ডেক্স রিপোর্ট::
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কথাসাহিত্যিক জাফর ইকবাল বলেছেন, ‘এখানেও একজন হয়তো আছে। যে ভাবছে, পারলাম না আরেকবার অ্যাটেম নিতে হবে। তার উদ্দেশে বলছি, আমার সঙ্গে কথা বলতে আসো। অস্ত্রটা বাসায় রেখে আসো। আমি শুনতে চাই, কেন তোমার এত কষ্ট।’
বুধবার (১৪ মার্চ) বিকালে সিলেটে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্বদ্যিালয় ক্যাম্পাসের মুক্তমঞ্চে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘তোমরা বিশ্বাস করবে কি না জানি না যে ছেলেটি আমাকে মেরেছে তার জন্য আমার কোন রাগ নেই, অভিমান নেই। মায়া আছে, করুণা আছে।’
জাফর ইকবাল তার শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমরা দেখিয়েছ ম্যাচিউরড ছেলে মেয়ে হলে কী করতে হয়। এখানেই বসেছিলাম আমরা, যখন আমাকে আঘাত করা হয়েছিল। তার জন্য আমার বিন্দুমাত্র রাগ নাই। মায়া আছে, করুণা আছে। কেন এটা করেছে? বেহেশতে যাবে বলে। এটা তার মাথায় ঢুকানো হয়েছে। একজন মানুষ কত দুঃখী হতে পারে যার মনে হয়, একজনকে মেরে বেহেশতে যাবে। পৃথিবীতে তাকিয়ে দেখো। কী সুন্দর। এ সুন্দর পৃথিবীর কিছুই সে দেখে না, জানে না। কেবল জানে একজনকে মারলে বেহেশতে যাবো।’
তিনি বলেন, ‘আমাকে নাস্তিক বলো? আমি কোরান শরিফ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নিখুতঁভাবে পড়েছি। সেখানে একটি আয়াত আছে, তুমি যদি একজনকে মারো, তুমি সারা মানবজাতিকে হত্যা করছো। কেমন করে তারা এত বড় দায়িত্ব ঘাড়ে নেয়। কে তোমাদের এসব বুঝিয়েছে। যারা বুঝিয়েছে তারা নিশ্চিন্তে আছে। আর তুমি, যে কিনা রিমাণ্ডে আছো, তোমার মা, ভাই, বাবা রিমাণ্ডে। যারা এসব কথা বলো, তারা আসো আমার সঙ্গে কথা বলো।’
২০১৫ সালে শিক্ষার্থীদের হাতে শিক্ষক লাঞ্চনার কথা উল্ল্যেখ করে তিনি বলেন,’তোমরা ম্যাচিউরড। আমি জানি তোমরা আর কোন শিক্ষকের সাথে বেয়াদবি করবে না, হাত তুলবে না। আমি তোমাদের সাথে ছিলাম এখনও আছি। আমাকে তোমাদের সাথে পাবে। ‘
আজ দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটে অধ্যাপক জাফর ইকবালকে বহনকারী নভোএয়ারের একটি বিমান সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। স্ত্রী ইয়াসমিন হকও তার সঙ্গে ছিলেন। সেখানে আগে থেকেই অপেক্ষায় থাকা শাবিপ্রবির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অধ্যাপক জাফর ইকবালকে স্বাগত জানান। এরপর তাকে তার ক্যাম্পাসের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় তার সাথে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ছিলেন।