বিশেষ প্রতিনিধি::
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের প্রচেষ্ঠায় বাল্যবিয়ের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেয়েছে সপ্তম শ্রেণি পড়–য়া পৌর এলাকার এক শিক্ষার্থী। বুধবার বিকেলে বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে ঘটস্থলে উপস্থিত হয়ে বিয়েটি ভেঙ্গে দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাইজার মোহাম্মদ ফারাবী। শুধু বিয়েই ভেঙ্গে দেননি বর, কনের পিতা, বরের দুলাভাই এবং উকিল বাপ সহ চারজনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন। এ ঘটনার পর কাজী পলাতক রয়েছে। কাজীর লাইসেন্স বাতিলের জন্য জেলা রেজিস্টারকে সাজার আদেশে নির্দেশ দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
উপজেলা প্রশাসন ও প্রত্যক্ষদর্শী এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দুপুরে সুনামগঞ্জ পৌরসভার জলিলপুর গ্রামে দোয়ারাবাজার উপজেলার দোহালিয়া ইউনিয়নের রাজনপুর গ্রামের মৃত ফখর উদ্দিনের পুত্র জামাল উদ্দিন (২৫) এর সঙ্গে জলিলুরপুর গ্রামের শামসুল হক পীরের কন্যা ছায়েদা বেগম (১৪) এর সঙ্গে তার বিয়ের দিন ধার্য্য হয়। কাজী ফাউজুল করিম বিয়ের কাবিন রেজিষ্টার প্রায় সম্পন্ন করার আগেই উপজেলা নির্বাহী অফিসার হানা দিয়ে বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন ১৯২৯ (ধারা ১২) মোতাবেক বিয়েটি বাতিল করে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সাজা দেন। ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে তিনি বর জামাল উদ্দিনকে ১ মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড, কনের পিতা শামসুল হক পীরকে ১ মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড, বরের ভগ্নিপতি জসীম উদ্দিনকে বাল্যবিবাহে সহযোগিতা করায় ১ মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং বাল্য বিবাহের কাবিন রেজিষ্টারীতে স্বাক্ষ্য প্রদান করায় উকিল বাপ রাজনপুর গ্রামের আব্দুুল মছব্বিরকে ১৫ দিন বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন।
২০০২ সালে জন্ম নেওয়া সায়েদা ২০১৩ সালে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নেয়। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাইজার মো. ফারাবী বলেন, একজন মেয়ে ফোনে আমাকে বাল্যবিয়ের বিষয়টি অবগত করার পর আমি ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে হাতে নাতে প্রমাণ পেয়ে বাল্যবিয়ে বন্ধ করে বরসহ চারজনকে বিভিন্ন মেয়াদে দ- দিয়েছি। পাশাপাশি কাজীর লাইসেন্স বাতিলের জন্য সাজার আদেশে উল্লেখ করেছি।