1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
জামালগঞ্জে নবাগত জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সভা সিলেটে শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসারকে অপসারণের দাবিতে গণস্বাক্ষর কার্যক্রম ২৫০ শয্যা হাসপাতালে সেবার মান বাড়ানোর দাবিতে মতবিনিময় সুনামগঞ্জে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও মিলাদ বন্যার্তদের সহায়তায় সুনামগঞ্জে শিল্পকলা একাডেমির ব্যতিক্রমী ছবি আঁকার কর্মসূচি জগন্নাথপুরে শিক্ষিকা লাঞ্চিত: দোষীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতাবিরোধী সকল কালাকানুন বাতিলের দাবি সাবেক ছাত্রলীগ নেতা পান্নার মরদেহ হস্থান্তর করলো মেঘালয় পুলিশ কাদের সিদ্দিকী বললেন: বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ আর শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ এক নয় বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বন্যায় ২০ লাখ শিশু ঝুঁকিতে : ইউনিসেফ

রোহিঙ্গাদের প্রতি কোন সহমর্মিতা নেই মিয়ানমারের সাধারণ মানুষের

  • আপডেট টাইম :: শুক্রবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১৭, ৩.২৫ পিএম
  • ৫০৪ বার পড়া হয়েছে

বিবিসি::
রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়ে মিয়ানমারের মানুষের মনোভাব কী, তা জানতে ইয়াঙ্গনে গিয়েছিলেন বিবিসি সংবাদদাতা আনবারাসান এথিরাজন। যে ঘটনা সারা বিশ্বকে নাড়া দিয়েছে, তা নিয়ে তিনি কথা বলেছেন সমাজের নানা স্তরের মানুষের সঙ্গে:

মিয়ানমারের শহর ইয়াঙ্গনে গেলে আপনি টেরই পাবেন না যে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাখাইনে মাস খানেকেরও বেশী সময় ধরে একটি বড় রকমের মানবিক বিপর্যয় ঘটে চলেছে।

পাঁচ লক্ষেরও বেশী রোহিঙ্গা মুসলমান এরই মধ্যে প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে গেছে।

এর শুরু অগাস্টের ২৫ তারিখে – বিদ্রোহীরা পুলিশ চৌকিতে হামলায় চালানোর পর যখন সেখানে সেনা অভিযান শুরু হয়।

সহিংসতা বন্ধ করা, রাখাইনে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা এবং মানবিক সাহায্য দিতে অনুমতি দেয়ার জন্য বার্মিজ কর্তৃপক্ষের ওপর চাপ বেড়েই চলছে।

কিন্তু দেশটির সবচেয়ে বড় এই শহরটিতে আপনি দেখতে পাবেন সবকিছু সুস্থির হয়ে রয়েছে। এর রাস্তাঘাট পরিষ্কার, চারপাশ সবুজে মোড়ানো আর রাস্তায় যানজট হলেও সবাই নিয়ম মেনে চলছে। ভালো পোশাক পরা নারী-পুরুষ নিজেদের কাজ নিয়ে ব্যস্ত।

এখানকার মানুষ রোহিঙ্গা শব্দটি ব্যবহার করেনা। গণমাধ্যমে এদের বলা হয় “বাঙালী মুসলমান”। কেউ কেউ এদেরকে এমনকি বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ বাঙালী অভিবাসী বলেও বর্ণনা করেন।

যখনই আমি রোহিঙ্গাদের নিয়ে কথা বলতে চেয়েছি, তখন হয় অনেকেই সরাসরি তাদের মত দিয়েছেন কিংবা কেউ কেউ আবার বিষয়টির ওপর এক ধরণের প্রলেপ দেয়ার চেষ্টা করেছেন এই বলে যে “এই দেশে কথা বলার জন্য অনেক ইস্যু রয়েছে”।

এদের একজন সিনিয়র সাংবাদিক অং লা টুন, যিনি মিয়ানমার প্রেস কাউন্সিলের ভাইস-চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, “সমস্যাটা হলো (রোহিঙ্গা) শব্দটির পেছনের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য। আমি যখন তরুণ ছিলাম, তখন আমার অনেক বাঙালী বন্ধু ছিল। তাঁরা কখনো বলতো না যে তাঁরা রোহিঙ্গা … কয়েক দশক আগে থেকে তাঁরা এই শব্দটি ব্যবহার করা শুরু করে। ”

“তাঁরা (রোহিঙ্গারা) জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর মধ্যে পড়ে না। এটিই সত্যি। ”

রোহিঙ্গা এবং অন্যান্যরা অবশ্য এই মত মানেন না।

রোহিঙ্গা সংকট যখন বিশ্বজুড়ে গণমাধ্যমে বড় শিরোনাম হয়ে চলেছে, তখন এখানকার সংবাদপত্রগুলোয় রোহিঙ্গাদের করুণ অবস্থার বর্ণনা খুব একটা চোখে পড়েনি। যে চরম দুর্দশার মধ্যে তারা বাংলাদেশে বাস করছে তারও বর্ণনা নেই বললেই চলে।

বরং সংবাদপত্রগুলোতে বড় বড় করে ছাপা হচ্ছে যে সেনাবাহিনী ঐসব হিন্দুদের গণকবর খুঁজে পেয়েছে, যারা আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি বা আরসা জঙ্গিদের হাতে খুন হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

ইয়াঙ্গন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভিন্ন কোন মেজাজের খোঁজ পাবো কিনা ভাবছিলাম, কারণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বদৌলতে বাইরের বিশ্বের সঙ্গে তাদের সংযোগ আগের প্রজন্মের লোকেদের তুলনায় বেশী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেতে এমন কিছু শিক্ষার্থীকে পাওয়া গেল যারা কথা বলতেই আগ্রহী নয়। অনেকে এমনকি নাম বলতেও চায় না।
কিন্তু যখনই আমি রাখাইন ইস্যুটি তুললাম, খুব দ্রুতই তারা সাড়া দিল।

