স্টাফ রিপোর্টার::
১৯৭১ সনের ৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর নাগপাশ থেকে মুক্ত হয় সুনামগঞ্জ। পালানোর পথ বাকি রেখে দামাল মুক্তিবাহিনী তিনদিক থেকে অতর্কিত আক্রমণ করে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর উর। ৫ ডিসেম্বর রাতে সুনামগঞ্জকে শত্রুমুক্ত করতে বালাট সাব সেক্টরের কমান্ডার মেজর মোতালিব, ক্যাপ্টেন যাদব ও ক্যাপ্টেন রঘুনাথ ভাটনগর বিশেষ পরিকল্পনা নিয়ে দখলদার বাহিনীর উপর চরম আঘাত হানতে চারটি কোম্পানী নিয়ে যৌথ আক্রমণে নামেন।
‘এ’ কোম্পানিকে যোগীরগাঁও, ‘বি’ কোম্পানিকে হালুয়ারঘাট, সি কোম্পানিকে হাছননগর, ডি কোম্পানিকে ভাদেরটেক লালপুর থেকে আক্রমণের নির্দেশ দেওয়া হয়। তাছাড়া এফ কোম্পানিকে বেরীগাঁও-কৃষ্ণনগরে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পয়ন্ত অবস্থানের নির্দেশ দেওয়া হয়। শুধু দক্ষিণ দিক উন্মুক্ত রেখে যৌথ আক্রমণে নামেন মুক্তিযোদ্ধারা। কোম্পানিগুলোকে সার্বিক রসদ সরবরাহের দায়িত্ব দেওয়া হয় এডিএম কোম্পানিকে। এছাড়াও বনগাঁও সদর দফতরে অতিরিক্ত এক প্লাটুন মুক্তিযোদ্ধা প্রস্তুত ছিলেন যে কোন পরিস্থিতি শামাল দিতে।
মুক্তিযোদ্ধাদের অতর্কিত ও যৌথ আক্রমণের খবরে ভীতসন্ত্রস্থ পাকিস্তানী হানাদারবাহিনী শহর ছেড়ে পালাতে শুরু করে। ৬ ডিসেম্বর ভোরেই মুক্তিযোদ্ধাদের ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে রাস্তায় নেমে আসে দামাল মুক্তিসেনাদের অভিনন্দন জানায়। দীর্ঘদিন অবরুদ্ধ থাকার পর হাজার হাজার নারী পুরুষ রাস্তায় নেমে এসে মুক্তির উল্লাসে মেতে ওঠেন। এভাবেই শত্রুমুক্ত হয় সুনামগঞ্জ। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী পালানোর সময় সুনামগঞ্জ পিটিআই টর্চার সেলে কয়েকজনকে হত্যা করে, কয়েকজনকে মুুক্তিযোদ্ধাকে ধরে নিয়ে আহসানমারা সেতুর পাশে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করে।
মুক্ত দিবস উপলক্ষে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, শহীদ গিয়াস তালেব জগৎজ্যোতি স্মৃতি পরিষদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ, খেলাঘরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।