1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:৩১ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
জামালগঞ্জে নবাগত জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সভা সিলেটে শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসারকে অপসারণের দাবিতে গণস্বাক্ষর কার্যক্রম ২৫০ শয্যা হাসপাতালে সেবার মান বাড়ানোর দাবিতে মতবিনিময় সুনামগঞ্জে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও মিলাদ বন্যার্তদের সহায়তায় সুনামগঞ্জে শিল্পকলা একাডেমির ব্যতিক্রমী ছবি আঁকার কর্মসূচি জগন্নাথপুরে শিক্ষিকা লাঞ্চিত: দোষীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতাবিরোধী সকল কালাকানুন বাতিলের দাবি সাবেক ছাত্রলীগ নেতা পান্নার মরদেহ হস্থান্তর করলো মেঘালয় পুলিশ কাদের সিদ্দিকী বললেন: বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ আর শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ এক নয় বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বন্যায় ২০ লাখ শিশু ঝুঁকিতে : ইউনিসেফ

ছুটছে পেঁয়াজের দর, কোথায় থামবে

  • আপডেট টাইম :: শনিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৪, ১১.২৫ এএম
  • ২৮ বার পড়া হয়েছে

হাওর ডেস্ক::
মজুদে সঙ্কট না থাকলেও কোনোভাবেই পেঁয়াজের দরে লাগাম টানা যাচ্ছে না। সপ্তাহের ব্যবধানে রান্নার এই দরকারি পণ্যটির দর খুচরায় বেড়েছে কেজিতে অন্তত ২০ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সামনে দাম আরও বাড়তে পারে।

রাজধানীর শ্যামবাজার, কারওয়ান বাজার ও মহাখালী কাঁচাবাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পেঁয়াজের খুব একটা সংকট না থাকলেও ধাপে ধাপে চড়ছে দাম। এসব বাজারে খুচরায় ১১০ থেকে ১১৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকার আশপাশে। তবে বিভিন্ন অলিগলিতে বা মুদি দোকান থেকে ক্রেতাদের এক কেজি পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে ১২০ টাকায়।

কারওয়ান বাজারে পাইকারি দোকান মেসার্স মাতৃভাণ্ডারের সজীব শেখ ফরিদপুরের পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ৯৮ টাকা কেজি দরে, আর পাবনার পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ১০৪ টাকায়। তিনি সপ্তাহখানেক আগেও ৯০ টাকার নিচে পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আমার এখানে পেঁয়াজ চাহিদা অনুযায়ী কিছুটা শর্ট আছে।”

তবে শ্যামবাজারের পেঁয়াজের পাইকারি বিক্রেতা শেখ শাহেদ বললেন ভিন্ন কথা। তার ভাষ্য, সংকট নয় বরং ‘মুনাফালোভী’ মজুদদাররা পরিকল্পনা করে দাম বাড়িয়েছে।

তিনি বলেন, “এখন কৃষকদের হাতে খুব একটা পেঁয়াজ নেই। তাই সংরক্ষণকারীরা মাচা থেকে যে পেঁয়াজ বের করতেছে সেটা বেশিতে বিক্রি করতেছে। ভোক্তা অধিদপ্তর এমন লোকদের ধরলে পেঁয়াজের দর আবার ঠিক হয়ে যাবে।”

শ্যামবাজারে পাবনার পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯৬ টাকা কেজি দরে, আর ফরিদপুরের পেঁয়াজ ৯৩ টাকা কেজি দরে। দুদিন হল ৯০ টাকার উপরে দাম উঠেছে বলে জানাচ্ছেন শেখ শাহেদ।

শাহেদ বলেন, “দেশের বাইরের মাল আসে নাই এখনও। তবে শুনছি পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মিয়ানমারের পেঁয়াজ ঢুকব। কিন্তু এগুলো ঢুকতে আরও ১৫ দিনের মতো সময় লাগব।”

