বিশেষ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় অনুপস্থিতির হার এবারও বেশি। পরিসংখ্যানে গত বছরের তুলনায় এবার অনুপস্থিতির হার বেশি লক্ষ্য করা গেছে। তবে ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীদের অনুপস্থিতির হার বেশি। এবার ছাত্র ও ছাত্রী মিলিয়ে সর্বমোট ৩ হাজার ৬২৬ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিতি ছিল। ইবতেদায়িতে অনুপস্থিত ছিল ৫৭৯ জন। বিুপল শিক্ষার্থীর অনুপস্থিতির কারণকে হাওরের ফসলহানীর প্রভাব হিসেবে দেখছেন প্রাথমিক বিভাগের সংশ্লিষ্টরা।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জেলায় প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় ৫৫ হাজার ৭৫৯ পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণের জন্য রেজিস্ট্রেশন করে। এর মধ্যে ছাত্র ২৪ হাজার ৯৪৯ জন এবং ছাত্রী ৩০ হাজার ৯১০ জন। গতকাল রবিবার প্রথম দিনের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ছাত্র ২৩ হাজার ১৪৩ এবং ছাত্রী ২৮ হাজার ৯৫৮ জন। অনুপস্থিতির হার ছাত্র ১ হাজার ৭৮৭ এবং ছাত্রী ১ হাজার ৮৩৯ জন। গতবার সর্বমোট অনুপস্থিতির সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৫ জন।
এদিকে সমাপনী পরীক্ষায় অনুপস্থিতিত শিক্ষার্থীদের ঝড়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন হাওরের ফসলহানীর কারণে এবার অনেক শিক্ষার্থী তাদের পরিবারের সঙ্গে কর্মসংস্থানের জন্য অন্যত্র চলে গেছে। অনুপস্থিতির পরিসংখ্যানে দেখা গেছে হাওর উপজেলার শিক্ষার্থীদের আধিক্য বেশি।
সূত্র জানায় সদর উপজেলায় ৩৮৪ জন, দোয়ারাবাজার উপজেলায় ৪২৫ জন, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় ২২৪ জন, ছাতকে ৫১১ জন, তহিরপুরে ৩০১ জন, জামালগঞ্জে ২১৮ জন, ধর্মপাশায় ৪৪০ জন, শাল্লায় ২৬৪ জন, দিরাইয়ে ৩৫৭ জন, জগন্নাথপুরে ২৩৫ জন এবং দক্ষিণ সুনামগঞ্জে ২৬৭ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল। অনুপস্থিতির হার সবচেয়ে বেশি জগন্নাথপুরে ৯৫.৪৯২। সবচেয়ে কম অনুপস্থিতির হার সবচেয়ে কম শাল্লা উপজেলায় ৮৮.৭৯।
কৃষক নেতা অমরচাঁদ দাস বলেন, হাওরের ফসলহানীর প্রভাব হাওরের শিক্ষাব্যবস্থাসহ সব দিকেই পড়েছে। তাই প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় এত অনুপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, ফসল হারিয়ে আমার এলাকার অনেক কৃষক সপরিবারে কাজের জন্য অন্যত্র চলে গেছে। তাদের ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখা অনিশ্চিয়তার মুখে পড়েছে।
ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাজ্জাদ হোসাইন বলেন, এবছর পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণে হাওরের ফসলহানীর কারণে অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। একমাত্র ফসল হারিয়ে তাদের অনেকেই সপরিবারে অন্যত্র চলে গেছে। যে কারণে গতবারের চেয়ে এবার অনুপস্থিতির হার বেশি। তিনি বলেন, তারা যাতে ঝড়ে না যায় সেজন্য বিশেষ ব্যবস্থায় বিদ্যালয়ে তাদেরকে ফিরিয়ে আনা হবে।