স্টাফ রিপোর্টার::
প্রথম বারের মতো উৎসবমুখর পরিবেশে হাওর-ভাটির কৃষকদের স্বার্থরক্ষায় গঠিত ‘হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলন’র প্রথম কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হয়েছে। সুনামগঞ্জের শহিদ জগৎজ্যোতি পাঠাগার মিলনায়তনে শনিবার দিনব্যাপী কাউন্সিলের মাধ্যমে উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে ৯ উপজেলার নেতৃবৃন্দ অংশ নেন। দ্বিতীয় অধিবেশনে কাউন্সিলরদের মতামতের ভিত্তিতে সভাপতি, সিনিয়র সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন যথাক্রমে অ্যাডভোকেট মুক্তিযোদ্ধা বজলুল মজিদ চৌধুরী খসরু, মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান এবং বিজন সেনরায়। সামাজিক এই আন্দোলনটি প্রতিষ্ঠার পর এটিই প্রথম সম্মেলন। সম্মেলনে ৯ উপজেলার কাউন্সিলরসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ পর্যবেক্ষক হিসেবে অংশ নেন।
শনিবার সকাল ১১টায় সুনামগঞ্জ শহরের জগৎজ্যোতি মিলনায়তনে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে জাতীয় ও সাংগঠনিক পতাকা উত্তোলন করে সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধন শেষে এক বর্নাল্য র্যালি বের হয়। র্যালিটি শহর প্রদক্ষিণ শেষে পাঠাগার মিলনায়তনে এসে আলোচনাসভায় মিলিত হয়। মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট বজলুল মজিদ চৌধুরী খসরুর সভাপতিত্বে ও বিজন সেন রায় এবং সালেহীন চৌধুরীর সঞ্চালনায় প্রথম অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন, নারীনেত্রী কমরেড শীলা রায়, মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ চিত্তরঞ্জন তালুকদার, অ্যাডভোকেট স্বপন কুমার দাস রায় প্রমুখ। এছাড়াও উপজেলা প্রতিনিধিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ আল আজাদ, সৈয়দ সবুর আলী, পিসি দাস, এমদাদুল হক খান, অমর চাদ দাস, মুহিবুর রহমান প্রমুখ। বিদায়ী সদস্যসচিব বিন্দু তালুকদার সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করেন। তাছাড়া ৯ উপজেলা থেকে আগত নেতৃবৃন্দও বক্তব্য রাখেন।
দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয় দুপুর আড়াইটায়। সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই অধিবেশনে কেন্দ্রীয় ও উপজেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ মতামত পেশ করেন। দীর্ঘক্ষণ আলোচনা শেষে কাউন্সিলরদের মাধ্যমে সভাপতি হিসেবে এডভোকেট মুক্তিযোদ্ধা বজলুল মজিদ চৌধুরী খসরু, সিনিয়র সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান এবং সাধারণ সম্পাদক পদে সাংবাদিক বিজন সেনরায়ের নাম ঘোষণা করা হয়। এই তিনজন পরবর্তীতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করবেন।
উল্লেখ্য গত এপ্রিল মাসে সুনামগঞ্জের সকল হাওরের বোরো ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে ফসল তলিয়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে এই সামাজিক আন্দোলন গড়ে ওঠে। আন্দোলনে মাঠ পর্যায়ের কৃষকরা সম্পৃক্ত হন। তারা পানি উন্নয়ন বোর্ড ঘেরাও, সড়ক অবরোধসহ নানা কর্মসূচি পালন করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে সহায়তাদানের পাশাপাশি দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। পাশাপাশি সংগঠনটি হাওরাঞ্চলের নদ নদী খনন, কৃষকদের নেতৃত্বে ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ, কৃষকদের প্রণোদনা প্রদানসহ নানা প্রস্তাব পেশ করে। সংগঠনটি জাতীয়ভাবে আলোচিত হয়।