স্টাফ রিপোর্টার::
সুনামগঞ্জে পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণে সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়রাবাজার, জামালগঞ্জ ও তাহিরপুরে বন্যাপরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে। সোমবার বিকেলে নলুয়ার হাওরে নৌকা ডুবে বাহার উদ্দিন নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। ধর্মপাশা উপজেলায় বানের পানিতে ডুবে মারা গেছে ৭ বছরের মাদ্রাসাছাত্র চান মিয়া। সোমবার বিকেলে ছাতকে নাঈম আহমদ নামের আরেক যুবক সুরমা নদীতে নিখোজ রয়েছে। তার সন্ধানও পাওয়া যায়নি। তবে রবিবার এ উপজেলার ধারাম হাওরে নিখোজ জেলে ননী দাস সদর উপজেলার ধারারগাও ভাঙ্গা সেতু পাড়ি দিতে গিয়ে নিখোজ যুবক শরাপত আলীর লাশ উদ্ধার হয়েছে। এদিকে গত এক সপ্তাহে বন্যার পানিতে দু’শিশুসহ ছাতকে নিখোজ ৪ ব্যক্তির মধ্যে বটেরখাল নদী থেকে পারভেজ আলম (১১) নামের এক মাদ্রাসা ছাত্রকে উদ্ধার করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণে ১৬২টি প্রাথমিক, ৩৩টি নি¤œমাধ্যমিকসহ প্রায় ১৯৫টি বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। তাছাড়া টানা বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে ১৬০০ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে জেলার ৫ শতাধিক পুকুর ডুবে গেছে। পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণে ৬ উপজেলার প্রায় ৫০ কি.মি. পাকা সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে প্রশাসন ১লাখ ৩হাজার মানুষ পানিবন্দি আছে বললেও স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন ৫ উপজেলায় অন্তত ৩লাখ মানুষ পানিবন্দি। এসব এলাকায় আশ্রয় কেন্দ্র খোলা না থাকায় এবং পর্যাপ্ত ত্রাণ না থাকায় মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে। স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা আশ্রয় কেন্দ্র খোলা ও পর্যাপ্ত ত্রান পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন।
জেলা প্রশাসনের বন্যানিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বলেন, ৫ উপজেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণ, নগদ টাকা, শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানির ট্যাবলেটসহ জরুরি উপকরণ পাঠানো হয়েছে। বন্যাপরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রশাসনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে তিনি জানান।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আফসর উদ্দিন জানান, পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণে সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৮৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ঢলের পানি এখন নি¤œাঞ্চলে গিয়ে চাপ ফেলছে বলে তিনি জানান।