1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০৭ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

সিলেটের চো রা কা র বা রি দে র কাছে নেই কোনো সীমান্তের বাধা, রুখবে কে?

  • আপডেট টাইম :: সোমবার, ৮ জুলাই, ২০২৪, ১.২৬ পিএম
  • ২৮ বার পড়া হয়েছে

হাওর ডেস্ক::
সিলেটের চোরাকারবারিরা দিন দিন হয়ে উঠছেন অতি বেপরোয়া। প্রায় প্রতিদিনই সিলেটে ধরা পড়ে ভারতীয় বিভিন্ন চোরাই পণ্য। এর মধ্যে চিনির চালানই বেশি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর নিয়মিত অভিযান, সংবাদমাধ্যমে অবিরাম চোরাচালানবিষয়ক প্রতিবেদন প্রকাশ- এমনকি মহান জাতীয় সংসদ পর্যন্ত আলোচনা হয়

সিলেটের চোরাকারবারিদের নিয়ে। কিন্তু কিছুতেই থামানো যায় না তাদের দৌরাত্ম্য।

অভিযোগ উঠেছে- চিনিসহ ভারতীয় পণ্য চোরাচালানে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতা থেকে শুরু করে যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মী- এমনকি স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিরাও জড়িত। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তাদের সরাসরি মদদে
সিলেট সীমান্ত দিয়ে একের পর এক আসছে চিনিসহ ভারতীয় নানা পণ্য। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশ চিনি চোরাচালানকাণ্ডে শুধু বাহকদের গ্রেফতার করলেও মূল হোতারা রয়ে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরেই। ফলে

সিলেট সীমান্ত দিয়ে চোরাই পণ্য প্রবেশ আরও বেড়েছে। আর চোরাকারবারিরা বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তি ও কর্মকর্তাকে ‘ম্যানেজ’ করে দিন দিন হয়ে উঠছে অতি বেপরোয়া।

সিলেটের সচেতন মহলের উদ্বেগপূর্ণ প্রশ্ন- রক্ষকরা ভক্ষক হলে চোরাকারবারিদের আর রুখবে কে?

সর্বশেষ শনিবার (৬ জুলাই)
সিলেটের মোগলাবাজার থানাধীন খালেরমুখ বাজার থেকে ১৮ লক্ষ টাকার ১৫ হাজার কেজি ভারতীয় চিনি জব্দ করে পুলিশ। একটি ট্রাকে বালুর নিচে করে এসব চোরাই চিনি

সিলেটে নিয়ে আসা হয়। অভিযানকালে ১টি ট্রাক জব্দ ও ট্রাকের চালককে আটক করে পুলিশ।

এছাড়া গত কয়েক মাস ধরে প্রায় প্রতিদিনই

সিলেটে ধরা পড়ছে লক্ষ লক্ষ টাকার চিনিসহ ভারতীয় বিভিন্ন চোরাই পণ্য। সবচেয়ে বেশি হৈ-চৈ ফেলে গত ৬ জুন জব্দকৃত সিলেটে সবচেয়ে বড় ভারতীয় চিনির চালান। সিলেটের জালালাবাদ থানাধীন হাটখোলা ইউনিয়নের উমাইরগাঁওয়ের ভাদেশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের সড়ক থেকে পুলিশ ১৪টি ট্রাক ভর্তি ২ হাজার ১১৪ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ করে। প্রায় পৌণে দুই কোটি টাকা মূল্যের চিনির ওই চালানের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪ জন আটক হলেও মূল হোতা একজনও ধরা পড়েনি।

এক সাথে ১৪ ট্রাক চিনি আটকের ঘটনায় সিলেটসহ সারা দেশে এসময় তোলপাড় শুরু হয়। এরপর কয়েকদিন চোরাকারবারীরা সতর্ক ছিল। অনেকটা চোরাকারবার। কিন্তু কয়েকদিন যেতে না যেতে ফের শুরু হয় চোরাকারবারের মহোৎসব।

গত কয়েক মাসে

সিলেটে অন্ততঃ অর্ধশত কোটি টাকার চোরাই চিনি জব্দ করেছে প্রশাসন।

এমনকি বন্যার মাঝেও থেমে নেই চিনি চোরাচালান। সীমান্ত এলাকা থেকে জলমগ্ন রাস্তা ও নৌপথে চোরাকারবারীরা চিনি নিয়ে আসছে মহাসড়কে। সেখানে বড় ট্রাক, পিকআপ এমনকি মোটরসাইকেলে করেও নিয়ে আসা হয়

সিলেট শহরে। শহরের বিভিন্ন গোদামে রেখে ভারতীয় সীলযুক্ত বস্তা পরিবর্তন করে পাঠানো হয় দেশের বিভিন্ন স্থানে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,

সিলেটের সীমান্তবর্তী চার উপজেলার মধ্যে চোরাই চিনি চোরাচালানের অন্যতম রুটে পরিণত হয়েছে গোয়াইনঘাটের বিছনাকান্দি সীমান্ত। তবে কেবল বিছনাকান্দি নয়; গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলার সীমান্ত দিয়ে আসছে ভারতীয় চিনি। আর এসব চিনি চোরাচালানে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতা থেকে শুরু করে যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মী এমনকি স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদেরও নাম উঠে এসেছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তাদের সরাসরি মদদে আসছে একের পর এক চিনিসহ ভারতীয় বিভিন্ন চোরাই পণ্য।

