জঙ্গলকাব্য
তোমাকে বলেছিলাম
তোমার চুলের গন্ধ নেব,
একবার পাঁচটি আঙ্গুলে ছুঁয়ে দিব
ফিরায়ে দিলে সেদিন
উন্মুক্ত উপেক্ষিত করে, অত:পর…
কি হলোরে গৃহস্থালি পঙ্খী!
আজ স্বেচ্ছায় পুরো কৃষ্ণ অরণ্যটাই সপে দিতে চাইলি
অযথাই সময় করলি পার, ব্যাপারটা কি?
অত:পর…
সময়ের স্রোতে ভেসে অবশেষে দাঁড়িয়েছি সমরে
চাই না তোর চুলের গন্ধ, কাজ নেই প্রেম ভ্রমরে,
জঙ্গল-জঙ্গী করবো সাফ, করবো না মাফ
আজ কীটনাশক বিষ দরকার
তোর কাছে আছে কি?
ফাগলের কিচ্ছা
অযুত নিযুত পথ ছিল
একটা পথ কন্ঠকময় কিন্তু সত্য সরল ছিল।
দিন ছিল তাই রাতও ছিল,
ঘন তিমিরে এক আলোক রেখাও ছিল।
মিথ্যার দেশ ছিল বেশ ছিল, তাই
ছদ্মবেশী লোক বেশী ছিল
তবুও, কিছু মানুষ ছিল!
একলা একা নয় সে বাঁকা
পাগলটা বসে ভাবছিল, কাঁদছিল
বৃক্ষ ছিল তাই ছায়া ও ছিল
শীতল ছায়ায়ও সে ঘামছিল।
কাঁর জানি মায়া হলো,
কেঁ জানি তাকে ছুঁয়ে দিল……।
পাগলের সারা হলো পথ খুঁজা
বুঝে নিল তাই চিনে নিল পথটি সোজা।
হৃদয়ের সাথে হৃদয়ে কথা হলো তার
ত্রিতাল নৃত্যে- স্নিগ্ধ চিত্তে ভাসাল সুর তার
তাই সে ছামা গাইছিল।
“তুমি ছুঁয়ে দিলে তাই
পরশমনি ও হে সোনার খনি
তুমিই রাধার প্রাণ তুমিই কানাই।
মায়ার দেশে কুহক রেশে মানুষ খুঁজে পাই।
তুমিই রাধার প্রাণ, মৌলা কানাই।।
হে পরুয়ারদিগার! কোটি কোটি জন্তু জানোয়ার
ঘৃণার বিষে আমাকে, জায়গা দেয় নরকে
আনন্দ উল্লাসে তাই, তোমারই ছামা গাই
তুমি ছাড়া সর্বলোকে আর কিছুইতো নাই।
তুমিই প্রেমের মৌলা, বাঁশী – বংশীধারী কানাই।।
তুমি ছুঁয়ে দিলে তাই…
আমি জংলা ছাড়ি পালাই আর তোমাতে হারাই
তুমি আমার মৌলা, তুমিই রাধার কানাই।।””
পাগলটা সত্যি এবার পাগল হলো
আর কেউ পাগল হবে? সত্য বলো
দিন ফুরালো, ‘বেইল’ কিন্তু আর নাই।।
আরও কিছু বলার ছিল!!!?
দিবাস্বপ্ন
আমার কেউ নাই আর তুমি ছাড়া
নাই দৃশ্য শব্দ গন্ধ, নাই শোক সুখ আনন্দ
আমার নাই জল নাইতো আশ্রয় স্থল
আমার নাই আকাশ চাঁদ তারা।
কিছুই নেই আর আমার তুমি ছাড়া।
রজ: তম গুণ ব্যাধির তুমি আমার দাওয়া
স্পর্শ অনুভূতি তুমি, তুমি দখিণা হাওয়া।
তুমি আর্জি-আকুতি, তুমি মানত-মিনতি
তুমি আরশ আরশি, তুমি পরশ-পরশী
তুমিই সাত আসমান সত্যের ধারা
কিছুই নেই আমার আর তুমি ছাড়া।
তুমি সুর তাল ছন্দ, তুমি ভাল মন্দ
চোখ মুখ নাসিকা তুমি হস্ত পদ স্কন্দ।
তুমি জল জলাদি, তুমি অনন্ত আদি
তুমিই আমার জগত সারা
কেউ নেই কিছু নেই আর তুমি ছাড়া।
তুমি প্রেম প্রেমানন্দ স্বাধের বৃন্দাবন
বাঁশরী – তুমি – বংশীধারী
সুর লহরে ভীষণ আলোড়ন।
কসমস সীমার অন্তের শুরু তুমি
জ্ঞান বিজ্ঞান দর্শন।
ভালোবাসার ছায়া তুমি প্রাণের মায়া
তুমি ত্রিতাল হৃদ স্পন্দন!
সাধ্য নাই রাখি ধরে জীর্ণ এ হৃদয় পুরে
তোমার করূণা ছাড়া
নেই আর আমার আমি- হে অন্তর্যামী তুমি ছাড়া।।