হাওর ডেস্ক:
ঢাকার অদূরে সাভারের আশুলিয়ায় জীবিত স্বামীকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত দেখিয়ে মিথ্যা হত্যা মামলা দায়েরের অভিযোগে মামলার বাদী কুলসুম আক্তারসহ (২১) দুজনকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। তবে মামলার বাদীর দাবি চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তাকে দিয়ে মামলাটি করানো হয়েছে।
পুলিশ হেফাজতে থাকা কুলসুম আক্তার (২১) মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর থানার সিংজুরীর আব্দুল খালেকের মেয়ে। অপর দুজন হলেন, মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর থানার মৃত মাসুম আলীর ছেলে রুহুল আমিন (৬৪), একই জেলার শিবালয় থানার টেপড়া এলাকার মৃত মনসের আলীর ছেলে শফিউদ্দিন (৪০)।
কুলসুম বেগম জানান, স্বামী মো. আল আমিনের সঙ্গে সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় থাকতেন। আল আমিনের বাবা নূরনবী ও মায়ের নাম কমলা বেগম। ২৮ আগস্ট তিনি সিলেট থেকে মানিকগঞ্জ চলে আসেন এবং চাকরির খোঁজ করতে থাকেন তিনি। পরে একদিন বাসে পরিচয় হয় শফিউদ্দিনের সঙ্গে। সেসময় কথাবার্তার একপর্যায়ে শফিউদ্দিনকে চাকরি প্রয়োজন বলে জানান কুলসুম। একথা শুনে কুলসুমকে মুঠোফোন নাম্বার দেন শফিউদ্দিন। এর কিছুদিন পর কুলসুমের চাকরি হয়েছে জানিয়ে জন্মনিবন্ধন ও চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট দিতে বলেন তিনি৷ এর কিছুদিন পর ঢাকায় নিয়ে ৫ আগস্ট এক ব্যক্তির নিহতের ঘটনার মামলায় কুলসুমকে বাদী করা হয়েছে বলে জানান শফিউদ্দিন ও রুহুল আমীন। এবং কুলসুমকে নিহত ব্যক্তিকে স্বামী হিসেবে সবার কাছে পরিচয় দিতে বলেন। অন্যথায় কুলসুমের ফাঁসি হবে বলে জানান। পরে আদালতে নিহত ব্যক্তি তার স্বামী বলে জানান। এরপর থেকে তারা কুলসুমকে কক্সবাজার নিয়ে রাখেন। কুলসুম একবার বাড়ি ফিরলেও পরে শফিউদ্দিন ও রুহল আমীন আবারও তাকে কক্সবাজার নিয়ে যান। পরে আশুলিয়া থানা পুলিশ কুলসুম, রুহুল আমীন ও শফিউদ্দিনকে হেফাজতে নেন।সিলেটের রেস্তোরাঁ
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক বলেন, মামলার বাদীসহ আরও দুজনকে কক্সবাজার থেকে আশুলিয়া থানায় আমাদের হেফাজতে আনা হয়েছে। বাদীকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির জন্য আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকি দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ অক্টোবর কুলসুম বেগম (২১) তার স্বামী মো. আল আমিন মিয়াকে হত্যার অভিযোগ এনে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৩০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। পরে এটি ৮ নভেম্বর ঢাকার আশুলিয়া থানায় এজাহারভুক্ত হয়। পরে গত ১৩ নভেম্বর কুলসুমের স্বামী আল আমিন মৌলভীবাজারের জুড়ি থানা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আশুলিয়া থানা পুলিশ বিষয়টা জানতে পেরে পরদিন আল আমিনকে আশুলিয়া থানায় আনেন।