তিনি বলেন, “ভারত থেকে এখন পেঁয়াজ খুব কম আসতেছে। ভারত ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার পর দাম বেড়ে গেছে। এখন আমদানিকারকরা পেঁয়াজ এনে পোষাতে পারে না। শুল্ক না বাড়ালে আমাদের এই সমস্যায় পড়তে হত না।

“কৃষকদের কাছে হয়ত অল্প পেঁয়াজ আছে। কিন্তু পেঁয়াজ মূলত মজুতদারদের কাছে। তাদের কাছে প্রচুর পেঁয়াজ আছে। তারা খাম্বা (স্তরে স্তরে রাখা) দিয়া বড় বড় মাচা করে সেখানে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করে রেখেছে। এখন ভোক্তা অধিদপ্তর এসব জায়গায় রেইড দিলে সব ঠিক হইয়া যাইব।”

মহাখালী কাঁচাবাজারের বিক্রেতা নির্মল ঘোষ বলেন, “আমার পেঁয়াজ আগের কেনা, তাই দামটা কম। সপ্তাহখানেক আগে কিনছি। এখন অনেক জায়গায় শুনতেছি দাম নাকি বাড়তেছে। এখন পেঁয়াজের সিজন নাই, তাই মজুতদাররা দাম বাড়াচ্ছে।”

আরেক বিক্রেতা মো. বাহারউদ্দীন বললেন, “দুইদিন আগে কারওয়ান বাজার থেকে কিনেছি ১০৬ টাকা করে। এই সময়ে সাধারণত এত দাম বাড়ে না, আরও কম থাকে। মৌসুমের শেষে বাড়ে।”

এদিকে তুলনামূলক কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি করছে সুপারশপ ‘স্বপ্ন’। গুলশান-২ এলাকার বাসিন্দা মো. কামাল হোসাইন ‘স্বপ্নের’ আউটলেট থেকে ১০৫ টাকা দরে পেঁয়াজ কিনেছেন।

তিনি বলেন, “বেছে বেছে পেঁয়াজ কিনেছি। বাজারে দাম আরও বেশি। মূলত যে যেরকম পারতেছে লাভ করতেছে। না হয় স্বপ্ন কমে বিক্রি করে কেমনে?”

মহাখালীর রসুলবাগে মার্জিয়া ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ।

এ দোকানের বিক্রেতা কামাল হোসাইন বলেন, “আমি পেঁয়াজের বাজার নিয়ে খুবই চিন্তিত। সপ্তাহখানেক আগে যে পেঁয়াজ এনেছিলাম সেটা তিনদিন আগ পর্যন্ত বিক্রি করছি ১০০ টাকা কেজিতে। দুদিন আগে গিয়ে দেখি ২০ টাকা বেড়ে গেছে। এখন আমার ক্রেতারাও তো বিভ্রান্ত হবে। আমার কাছ থেকে আগেরদিন একজন যদি নিয়ে থাকে ১০০ টাকায়, পরদিন এসে দেখল ১২০ টাকা। এই বাজারের আসলে নিয়ন্ত্রণ কার হাতে?”

রাজধানীর বাইরে ভিন্ন জেলাতেও ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ।

গাজীপুরের শ্রীপুরের ওয়াপদা মোড়ের সবজি বিক্রেতা শফিকুল ইসলাম পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ১২০ টাকা কেজি দরে। তিনি ১০০ টাকা কেজি দরে মাওনা চৌরাস্তার আড়ৎ থেকে পেঁয়াজ কিনেছেন বলে জানালেন।

তার পাশের আরেক বিক্রেতা ইমান আলী তার পেঁয়াজ দেখিয়ে বললেন, “এগুলা হালি পেঁয়াজ। বছরের এই সময়টা একটু দাম বাড়েই। তবে এখন বেশি বাড়তাছে। আর বছর শেষে তো অনেক বাড়ব। কৃষকের হাতে এই সময় পেঁয়াজ নাই। সব আছে গুদামে।”

