বিশেষ প্রতিনিধি::
সম্প্রতি সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগে নতুন মেরুকরণ নিয়ে আসন্ন জেলা কমিটিতে বাদপড়ার আশঙ্কায় থাকা দলের ত্যাগী ও নিবেদিতপ্রাণ কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করছেন। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন হঠাৎ করে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কেন্দ্রের কাছে পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি দিয়েছেন এই খবর পাওয়ার পরই বঞ্চিতরা বাদ পড়ার আশঙ্কা করছেন। বঞ্চিতরা সংগঠিত হয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে এ বিষয়ে দেখা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। জানা গেছে বাদ পড়ার আশঙ্কায় থাকা এক সময়ের তারকা নেতারা তাদের প্রোফাইলসহ হাই কমান্ডের সঙ্গে কথা বলবেন।
জানা গেছে প্রায় তিন বছর আগে সম্মেলনে সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন। সভাপতি হিসেবে তিনি মতিউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এনামুল কবির ইমনের নাম ঘোষণার পর থেকেই আলাদা আলাদা ভাবে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন তারা। গত বছরের শেষ দিকে দুই নেতা নিজেদের মধ্যে বিরোধ কমিয়ে এনে একই মঞ্চে থেকে দলীয় কার্যক্রম চালাচ্ছেন। তবে এর আগে দু’জনই কেন্দ্রের কাছে নিজ নিজ বলয়ের নেতাকর্মীদের নাম আলাদাভাবে বায়োডাটাসহ জমা দিয়েছিলেন। সম্প্রতি জাতীয় নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে দুই নেতার মধ্যে বিরোধ কমে আসায় তারা গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা আহমদ হোসেনের কাছে ঐক্যবদ্ধ হয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা দেন। জানা গেছে পূর্ণাঙ্গ ওই কমিটিতে এক সময়ের ছাত্র লীগের তারকা নেতাসহ দুঃসময়ে ত্যাগী ও নিবেদিতপ্রান নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে একশ্রেণির সুবিধাভোগী নেতাদের গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। নিজেদের ঐক্য বজায় রাখতেই দুই নেতাই ত্যাগী ও নিবেদিতদের বাদ দিতে বাধ্য হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। জানা গেছে, গুরুত্বপূর্ণ অনেক পদে যাদের নাম গেছে দুঃসময়ে দলে তাদের কোন ভূমিকা না থাকলেও তাদেরকে গুরুত্বপূর্ণ পদ দিয়ে অগুরুত্ব পদে ত্যাগী, নিবেদিতপ্রাণ ও সিনিয়র নেতাদের নাম দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়টি আঁচ করতে পেরে মর্মাহত হন বঞ্চিত নেতারা। তারা মনে মনে ক্ষুব্দও হন।
জানা গেছে দলের দুঃসময়ে এই নেতারাই রাজপথে সোচ্চার ছিলেন। এখনো তারা নিয়মিত কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকেন। দল ক্ষমতায় থাকলেও তারা সবধরনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এখন সাংগঠনিকভাবে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।
জেলা কৃষক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক করুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, রাজনীতিতে আমাদের চাওয়া পাওয়া নেই। রাজপথে ছিলাম। রাজপথে আছি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ বুকে ধারণ করে জননেত্রীর পক্ষে আজীবন থাকব। কমিটিতে আমাদের স্থান না হলেও দলের একজন আদর্শ ও সক্রিয় কর্মী হিসেবে কখনো শেখ হাসিনার পাশ থেকেসরে যাবনা।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন গত সপ্তাহে এই প্রতিবেদককে কমিটি জমাদানের কথা স্বীকার করে বলেন, আমার যৌথ স্বাক্ষরে কমিটি জমা দিয়েছি। তবে কিছু পদ এখনো অমিমাংসিত রয়ে গেছে। এই সিদ্ধান্ত নিবে হাই কমান্ড। তবে আমরা সব কিছু বিবেচনা করেই যোগ্যদের কমিটিতে রাখার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি।