অনলাইন::
আগামীকাল বুধবার শারদীয় দুর্গোৎসবের মহাসপ্তমী। আজ মঙ্গলবার সাড়ম্বরে অনুষ্ঠিত হয়েছে মহাষষ্ঠী পূজা।
সকালে ষষ্ঠাদি কল্পারম্ভ, সন্ধ্যায় আমন্ত্রণ ও অধিবাস এবং ষষ্ঠী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সঙ্গে মণ্ডপে মণ্ডপে ছিল পুষ্পাঞ্জলি, আরতি ও প্রসাদ বিতরণ।
পঞ্জিকা মতে, আগামীকাল বুধবার মহাসপ্তমী পূজা অনুষ্ঠিত হবে। পূজা দেখতে বিকেল ৪টায় ঢাকেশ্বরী মন্দির এবং পৌনে ৫টায় রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের মণ্ডপে যাবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এ ছাড়া আগামীকাল এবং দুর্গোৎসবের অনান্য দিন মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও সংসদ সদস্যরা রাজধানীর বিভিন্ন মণ্ডপ পরিদর্শন করবেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
আয়োজকরা জানান, মহাসপ্তমীতে হবে নবপত্রিকা প্রবেশ ও স্থাপন, ষোড়শ উপচারে অর্থাৎ ষোলটি উপাদানে দেবীর পূজা। উৎসবের দ্বিতীয় দিন সকালে ত্রিনয়নী দেবী দুর্গার চক্ষুদান করা হবে। সকালে দেবীকে আসন, বস্ত্র, নৈবেদ্য, স্নানীয়, পুষ্পমাল্য, চন্দন, ধূপ ও দীপ দিয়ে পূজা করবেন ভক্তরা। সপ্তমী পূজা উপলক্ষে সন্ধ্যায় বিভিন্ন মণ্ডপে ভক্তিমূলক সংগীতানুষ্ঠান, রামায়ণ পালা, আরতিসহ নানান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনে আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৬টায় দেবীর ষষ্ঠ্যাদি কল্পারম্ভ শুরু হয়। সায়ংকালে (সন্ধ্যায়) অনুষ্ঠিত হয় দেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাস। মহাসপ্তমীর পূজা শুরু হবে আগামীকাল সকাল সাড়ে ৬টায়। আর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনে আজ ষষ্ঠী পূজা ছাড়াও সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয়েছে ভক্তিমূলক সংগীতানুষ্ঠান। সন্ধ্যায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশের ভারপ্রাপ্ত আইজিপি, র্যাব প্রধান, পুলিশ কমিশনারসহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মন্দির পরিদর্শনে যান। আগামীকাল সন্ধ্যায় ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে যাবেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
এ ছাড়া বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির ও শ্মশান কমিটি, রমনা কালীমন্দির, বাড্ডার কালীমাতা দেবী মন্দির, সূত্রাপুরের রাম-সীতা মন্দির, আর এম দাস রোডের গৌতম মন্দির, শাঁখারীবাজারের প্রতিদ্বন্দ্বী পূজামণ্ডপ, কে এম দাস লেনের ভোলানন্দগিরি আশ্রম ট্রাস্ট, সনাতন সমাজকল্যাণ সংঘ, বৃহত্তর মিরপুর সর্বজনীন পূজা উদ্যাপন পরিষদ, কলাবাগান সর্বজনীন পূজামণ্ডপ, বনানীর সর্বজনীন পূজামণ্ডপ, সংঘমিত্র পূজামণ্ডপসহ রাজধানীর বিভিন্ন পূজা মণ্ডপে প্রায় একই সময় ষষ্ঠী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিদিন পূজা শেষে অঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ ও সন্ধ্যায় ভোগ আরতি, ভক্তিমূলক সংগীতানুষ্ঠান, নাটক, অঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ ও সন্ধ্যায় ভোগ আরতি, আরতি প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে, পূজা উপলক্ষে বিভিন্ন মণ্ডপে প্রতিমাগুলোকে নানা সাজে সজ্জিত করা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় নির্মিত তোরণ থেকে শুরু করে মণ্ডপ পর্যন্ত সাজানো হয়েছে নানা রঙের ঝালর বাতি দিয়ে। পূজাকে কেন্দ্র করে অনেক স্থানে মেলাও জমে উঠেছে।
বিভিন্ন মণ্ডপ প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন মন্দিরে মেলাঙ্গনে পূজানুষ্ঠান ছাড়াও ভক্তিমূলক সংগীতানুষ্ঠান, অঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ ও সন্ধ্যায় ভোগ আরতি, দুঃস্থদের মাঝে বস্ত্র বিতরণ, আরতি প্রতিযোগিতা, স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন ছিল। আর এসব অনুষ্ঠানে শুধু হিন্দু নয়, নানা ধর্ম-বর্ণের মানুষ দল বেঁধে সেখানে আসছেন। উৎসবপ্রিয় বাঙালি মেতে ওঠে পূজার আনন্দে।
মণ্ডপগুলোতে বিকেল থেকে উৎসুক জনতা ও ভক্তদের ভিড় দেখা গেছে। আগামীকাল থেকে মণ্ডপগুলোতে আরও বেশি দর্শণার্থী আসবেন বলে আশা করছেন আয়োজকরা।