ধর্মপাশা প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের গাবী গ্রাম সংলগ্ন পরিত্যক্ত সুনেত্র গ্যাস ফিল্ড এলাকায় দুই বন্ধুর ঝগড়া থামাতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে হৃদয় হাসান (২৩) নামের রাজমিস্ত্রির মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়েছে। নিহত রাজমিস্ত্রির মা উপজেলার গাবী গ্রামের বাসিন্দা আম্বিয়া খাতুন (৩৯) বাদী হয়ে উপজেলার মীর্জাপুর গ্রামের তাইন তালুকদার(১৯), ও দুজন কিশোরসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা দুই থেকে তিনজনকে আসামি করে রবিবার (৮ডিসেম্বর) বিকেলে ধর্মপাশা থানায় এই হত্যা মামলাটি করেছেন। পূর্ব বিরোধের জের ধরে উপজেলার গাবী গ্রামের অন্তর মিয়া (১৯) ও তার বন্ধু তাইন তালুকদারের (১৯) লেকজনদের মধ্যে শনিবার (৭ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
ধর্মপাশা থানা পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের গাবী গ্রামের অন্তর মিয়া ও মির্জাপুর গ্রামের তাইন তালুকদার দুজন বন্ধু। প্রায় ১০মাস আগে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। শনিবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার গাবী গ্রাম সংলগ্ন সুনেত্র গ্যাস ফিল্ডের পরিত্যক্ত এলাকায় ফুসকার দোকানের সামনে তাইন তালুকদারকে দেখতে পেয়ে অন্তর মিয়া তাকে ডাক দেন। ডাকশুনে তাইন না আসায় অন্তর এগিয়ে গিয়ে তাকে চড় থাপ্পড় মারেন। এ সময় তাইন তালুকদার ও অন্তরের ঝগড়া থামাতে চেষ্ঠা করেন রাজমিস্ত্রি হৃদয় হাসান। কিন্তু দুই বন্ধুর পক্ষ নিয়ে দুই পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় ধারালো ছুরির এলোপাতাড়ি আঘাতে গাবী গ্রামের অন্তর মিয়া ও শামীম আহমেদের (১৯) পেঠে এবং হৃদয় হাসান বুকের বাম পাশ্বে গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় জড়িত চারজন কে তাৎক্ষণিকভাবে আটক করেন গ্রামবাসী। আহতদের রাত সোয়া ১১টার দিকে ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক হৃদয় হাসানকে মৃত ঘোষনা করেন। আহত অপর দুজনকে রাতেই ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে রাত পৌনে ১১টার দিকে ধর্মপাশা থানা পুলিশ সেখানে গিয়ে ঘটনায় জড়িত চারজনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে থানায় নিয়ে আসেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, এই হত্যা মামলার চারজন আসামির মধ্যে দুজনের বয়স ১৬নীচে হলেও মামলায় তাদের বয়স ১৮দেখানো হয়েছে।
ধর্মপাশা থানার ওসি মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন,বাদীর এজাহার অনুযায়ী থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। এই চারজন আসামির মধ্যে দুজনের বয়স ১৮ এর নীচে হয়ে থাকলে সেটি খতিয়ে দেখা হবে। রবিবার সকালে নিহত রাজমিস্ত্রির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ ছাড়া আটক থাকা চারজনকে হত্যা মামলার হওয়ার পর পরই তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। মামলার তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। গুরুতর আহত দুজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।