মোকামে দর আরও বাড়ছে

ফরিদপুরে মঙ্গলবার পর্যন্ত ১০০ টাকার নিচে ছিল পেঁয়াজের দাম। তবে বুধবারই তা ১০০-তে চড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মোকামে দাম যত বাড়বে তার প্রভাবও পড়বে রাজধানীতে। আবার সরবরাহকারীরা বলছেন, সামনে দাম আরও বাড়বে।

ফরিদপুর থেকে ঢাকায় পেঁয়াজ সরবরাহ করেন আবদুর রশিদ।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানালেন, পেঁয়াজের দর বুধবার নতুন করে আরও পাঁচ টাকা বেড়েছে ফরিদপুরের বিভিন্ন বাজারে। বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা কেজি দরে।

“মোকামে যেহেতেু আজ দাম বাড়ছে, তাই ঢাকার খুচরা বাজারে ১২০ টাকা হবে। আর বাজারের বাহিরে দাম আরও বেশিতে বিক্রি করবে ছোট দোকানিরা। এখন ভারতের পেঁয়াজের দর বেশি থাকায় আমদানি কম। তাই দেশের পেঁয়াজের যেটুকু ঘাটতি সেটা পূরণ করা যাচ্ছে না।”

হাত খালি কৃষকের, নিয়ন্ত্রণ মজুতদারদের কাছে

অন্যান্য বছরের মত এই সময়ে এবারও আর কৃষকের ঘরে পেঁয়াজ নেই। কারণ অন্য বছর মার্চ ও এপ্রিলের শুরুর দিকে দাম তুলণামূলক কম থাকে, আর জুলাইয়ে এসে কিছুটা দাম বাড়ে। তাই অধিক লাভের আশায় এই সময় সংরক্ষণ করে রাখা পেঁয়াজ ছেড়ে দেন কৃষকরা।

তবে এবার মৌসুমের শুরুতেই ভালো দাম থাকায় চাষিরা আগেভাগে অপরিপক্ব পেঁয়াজ তুলে বিক্রিছেন। এতে কৃষকরা লাভবান হলেও প্রভাব পড়েছে দেশের মোট উৎপাদনে। পেঁয়াজের নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে মজুতদারদের হাতে।

ফরিদপুরের ভাঙ্গার পেঁয়াজ চাষি হাবিব খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তিনি ৫ বিঘার উপরে পেঁয়াজ চাষ করেছিলেন। ধাপে ধাপে পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন। আর সর্বশেষ পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন মে মাসের শেষের দিকে, ৬৫ টাকা কেজি দরে।

হাবিব বলেন, “একটু ভালো দাম পাইছি তাই তখন বিক্রি করে দিছি। আমার মত অনেকেই বিক্রি করছে। কিন্তু এখন তো দেখি বাজার অনেক গরম। এখানের কৃষকদের মাচায় পেঁয়াজ খুব একটা নেই। যা রেখছিল একটু ভালো দাম পাওয়ায় তারা বিক্রি করে দিছে।”

এ সময় পেঁয়াজের সংকট আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সংকট নাই। পেঁয়াজ পর্যাপ্ত আছে। কিন্তু এবার দাম বেশি বাড়তেছে, বাড়ানো হইতেছে।”

ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামানও পেঁয়াজের দাম বাড়ার কোনো যুক্তি খুঁজে পাচ্ছেন না।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রশ্নে তিনি বলেন, “কৃষি বিপণন অধিদপ্তর বলেছিল এ বছর পর্যাপ্ত পেঁয়াজের উৎপাদন হয়েছে। তাহলে দাম বাড়বে কেন? পেঁয়াজ তো শর্ট পড়ার কথা না। তারা কি ভুল তথ্য দিয়েছিল? এখন আমরা তো কৃষকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে দেখতে পারব না, কেন বেশি দামে বিক্রি করছে।”

কৃষকরাই বেশি দামে বিক্রি করছে- এ বিষয়ে নিশ্চত কি না, সেই প্রশ্নে তিনি বলেন, “না, আমি বলছি ধরেন আরকি। এখন তো সব জায়গায় গিয়ে গিয়ে দেখা যাবে না, কেন বেশি দামে বিক্রি করছে।”

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!