1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:১৭ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

ঢাকায় কোটাবিরোধীদের হামলায় নিহত ২: সুরতহালে পুলিশ

  • আপডেট টাইম :: বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই, ২০২৪, ১০.৪৮ এএম
  • ৩০ বার পড়া হয়েছে

হাওর ডেস্ক::
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের মধ্যে ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের সামনে নিহত সবুজ আলী ও মো. শাহজাহানের মৃত্যুর জন্য আন্দোলনকারীদের দায়ী করছে পুলিশ।

দুজনের মৃতদেহের সুরতহাল প্রতিবেদনে পুলিশ বলছে, কোটা আন্দোলনকারীদের মারধর ও আঘাতে ওই দুজনের মৃত্যু হয়।

নিহতদের মধ্যে সবুজ আলী (২৪) ঢাকা কলেজের পরিসংখ্যান বিভাগের ছাত্র; তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন।

আর মো. শাহজাহান নিউ মার্কেটে হকারি এবং দিনমজুরিও করতেন। তাকে ছাত্রলীগ কর্মী ভেবে আন্দোলনকারীরা মারধর করেছে বলে সুরতহাল প্রতিবেদনে মন্তব্য করেছে পুলিশ।

অবশ্য শাহজাহানের ডান চোখের নিচে একটি ছিদ্রের মত জখমের কথা বলা হয়েছে সুরতহালে। নিহতের ভাই শাওন মনে করছেন, সেটি গুলির চিহ্ন হতে পারে।

অস্বাভাবিকভাবে কারও মৃত্যুর পর মৃতদেহের দৃশ্যমান অবস্থা বর্ণনা করে পুলিশ যে প্রতিবেদন তৈরি করে, সেটাকেই সুরতহাল প্রতিবেদন বলা হয়।

সবুজ আলীর সুরতহাল প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন নিউ মার্কেট থানার উপ পরিদর্শক মাহবুব আলী। কারা সবুজকে আঘাত করেছে, প্রতিবেদনের সে অংশ লেখায় কাটাকাটি করায় অস্পষ্ট।

তিনি লিখেছেন, “ঢাকা কলেজের সামনের পাকা রাস্তায় বিকেল সোয়া ৪টার দিকে কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিতে দিতে অজ্ঞাতনামা ছাত্ররা ভিকটিমকে”… এ পর্যন্ত পড়া যায়। এরপর কী ঘটেছিল সে অংশে কাটাকাটি হওয়ায় লেখা পড়া যায়নি।

সেখানে কী লিখেছেন জানতে চাইলে মোবাইল ফোনে এসআই মাহবুব আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিষয়টা হচ্ছে কোটা আন্দোলনকারীদের ভিকটিমকে (সবুজ আলীকে) আঘাত করলে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে ডাক্তাররা মৃত ঘোষণা করেন।”

নীলফামারী সদরের আরাজি দলুয়া গ্রামের ভূমিহীণ কৃষক বাদশা আলীর দ্বিতীয় সন্তান সবুজ আলী। নিহতের বড়ভাই নুরুন্নবী বলছেন, সবুজকে ঘিরেই তাদের পরিবার নতুন দিনের স্বপ্ন দেখছিল। তিনি নিজে ভাইয়ের পড়ার খরচ যোগাতে উচ্চ শিক্ষা নিতে পারেননি। এখন সেই ভাইয়ের লাশ নিয়ে ফিরতে হচ্ছে গ্রামে।

নিহত হকার শাহজাহানের সুরতহাল প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন এসআই কামালউদ্দীন মুন্সী। সেখানে দেহের ক্ষতের বর্ণনা দিয়ে লেখা হয়েছে, তার মাথার পেছনে হালকা ফোলা আছে। ডান চোখের নিচে একটি সরকারি ব্যান্ডেজ আছে, তার নিচে একটি ছিদ্র জখম আছে। নাকে রক্তাক্ত জখম আছে।

সুরতহাল প্রতিবেদনে সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ ও মৃত্যুর প্রমাণপত্রের বরাত দিয়ে এসআই কামালউদ্দীন লিখেছেন, “মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৬টার দিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনের অজ্ঞাতনামা শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিতে দিতে এসে ভিকটিমকে ছাত্রলীগ ভেবে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়িভাবে অতর্কিতে আঘাত করে।

“গুরুতর অবস্থায় প্রথমে পপুলার মেডিকেলে নিয়ে গেলে তারা উন্নত সচিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে রেফার করে। এরপর তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।”

পুলিশ কোটা আন্দোলনকারীদের হামলায় নিহত হওয়ার কথা লিখলেও নিহত শাহজাহানের স্বজনেরা বিষয়টি নিয়ে সন্দিহান।

শাহজাহানের ভাই মো. শাওন বলেন, তার ভাইয়ের নাকের ডান পাশে একটি বড় ছিদ্র রয়েছে, সে কারণেই তাদের সন্দেহ তৈরি হয়েছে।

“ফুটাটা অনেক বড়, আঙুল ঢুকে যাওয়ার মত। অনেকে সেটা দেখে বলছে গুলি লাগার কারণে এমন হতে পারে।”

শাহজাহানের মা আয়েশা বেগম বলেন,তার ছেলে আগে নিউ মার্কেটের সামনে পাপোশ বিক্রি করতেন। তার স্ত্রী সন্তান সম্ভবা ছিলেন। তিনমাস আগে তার গর্ভের সন্তানটি মারা যায়। স্ত্রীর চিকিৎসা বাবদ অনেক টাকা খরচ হয় তার। ঋণ করে সেই টাকা তুলেছিলেন শাহজাহান।

“ঋণের টাকা শোধ দিতে না পারায় নিউ মার্কেটের সেই জায়গায় আর দোকান বসাতে পারছিল না শাহজাহান। একমাস ধরে বলা যায় বেকারই ছিল। গতকাল থেকেই একজনের সঙ্গে ধানমণ্ডির একটি ভবনে ইলেকট্রিকের কাজ করার জন্য গিয়েছিল। দুপুরে খাবারের জন্য নামার পর সে হত্যার শিকার হয়।”

চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার পর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ঢাকা কলেজের অদূরে সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। এতে মিরপুর সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

দুপুরের পর থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। বিকাল ৪টার দিকে সংঘর্ষ ঢাকা কলেজ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।

সে সময় ঢাকা কলেজের সামনের রাস্তায় হেলমেট পরা এক যুবককে রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। পাশেই লাঠি হাতে ছিলেন আরেক ব্যক্তি।

আহত ওই যুকককে বিকাল সোয়া ৫টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান। রাতে তাকেই সবুজ আলী হিসেবে শনাক্ত করেন সিআইডির বিশেষজ্ঞরা।

আর সংঘর্ষের মধ্যে শাহজাহান রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিলেন ঢাকা কলেজের অদূরে মিরপুর সড়কে সিটি কলেজের সামনে রাস্তায়। সন্ধ্যা ৭টার দিকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকেও মৃত ঘোষণা করেন।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!