অন্যদিকে, উপজেলার নকশিয়া পুঞ্জি পিয়াইন ও ডাউকি নদী, জিরো পয়েন্ট, লামাপুঞ্জি, গুচ্ছগ্রাম, লালমাটি, সংগ্রামপুঞ্জি, তামাবিল, নলজুরী ও তালাবাড়ী দিয়ে ভারতীয় চোরাই চিনি নিয়ে আসা হয়। বন্যার আগে এসকল সীমান্ত দিয়ে আসা চোরাই চিনির চোরাচালান সর্বপ্রথম হাদারপাড়ে নিয়ে আসা হতো। এরপর ট্রাক, পিকআপ কিংবা অন্য ছোটো যানবাহনের মাধ্যমে নিয়ে যাওয়া হতো হরিপুরে। বর্তমানে সীমান্ত থেকে সরাসরি নৌকাযোগে চোরাচালান নিয়ে যাওয়া হয় হরিপুরে।

স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, জৈন্তাপুর উপজেলার ৩৫টি স্পট দিয়ে নিয়মিত নিয়ে আসা হয় ভারতীয় চোরাই চিনির চোরাচালান। এর মধ্যে আছে, মোকামপুঞ্জি, আলুবাগান ও শ্রীপুর। এছাড়াও আদর্শগ্রাম, মিনাটিলা, ছাগল খাউরী, মিনাটিলা সুপারী বাগান, কেন্দ্রী মন্দির, কেন্দ্রী কাটালবাড়ী, কেন্দ্রী রাবারবাগান, কেন্দ্রী লম্বাটিলা ও চার নম্বর বাংলাবাজার, ডিবির হাওর, আসামপাড়া, মরিসমারা, ঘিলাতৈল, খলারবন্দ, ফুলবাড়ী, গৌরীশঙ্কর, টিপরাখলা, করিমটিলা, ভিতরগোল, গোয়াবাড়ী, বাইরাখেল ও হর্ণি সীমান্ত, নায়াগ্রাম, জালিয়াখলা, কালিঞ্জিবাড়ী, সারীনদীর মুখ, অভিনাশ টিলা, বাঘছড়া তুমইর, জঙ্গীবিল, রাবারবাগান, ইয়াংরাজা ও বালীদাঁড়া সীমান্ত এলাকা দিয়েও আসে চোরাই চিনি।

অপরদিকে, ভারতীয় চোরাই চিনির কারবার থেমে নেই সীমান্তবর্তী উপজেলা কোম্পানীগঞ্জেও। উপজেলার উত্তর রনিখাই ইউনিয়নের বরম সিদ্ধিপুর, মাঝেরগাঁও, উৎমা, লামাগ্রাম ও তুরং এলাকা দিয়ে আসে চিনির চোরাচালান। এছাড়াও উপজেলার ইসলামপুর পশ্চিম ইউনিয়নের নারাইনপুর, চিকাডহর ও ছনবাড়ি দিয়েও চিনির চোরাচালান আসে বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন।

এছাড়া কানাইঘাটেও চোরাকারবারিরা তৈরি করেছে অনেক নিরাপদ রুট। জানা গেছে, কানাইঘাটের চার সীমান্ত দিয়ে দেদারসে নিয়ে আসা হয় অবৈধ চিনি। এসব সীমান্ত এলাকার মধ্যে সুরইঘাট সুনাতনপুঞ্জি, বাউরবাগ ২য় খন্ড, বাউরবাগ ১ম খন্ড, নয়াখেল, বড়বন্দ, লোভা, সাউদগ্রা, লালমাটি, বড়গ্রাম, নুনছড়া আলুবাড়ী, নিহালপুর ও নিহালপুর আমরতল দিয়েও আসে ভারতীয় চিনি।

প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত
সিলেট জেলা পুলিশ ও

সিলেট মহানগর পুলিশের বিভিন্ন থানায় চোরাই চিনি চোরাচালানের ঘটনায় মোট ৬১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে গ্রেফতার করা হয়েছে ১৪৭ জনকে। এসবের মধ্যে জৈন্তাপুর থানার একটি মামলার (মামলা নং-০৯/ তারিখ ১৬/০৬/২০২৪) আসামি মনসুর আহমদ নিজপাট ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। সাথে তার শ্যালক আব্দুল কাদিরও এই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।

এদিকে, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের কেউ কেউ চোরাই চিনি চোরাচালানে জড়িয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ উঠে গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে। এর মধ্যে গত আগস্ট মাসে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও সহকারী কৌশুলি (এপিপি) অ্যাডভোকেট প্রবাল চৌধুরী পুজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে একটি পোস্ট দিলে চোরাচালানের বিষয় জনসম্মুখে আসে। এরপর অভিযুক্তরা হামলা চালিয়ে তাকে মারাত্মক আহত করে। হামলার ঘটনায় তিনি

সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, মহানগর সাধারণ সম্পাদকসহ ছাত্রলীগের ৫৫ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) কমিশনার মো জাকির হোসেন খান (পিপিএম) রবিবার (৭ জুলাই) সন্ধ্যায় সিলেটভিউ-কে বলেন- চোরাই পণ্য ঠেকাতে মহানগর এলাকায় নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে ৬টি থানার পুলিশ। চোরাই পণ্য জব্দ করার সময় ধৃতদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা দায়ের করা হয় এবং পরবর্তীতে চার্জশিভুক্ত আসামিও করা হয় তাদের। এছাড়া তাদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে অন্য কারবারিদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করে পুলিশ।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!