বিশেষ প্রতিনিধি:;
সুনামগঞ্জে সাম্প্রতিক তিন দফা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হতদরিদ্ররা বসতবাড়ি সংস্কারে সরকারি সহযোগিতা চান। বন্যায় অনেকের ঘরবাড়ি ধসে যাওয়ায় বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আশ্রয় কেন্দ্র থেকে বাড়িতে ফিরে বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি দেখে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। তাই কাচা ঘরবাড়ি সংস্কারে সহযোগিতা চান তারা।
সুনামগঞ্জে গত ১৬ জুন থেকে ২০ জুন পর্যন্ত পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণে ভয়াবহ বন্যায় প্রায় সাড়ে ৮ লাখ পরিবার বন্যা কবলিত হয়। এসময় সুনামগঞ্জ সদর, ছাতক, দোয়ারাবাজার উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের হতদরিদ্র হাজারো মানুষের কাচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। হাওরের ঢেউয়ে ভেঙ্গে নিচ্ছে ভিটা। প্লাবিত হওয়ার পর তারা পরিবার নিয়ে কোনওরকমে আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছিলেন। পরে ৩০ জুলাই থেকেও দ্বিতীয় দফা বন্যা শুরু হয়। বিধ্বস্ত বাড়িঘর মেরামত করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন হতদরিদ্র মানুষজন। তাই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি সংস্কারে সরকারি সহযোগিতা দাবি করেছেন তারা। জেলা প্রশাসনের হিসেবে এবারের বন্যায় প্রায় ৮ লাখ মানুষ বন্যা কবলিত হয়েছিলেন। অবকাঠামোগত ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে অনেক। কিন্তু কি পরিমাণ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা নির্ধারণ করতে সংশ্লষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
শান্তিগঞ্জের উজানীগাও গ্রামের বাউল লাল শাহর গানের ঘর এবারও বন্যায় নিমজ্জিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কাচা ঘরটি সংস্কার করা জরুরি। কিন্তু তার আর্থিক সক্ষমতা না থাকায় ঘরটি আরো দুর্বল হয়ে পড়ছে। লাল শাহ বলেন, ২২ সালের বন্যায় আমার গানের ঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়। সেই ক্ষতিই পোষাতে পারিনি। এবারও বন্যায় আবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গানের ঘরটি সংস্কার করতে না পারলে সাধনাই থেকে যাবে। বন্ধ হয়ে যাবে সংসার চালানোর আয় রোজগারের পথ।
ওয়েজখালির কুতুব উদ্দিন বলেন, আমার মাটির ঘরে দুইবার পানি ওঠেছে। বেড়া ভেঙ্গে গেছে। এখন পরিবার নিয়ে থাকা মুশকিল। ঘরটি সংস্কার করতে না পারলে সমস্যায় পড়বো। তাই ঘর সংস্কারে সরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রেজাউল করিম বলেন, বন্যার্তদের সরকারি ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা হয়েছিল। তবে অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতির তথ্য ও কি পরিমাণ ঘরবাড়ির ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার তথ্য দেওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এসংক্রান্ত বরাদ্দ এলে বিতরণ করা হবে বলে জানান তিনি।