স্টাফ রিপোর্টার::
মুক্তিযুদ্ধের গেরিলা বাহিনী দাসপার্টির কমান্ডার ও সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের যুদ্ধকালীন সময়ের ছাত্র শহীদ জগৎজ্যোতির ৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। সুনামগঞ্জ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাঠাগার সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে গিয়ে শহীদ সমাধীতে বৃহষ্পতিবার সকালে পুস্পার্ঘ্য অর্পন করে। এছাড়াও দিবসটি সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজও পৃথকভাবে পালন করেছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ এ উপলক্ষে শহীদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ অর্পন ও আলোচনাসভার আয়োজন করে।
উল্লেখ্য ২০১১ সনে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে গঠিত ‘গিয়াস তালেব জগৎজ্যোতি স্মৃতি পরিষদ’ (পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি পরিষদ) শহীদ জগৎজ্যোতিসহ মুক্তিযুদ্ধে শহীদ কলেজের চার ছাত্র স্মরণে সংগঠন গঠন করে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের স্মরণ করে। সংগঠনটি টানা ২০১৬ পর্যন্ত শহীদদের মৃত্যবার্ষিকী পালন করে কলেজ কর্তৃপক্ষ ও জগৎজ্যোতি পাঠাগারকে নিয়মিত শহীদ দিবস পালনের আহ্বান জানিয়ে আসছিল।
বৃহষ্পতিবার শহীদ জগৎজ্যোতি পাঠাগার কর্তৃক শহীদ সমাধীতে আয়োজিত পুষ্পার্ঘ প্রদান ও আলোচনাসভায় উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. সাবিরুল ইসলাম, সরকারি কলেজ অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার, পৌর মেয়র আয়ূব বখত জগলুল, মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি পরিষদের আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান, মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা মালেক হুসেন পীর, সুনামকণ্ঠ সম্পাদক বিজন সেনরায়, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ডা. সালেহ আহমদ আলমগীর, শহীদ জগৎজ্যোতি পাঠাগারের সাধারণ সম্পাদক ও মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি পরিষদের উপদেষ্টা এডভোকেট সালেহ আহমদ, মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি পরিষদের উপদেষ্ঠা দেওয়ান ইমদাদ রেজা চৌধুরী, শ্রমিক লীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম, আ.লীগ নেতা হায়দার চৌধুরী লিটন, সাংবাদিক পঙ্কজ দে, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, ব্যবসায়ী রাজীব রায়, প্রভাষক তারেক প্রমুখ।
উল্লেখ্য ১৯৭১ সনের এই দিনে দাস পার্টির কমান্ডার শহীদ জগৎজ্যোতি দাস ভোড়ামোহনা যুদ্ধক্ষেত্রে রাজাকার বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে শহীদ হন। পরবর্তীতে তার মৃতদেহ খুটির সঙ্গে বেধে নির্যাতন করে সেই ছবি দুষ্কৃতিকারী হিসেবে প্রচার করে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী। তার বীরত্বগাঁথা স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র থেকে প্রচারিত হতো। এতে মুক্তিযোদ্ধারা উজ্জীবিত হতেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে তাকে সর্বোচ্চ খেতাব ‘বীরশ্রেষ্ট’ হিসেবে ঘোষিত করা হলেও সেই খেতাব তার কপালে জুটেনি।
মৃত্যুবার্ষিকী অনুষ্ঠানে বক্তারা তার স্মৃতিরক্ষ করে তার বীরত্বগাথা নতুন প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান।