স্টাফ রিপোর্টার::
অব্যাহত পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণে সুনামগঞ্জে বন্যাপরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। বর্ষণের কারণে জেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার, তাহিরপুর, ও জামালগঞ্জ উপজেলার ৩৯টি ইউনিয়নের ১ লাখ ৩হাজার ৫৫০ পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় আছে। এসব এলাকার রাস্তাঘাট, হাটবাজার পাহাড়ি ঢলের পানি বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। সরকারিভাবে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা না হলেও বন্যার্ত মানুষেরা বিভিন্ন বিদ্যালয় ও উচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। এদিকে গতকাল রবিবার সদর উপজেলার ধারারগাও ভাঙ্গা সেতু পারাপারের সময় নিখোজ হওয়া শরাফত আলী, ধর্মপাশার ধারাম হাওরে মাছ ধরতে যাওয়া ননী দাস, এবং ছাতক উপজেলার বোয়ালগাও গ্রামের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র তৌহিদুজ্জামান ও ৮ বছর বয়সী আবিদের খোজ মিলেনি। নিখোজদের সবাই বন্যার পানিতে ভেসে গেছেন। এছাড়াও রবিবার বিকেলে পাহাড়ি ঢলের তোড়ে সুরমা নদীতে ১১হাজার ঘনফুট পাথর নিয়ে কিং বার্ড নামে একটি কার্গো জাহাজ ডুবে গেছে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. হযরত আলী জানিয়েছেন পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবেশ করায় সুনামগঞ্জ জেলার ৮৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গেছে। অন্যান্য বিদ্যালয় চালু থাকলেও রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় অভিভাবকরা শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে পাঠাচ্ছেন না। তাছাড়া প্রায় শতাধিক গ্রামের রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় লাখো মানুষ প্রাথমিক চিকিৎসা নিতে কমিউনিটি ক্লিনিকেও যেতে পারছেননা। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে ৫০টিরও বেশি কমিউনিটি ক্লিনিকে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ পানিতে তলিয়ে গেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণে জেলার ৩৩৩ হেক্টর জমির আমন ও বীজতলাসহ সব্জি নষ্ট হয়েছে।
সুনামগঞ্জ বন্যানিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কামরুজ্জামান বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রাথমিক দুর্যোগ সামাল দিতে বন্যাপ্লাবিত এলাকায় ১০০ মে.টন চাল বরাদ্দ এবং নগদ সাড়ে ৭ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে। ৫টি উপজেলার ৩৯টি ইউনিয়নের ১ লাখ ৩হাজার ৫৫০টি পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় আছে। তাদের কাছে ত্রাণ পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আফসর উদ্দিন বলেন, সোমবার সকালে সুরমার পানি বিপদসীমার ৮৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।