1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০০ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

সুনামগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংস্কার ও সম্প্রসারণ চান মুক্তিযোদ্ধা জনতা

  • আপডেট টাইম :: সোমবার, ৮ আগস্ট, ২০১৬, ২.৪৭ পিএম
  • ৭০৪ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি::
বিস্তৃতি ও সংস্কারের সুযোগ থাকার পরও সুনামগঞ্জে অবহেলা অনাদরে পড়ে থাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার অন্যত্র সড়ানোর চেষ্টা করছে বিভিন্ন মহল। তবে যখনই অন্যত্র সড়ানোর চেষ্টা হয়েছে তখনই ক্ষোভে রাজপথে আগুন হয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা জনতা। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার স্থানান্তরের প্রতিবাদে তারা নানা কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন।
গত দুই বছর ধরে মুুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বিভিন্ন পেশাজীবি সংগঠনের নেতাকর্মীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার বর্ধিতকরণ ও সংস্কারের দাবির পাশাপাশি অন্যত্র সড়ানোর প্রতিবাদ করে আসছেন। সম্প্রতি জেলা পরিষদের উদ্যোগে সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয় খেলার মাঠে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করা হলে বিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্দ হয়ে ওঠেন। তারা শুধু তাদের মাঠরক্ষার আন্দোলন করলেও এই আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার যথাস্থানে বর্ধিতকরণ ও সংস্কার আন্দোলনের নেতারা।
মুক্তিযোদ্ধারা জানান, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়েই সুনামগঞ্জ মুক্তদিবসের পরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ করেন মুক্তিযোদ্ধারা। বিশিষ্ট সাংবাদিক ও হাওরাঞ্চলেরর মুক্তিযুদ্ধের আঞ্চলিক অধিনায়ক সালেহ চৌধুরী এর নক্সা করে দেন। বালাট সাব সেক্টরের অধিনায়ক মেজর মোতালিব ঐতিহ্যবাহী এই শহীদ মিনারটি উদ্বোধন করেন। ১৯৭১ সনের ১৬ ডিসেম্বর প্রথম বিজয় দিবসে শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধা জানান মুক্তিযোদ্ধা জনতা। এভাবেই সুনামগঞ্জ ডিএস রোডের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি ঐতিহ্যের অংশ হয়ে যায়। পরবর্তীতে জাতীয় দিবস গুলোতে শহীদদের স্মরণসহ সামাজিক বিভিন্ন নীপিড়ন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জনতার প্লাটফরমে পরিণত হয় শহীদ মিনারটি।
জানা গেছে চারদলীয় জোট সরকার প্রথমে সুনামগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি অন্যত্র স্থানান্তরের উদ্যোগ নিয়ে নতুন কোর্ট চত্বরে নিয়ে যায়। এর পর থেকেই অবহেলা শুরু হয় ঐতিহ্যের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের প্রতি। এ সময় প্রগতিশীল ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সংগঠন গুলো প্রতিবাদ করে তারা জাতীয় দিবসগুলোতে পুরাতন শহীদ মিনারেই শহীদদের শ্রদ্ধা জানায়। যা এখন পর্যন্ত বলবৎ রয়েছে।
জানা গেছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সম্প্রসারণ ও সংস্কারের জোড়ালো দাবি উঠলে ২০১৩ সনে মুক্তিযোদ্ধা জনতা গণজাগরণ মঞ্চের নেতৃত্বে শহীদ মিনারের ডানের দেওয়াল ভেঙ্গে শহীদ মিনার সম্প্রসারণ করণে নিজেরাই উদ্যোগ নেন। ৩-৪ বছর ধরে শহীদ মিনার অন্যত্র সড়ানোর ষড়যন্ত্র শুরু হয়। জুবিলী বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ, এসসি গার্লস হাইস্কুলের পুকুর, জেলা পরিষদের কালিবাড়িস্থ পুকুরসহ নানা স্থানে কতিপয় প্রগতিশীল নেতাদের দিয়ে প্রস্থাবনা পেশ করে। এ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের জনতা এবং জেলা প্রশাসন দুটি পৃথক কমিটি গঠন করে। এসব কমিটিকে পুরাতন শহীদ মিনারের স্থান জঠিলতা দূরীকরণে উদ্যোগ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু কোন কমিটিই আইনী জটিলতা নিরসনে দৃশ্যমান উদ্যোগ নেয়নি। ফলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ভূমিনিরসন জঠিলতা দূর করা সম্ভব হয়নি।
নির্ধারিত স্থানে শহীদ মিনার সম্প্রসারণের বদলে কয়েক বছর ধরে যারা অন্যত্র শহীদ মিনার সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে তখনই রূখে দাড়িয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের জনতা। তাদের এক দফা এক দাবি-নির্ধারিত স্থানেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সম্প্রসারণ ও সংস্কার করতে হবে। গত বছর এপ্রিল মাসে সুনামগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও পৌরসভায় সুধীজনের যে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে সেখানেও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংস্কার ও বর্ধিতকরণের জোড়ালো দাবি ওঠে। এসব সভায় যারা বিভিন্ন যুক্তি দেখিয়ে অন্যত্র শহীদ মিনার সড়ানোর কথা বলেছেন তাদেরকে চরম ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে।
জানা গেছে, গতকাল (০৮.০৮.১৬) সুনামগঞ্জ পৌরসভায় সুধীজনের এক মতবিনিময় সভা অনুষ্টিত হয়। এই সভায়ও উপস্থিত সুধীজন সুনামগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার অন্যত্র নয় যথাস্থানেই সংস্কার ও বর্ধিতকরণের দাবি জানান। পাশাপাশি সকল জটিলতা নিরসনের আহ্বান জানান।
সুনামগঞ্জ মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি পরিষদের নেতা অ্যাডভোকেট সালেহ আহমদ বলেন, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার আমাদের ঐতিহ্য ও আবেগের এক স্থান। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল মানুষের আবেগ এখানে এসে পুঞ্জিভূত হয়েছে। ঐতিহ্যের এই শহীদ মিনারের তিনদিকেই রয়েছে সরকারের পরিত্যাক্ত জায়গা। সেই জায়গা উদ্ধার করে সম্প্রসারণের বদলে যারা অন্যত্র সড়ানোর চেষ্টা করছে তাদেরকে সেই অপচেষ্টা থেকে সড়ে আসার আহ্বান জানাই। শহীদ মিনার অন্যত্র সড়ানোর চেষ্টা আমরা রূখে দেব।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার যোদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান বলেন, অন্যত্র নয় আমাদের ঐতিহ্যের অনন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটিকেই সম্প্রসারণ ও সংস্কার করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এই শহীদ মিনার অংশ হয়ে আছে। যুগে যুগে প্রেরণা দিয়ে যাচ্ছে নতুন প্রজন্মকে।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!