মো. মুশফিকুর রহমান::
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোহনপুর গ্রামের জনমঙ্গল সমিতির মার্ডার হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত দ্রুতবিচার মামলায় জামায়াত নেতা মুজিবুর রহমানসহ তিন আসামীকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। ২০১৭ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি সিলেট দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহরিয়ার কবিরের আদালতে আসামিরা হাজির হয়ে জামিন চাইলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। আসামিরা হলেন, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোহনপুর গ্রামের মুজিবুর রহমান, নূরুল আমিন ও কামাল। এই মামলায় অপর দণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামী মো. শাহাঙ্গীর আলম, মো. জাহাঙ্গীর আলম, জহুরুল ইসলাম, আমিরুল ইসলাম এখনো পলাতক রয়েছে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ২০১৬ সালের ৫ ডিসেম্বর রাত ১০টার সময় জনমঙ্গল সমিতির পদ পদবী নিয়ে উপরোক্ত আসামীরা তাজুল ইসলামের উপর হামলা চালায়। এ সময় তাদের উদ্ধারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা তাদের উপরও হামলা চালায়। এ ঘটনায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধলে সংঘর্ষে আওয়ামী লীগ কর্মী আশিক মিয়া গুরুতর আহত হন। তাকে তাৎক্ষণিক অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হলে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। সংঘর্ষে আরো ৫জন আহতকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় মৃত আসিক মিয়ার পিতা খালিক মিয়া বাদী হয়ে সুনামগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামিরা হলেন, সুনামগঞ্জ পৌর সভার ৪নং ওয়ার্ডের জামায়াতে ইসলামের সভাপতি মুজিবুর রহমানসহ ৭ জন। তাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল সিলেটে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে বাদিপক্ষ হাইকোর্টে আপিল করলে আদালত খুনের ঘটনায় ৪ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ- প্রদান করেন। এর মধ্যে আসামি মুজিবুর রহমান, মো. শাহাঙ্গীর আলম, ও জাহাঙ্গীর আলমকে যাবজ্জীবন দণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৩ মাসের জেল দেয়া হয়। এবং শাহাঙ্গীর আলম, জাহাঙ্গীর আলম, জহুরুল ইসলাম, আমিরুল ইসলামকে ১০ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেন। এর প্রেক্ষিতে উল্লেখিত ৩জনকে আদালতে হাজির করা হলে তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করেন বিচারক। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে শাহাঙ্গীর আলম, জাহাঙ্গীর আলম, জহুরুল ইসলাম, আমিরুল ইসলাম পলাতক রয়েছে। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের মধ্যে মুজিবুর রহমান, নূরুল আমিন, কামাল গতকাল দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে হাজির হন। আর ১০ বছর সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের মধ্যে নূরুল আমিন, কামাল ট্রাইব্যুনালে হাজির হন। বিজ্ঞ বিচারক তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন। আদালতের আদেশ অনুযায়ী তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
২০১৭ সালের ১৩ নভেম্বর রোজ সোমবার সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে রায় ঘোষণা করা হয়।