঞ্চুরি উপহার দিলেন আভিশেক শার্মা। সঙ্গে রুতুরাজ গায়কোয়াড় ও রিংকু সিংয়ের চমৎকার দুটি ইনিংসে বড় সংগ্রহ গড়ল ভারত। পরে বল হাতে আলো ছড়ালেন মুকেশ কুমার, আভেশ খান। জিম্বাবুয়েকে উড়িয়ে সিরিজে সমতা ফেরাল সফরকারীরা।
হারারেতে রোববার সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ১০০ রানে জিতেছে ভারত। ২৩৪ রানের পুঁজি গড়ে প্রতিপক্ষকে তারা থামিয়ে দিয়েছে ১৩৪ রানে।
প্রথম ম্যাচে ব্যাটিং ব্যর্থতায় জিম্বাবুয়ের ১১৫ রান তাড়া করে জিততে পারেনি টি-টোয়েন্টির বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। হেরে যায় ১৩ রানে।
আইপিএলে ঝড় তুলে জাতীয় দলে ডাক পাওয়া আভিশেক নিজের অভিষেক ম্যাচে খুলতে পারেননি রানের খাতা। ওই হতাশা ভুলে দ্বিতীয় ম্যাচেই ঘুরে দাঁড়ান তিনি। খুনে ব্যাটিংয়ে খেলেন ৪৭ বলে ১০০ রানের ইনিংস। ৮ ছক্কার সঙ্গে মারেন ৭টি চার।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে আভিশেকের চেয়ে কম ইনিংসে সেঞ্চুরি করতে পারেননি ভারতের আর কেউ।
রুতুরাজ এক ছক্কা ও ১১ চারে ৪৭ বলে ৭৭ রান করে থাকেন অপরাজিত। ৫ ছক্কা ও ২ চারে ২২ বলে ৪৮ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন রিংকু।
বল হাতে তিনটি করে উইকেট নেন মুকেশ ও আভেশ। দুটি প্রাপ্তি রাভি বিষ্ণইয়ের। এক শিকার ধরেন ওয়াশিংটন সুন্দর।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই অধিনায়ক শুবমান গিলকে হারায় ভারত। সেই ধাক্কা সামাল দিয়ে দলকে কক্ষপথে রাখেন আভিশেক ও রুতুরাজ। শুরুতে দেখেশুনে খেলেন দুইজন। পাওয়ার প্লেতে স্রেফ ৩৬ রান তোলে সফরকারীরা।
এরপর তাণ্ডব চালান আভিশেক। ৩৩ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন বাঁহাতি এই ওপেনার। জিম্বাবুয়ের বোলারদের ওপর তুলাধুনা করে পঞ্চাশ থেকে শতক স্পর্শ করেন স্রেফ ১৩ বলে। এই সময়ে ডিওন মায়ার্সের টানা পাঁচ বলে মারেন দুই ছক্কা ও তিনটি চার। ওভারটি থেকে আসে ২৮ রান।
সিকান্দার রাজাকে ছক্কা ও চার হাঁকানোর পর ওয়েলিংটন মাসাকাদজার ওপর ঝড় বইয়ে দেন তিনি। মাসাকাদজাকে টানা তিন ছক্কায় সেঞ্চুরি স্পর্শ করার পরের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে বিদায় নেন আভিশেক। ভাঙে রুতুরাজের সঙ্গে তার ৭৬ বল স্থায়ী ১৩৭ রানের জুটি।
কয়েক ওভার পর ৩৮ বলে ফিফটিতে পা রাখেন রুতুরাজ। টেন্ডাই চাটারাকে টানা চার বলে তিনটি চার ও একটি ছক্কা মারেন তিনি। ব্লেসিং মুজারাবানিকে দুই ছক্কা মারা রিংকু ইনিংসের শেষ চার বলে দুই ছক্কার সঙ্গে হাঁকান এক চার।
রুতুরাজ ও রিংকুর ৩৬ বলের বিধ্বংসী অবিচ্ছিন্ন জুটিতে আসে ৮৭ রান। শেষ পাঁচ ওভারে ভারত তোলে ৮২ রান।
পাহাড়সম রান তাড়ায় তৃতীয় বলেই উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। সেই যে শুরু, এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে দলটি। পাওয়ার প্লেতে ৫৮ রান তোলে তারা ৪ উইকেট হারিয়ে। যেখানে দুটি করে শিকার মুকেশ ও আভেশের।
বোলারদের একের পর এক ছোবলে পঞ্চাশ ছোঁয়া একটি জুটিও পায়নি জিম্বাবুয়ে। সর্বোচ্চ ৪১ রান আসে জঙ্গুয়ে ও ওয়েসলি মাধেভেরের জুটিতে, অষ্টম উইকেটে।
স্বাগতিকদের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৩ রান করেন ওপেনার মাধেভেরে। ৩৩ রান আসে জঙ্গুয়ের ব্যাট থেকে।
আগামী বুধবার সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ২০ ওভারে ২৩৪/২ (গিল ২, আভিশেক ১০০, রুতুরাজ ৭৭*, রিংকু ৪৮*; বেনেট ২-০-২২-০, মুজারাবানি ৪-১-৩০-১, চাটারা ৪-০-৩৮-০, রাজা ৩-০-৩৪-০, জঙ্গুয়ে ৪-০-৫৩-০, মায়ার্স ১-০-২৮-০, মাসাকাদজা ২-০-২৯-১)
জিম্বাবুয়ে: ১৮.৪ ওভারে ১৩৪ (কাইয়া ৪, মাধেভেরে ৪৩, বেনেট ২৬, মায়ার্স ০, রাজা ৪, ক্যাম্পবেল ১০, মাডান্ডে ০, মাসাকাদজা ১, জঙ্গুয়ে ৩৩, মুজারাবানি ২, চাটারা ০*; মুকেশ ৩.৪-০-৩৭-৩, আভিশেক ৩-০-৩৬-০, আভেশ ৩-০-১৫-৩, বিষ্ণই ৪-০-১১-২, ওয়াশিংটন ৪-০-২৮-১, পারাগ ১-০-৫-০)