“বাইরে থেকে এটিকে একটি ধর্মীয় বিষয় বলে দেখা হচ্ছে। কিন্তু আসলে তা নয়। এই সহিংসতা মূলত সন্ত্রাস। রাখাইন রাজ্য সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ভুল খবর পাচ্ছে,” একজন মেয়ে শিক্ষার্থী বললেন।

“বাইরে থেকে দেখে আপনি মনে করেন যে আপনিই ঠিক। কিন্তু আমাদের দিক থেকে দেখলে আমরাই ঠিক। ”

মেয়েটির দুজন বন্ধুও একই রকম মত দিলেন।

কয়েকদিন পরে আমি একটি স্মরণ সভায় গেলাম, যেটির আয়োজন করা হয়েছিল ২০০৭ সালের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলনের দশম বার্ষিকী উপলক্ষে।

ঐ আন্দোলনে হাজার হাজার বৌদ্ধ ভিক্ষু যোগ দিয়েছিলেন, যার কারণে এর নাম দেয়া হয়েছিল “স্যাফরন রেভোল্যুশন”।

গেরুয়া বসন পরা ভিক্ষুর সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার ছবি তখন পুরো দুনিয়ার নজর কেড়েছিল।

দক্ষিণ ইয়াঙ্গনের একটি মঠে ঐ অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়। বৌদ্ধ ভিক্ষু, গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলনকারী আর শ্রমিক সংগঠনের সদস্যরা বড় সংখ্যায় অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এদের অনেকই মানবাধিকার আর গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন, জেল খেটেছেন।

আমার আশা ছিল রোহিঙ্গা ইস্যুতে তাদের কাছ থেকে ভিন্ন কিছু শুনবো।

স্যাফরন রেভোল্যুশনের একজন অগ্রণী ছিলেন শোয়ে তুনতে সায়ার ট। আমি তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে অল্প দিনের একটি গণতান্ত্রিক দেশ মিয়ানমারের কি উচিত নয় রোহিঙ্গা সহ সব সম্প্রদায়ের সঙ্গে একই রকম আচরণ করা?

তাঁর উত্তর ছিল: “গণতন্ত্রে সবাই সমান, একমাত্র সন্ত্রাসীরা ছাড়া”।

“তারা যদি সন্ত্রাস করে, তবে পুরো বিশ্বের উচিত হবে সন্ত্রাসকে ধ্বংস করা। তা না হলে তারা আমাদের প্রজন্মকে ধ্বংস করবে। ”
কোন সন্দেহ নেই যে রোহিঙ্গা মুসলমান ইস্যুর কারণে সংখ্যাগরিষ্ঠ বর্মী জনগোষ্ঠীর মধ্যে অং সান সু চি’র জনপ্রিয়তা বেড়েছে, যদিও এ বিষয়ে তাঁর নীরবতার কারণে পুরো বিশ্ব তাঁর প্রতি নিন্দায় মুখর হয়েছে।

ইয়াঙ্গনের সিটি হলের বাইরে তাঁর সমর্থনে সমাবেশ হয়েছে।

জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চলমান সহিংসতাকে “জাতিগত নির্মূল” অভিযান বলে বর্ণনা করেছেন। তবে মিয়ানমার সরকার এই অভিযোগ নাকচ করেছে।

বিপুল সংখ্যায় দেশত্যাগের ঘটনা মিয়ানমারে আগেও ঘটেছে।

১৯৬০-এর দশকে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পরপরই হাজার হাজার ভারতীয় বংশোদ্ভূত মানুষকে বার্মা ছাড়তে আদেশ দেয়া হয়েছিল।

ঐসব ভারতীয়রা বংশ পরম্পরায় বার্মায় শতশত বছর ধরে বাস করছিল। এদের অনেককেই ১৯ ও ২০ শতকে ঔপনিবেশিক শাসকরা বার্মায় নিয়ে এসেছিল, যখন দেশটি ব্রিটিশ ভারতের অংশ ছিল।

ধারনা করা হয়, তিন লক্ষেরও বেশী মানুষ সে সময় বার্মা ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল, যাদের বাড়িঘর আর সম্পত্তি পরে জাতীয়করণ করা হয়। এই বার্মিজ ভারতীয় শরণার্থীরা শেষ পর্যন্ত ভারতে আশ্রয় পেয়েছিলেন।

আমি ভাবছিলাম যে ইয়াঙ্গন আর বার্মার মূলধারার গণমাধ্যম রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপরে চলা সহিংসতার বিষয়টি অস্বীকার করার মত পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে কি-না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জ্যেষ্ঠ সম্পাদক ও সাবেক রাজবন্দী আমাকে এর উত্তর দিয়েছেন।

তিনি বলেন, “সবাই ভয়ের মধ্যে আছে, আর সবাই-ই বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চায়। প্রথমত, সেখানে (রাখাইনে) নিরাপত্তার সমস্যা রয়েছে। তাই বেশীরভাগ খবর প্রকাশ হচ্ছে সরকারী প্রেস বিজ্ঞপ্তির বরাতে। ”

তিনি আরও বলেন যে এক ধরণের একটি চাপও রয়েছে।

তাঁর মতে, আপনি যদি মূলধারার মতামতের বাইরে যান, “তাহলে এমনকি আপনার আত্মীয় আর বন্ধুরাও আপনাকে অপছন্দ করবে”।

– বিবিসি বাংলা

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!