হাওর ডেস্ক::
বন্যার্তদের সহায়তায় ‘জীবন সংগ্রামের ছবি’ শিরোনামে উন্মুক্ত চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে রাজধানীতে।
‘ইন্ডিপেনডেন্ট ফিল্মমেকারস কমিউনিটি’র আযোজনে শুক্রবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১৫টি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নিয়ে সাজানো হয়েছে এই বিশেষ প্রদর্শনী।
কমিউনিটির সমন্বয়ক পরিচালক কামরুল আহসান লেনিন গ্লিটজকে বলেছেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের খোলা মঞ্চে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে এই প্রদর্শনী শুরু হবে। চলবে মধ্যরাত পর্যন্ত। প্রায় ৭০ মিনিট করে চারটি পর্বে ভাগ করা হয়েছে এই আয়োজন।
এই কমিউনিটি ‘জীবন সংগ্রামের ছবি’ আয়োজনটি প্রথমবারের মত করছে।
লেনিন বলেন, “এটা যেহেতু উন্মুক্ত প্রদর্শনী এতে কোনো টিকেট মূল্য রাখা হয়নি, তবে আমরা বন্যার্তদের জন্য একটা ফান্ড কালেকশন করার ব্যবস্থা রাখব৷ দর্শকরা নিজে থেকে যে অর্থ আয়োজকদের দেবেন, সেটা টাকা বন্যার্তদের জন্য রাখা হবে।”
এই পরিচালক বলেছেন, ৪ ঘণ্টা করে তিনটা সেশনের মাধ্যমে রাত ১২টা পর্যন্ত সিনেমা দেখানোর পরিকল্পনা তাদের আছে। মাঝরাতের পর দর্শকের প্রতিক্রিয়া দেখে অর্থাৎ তাদের যদি আগ্রহ থাকে তাহলে আরও দুটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘আম কাঁঠালের ছুটি’ ও ‘হীরক রাজার দেশে’ দেখানোর ইচ্ছে রয়েছে বলে জানিয়েছেন লেনিন।
দেশে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর স্থানের ‘সংকট রয়েছে’ জানিয়ে এই পরিচালক ও সমন্বয়ক লেনিন বলেন, “যারা স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করছেন বা বিকল্পধারা চলচ্চিত্র নির্মাণ করছেন কোনো সিস্টেমেটিকওয়েতে তাদের সিনেমা দেখানোর সুযোগ নেই। স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতাদের এটাই মূল সমস্যা।
“আমরা এবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্ত মঞ্চটি বেছে নিয়েছি সিনেমাগুলো দেখানোর জন্য। এই জায়গাটি তেমন ব্যবহার হচ্ছে না। তাই নিজেরাই উদ্যোগ নিয়েছি যদি কোনো উন্মুক্ত স্থানে জীবনমুখী চলচ্চিত্রগুলো দেখানোর সুযোগ তৈরি করা যায়। তাহলে আমাদের চলচ্চিত্রগুলো নিয়ে আমরা সাধারণ মানুষের কাছে সহজেই পৌঁছাতে পারব।”
উন্মুক্ত স্থানে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র দেখানোর উদ্দেশ্য থেকেই এই কমিউনিটি তৈরি হয়েছে এবং প্রতি মাসেই এই আয়োজন অব্যাহত রাখতে চান বলেও জানিয়েছেন পরিচালক লেলিন।
তিনি বলেন, “আমরা প্রতি মাসেই দেশের বিভিন্ন উন্মুক্ত স্থানে সিনেমা দেখাতে চাই। মাসের একটা দিন থাকবে আমাদের জন্য যেখানে সিনেমা দেখানোর জন্য উন্মুক্ত জায়গা আমরা পাব। আমরা অনেকবার এই উদ্যোগ নেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু একা এই আয়োজন করা সম্ভব না। তাই আমরা ২০ জনের মত একটা টিম গঠন করি যেটার নাম দেই ‘ইন্ডিপেনডেন্ট ফিল্মমেকারস কমিউনিটি’। এটা কোনো সংগঠন নয়, এখানে যুক্ত হয়ে যে কেউ, যে কোনো দেশের নির্মাতা তার সিনেমা দেখাতে পারবে। এই উদ্যোগটা সফল হলে আমরা নিজেরা যেমন লাভবান হব তেমনি অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশের মানুষের মধ্যেও সিনেমা দেখার আগ্রহ তৈরি হবে।”
শুক্রবার সন্ধ্যার আয়োজনের প্রথম সেশনে ৬টি সিনেমা দেখান হবে। এরমধ্যে উদ্বোধনী সিনেমা হল ইভান মনোয়ারের ‘দ্য সাউন্ড ইজ লাউড’। এরপর একে একে দেখান হবে ফুয়াদ নাসেরের ‘হাওয়ার টানে’, গোলাম রাব্বানীর ‘আনটাং’, এ কে এম জাকারিয়ার ‘ইতি ছালমা’, মাশরুর পারভেজের ‘ইউর আইস’ এবং কামরুল আহসান লেনিনের ‘ঘরে ফেরা’।
দ্বিতীয় সেশনে থাকছে চারটি প্রদর্শনী। এর মধ্যে রয়েছে চৈতালী সমদ্দারের ‘লাইক অ্যা মুভি’, আরিফুর রহমানের ‘রোকাইয়া’, অপরাজিতা সংগীতার ‘ছাড়পত্র’ এবং এম এম জাহিদুর রহমানের ‘ওমর ফারুকের মা’।
এরপর তৃতীয় সেশনে থাকছে তিনটি সিনেমা। লিটন করের ‘আই সি ইউ’, রাকায়েত রাব্বির ‘হাওয়াই মিঠাই’ এবং এন রাশেদ চৌধুরীর ‘বিস্মরণের নদী’ দেখানো হবে।
চতুর্থ ও শেষ সেশনে থাকছে মাত্র দুটি সিনেমা। এরমধ্যে থাকছে আমিনুর রহমান মুকুলের ‘কমলাপুরাণ’ এবং মোল্লা সাগরের ‘সাইরেন’।