স্টাফ রিপোর্টার::
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগের পর এবার জাতীয় শ্রমিক লীগ সুনামগঞ্জ জেলা শাখা জেলার বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত শ্রমিকদের কিছুদিনের জন্য নির্ধারিত কাজ বন্ধ রেখে হাওরে এসে পাকা ধান কাটার অনুরোধ জানিয়েছে। বৃহষ্পতিবার বিকেলে সংগঠনের আহ্বায়ক সেলিম আহমেদ ও সদস্যসচিব সাইফুল ইসলাম মুবিন স্থানীয় সংবাদপত্রে প্রেস রিলিজ পাঠিয়ে এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষসহ সংগঠনের তৃণমূলের নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করে হাওর এলাকার অন্যান্য পেশার শ্রমিকদের অবিলম্বে কৃষকের পাকা ধান কাটায় সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন। উল্লেখ্য গত ১৭ এপ্রিল জেলা প্রশাসক এবং গত ২৪ এপ্রিল পুলিশ বিভাগ অন্যান্য পেশার শ্রমিকদের হাওরে ধান কাটার আহ্বান জানিয়েছিল।
শ্রমিক লীগের পাঠানো প্রেসরিলিজে জানানো হয়েছে, গত বছর হাওরের একমাত্র বোরো ফসল হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন সুনামগঞ্জের কয়েক লাখ কৃষক। এই অবস্থায় দুর্দশাগ্রস্থ কৃষকের পাশে এসে সহমর্মিতা জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ। ফসলহারানোর পর থেকে প্রায় ২ লাখ কৃষককে এক বছরের মাসিক প্রণোদনাসহ মওসুমের শুরুতে সার বীজ ও নগদ টাকা দিয়ে সহায়তা করা হয়েছে। সরকারের সহায়তা ও নিজেদের পরিশ্রমে এবার হাওরে বোরো চাষ করে বাম্পার ফলন হয়েছে হাওরে। ইতোমধ্যে সব হাওরের ধান পেকে গেলেও শ্রমিকের অভাবে ধান কাটানো যাচ্ছেনা। যার ফলে পাহাড়ি ঢল, ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষকের শ্রমঘামে ফলানো হাওরের ফসল। এমতাবস্থায় বাম্পার ফলন কৃষক ঘরে তোলতে না পারলে জাতীয় অর্থনীতি ক্ষতির মুখে পড়াসহ কৃষক এবং এই অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতিও বিরাট ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কার রয়েছে। জাতীয় শ্রমিক লীগ কৃষকের এই সংকটাপন্ন অবস্থায় উদ্বেগ প্রকাশ করে এই অঞ্চলের বালু-পাথর মহাল এবং শুল্কস্টেশনে কর্মরত প্রায় অর্ধ লক্ষ শ্রমিককে হাওরে এসে কৃষকের পাকা ধান কাটার অনুরোধ জানিয়েছে। এ বিষয়ে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনসহ শ্রমিক লীগের সকল ইউনিটের নেতবৃন্দকে হাওরে ধান কাটতে শ্রমিক পাঠানোর জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও প্রশাসন দ্রুত ধান কাটার জন্য কৃষকদের আহ্বান জানিয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করে পাকা ধান কাটার নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু শ্রমিকের অভাবে ধান কাটতে পারছেন না কৃষকরা।
জাতীয় শ্রমিক লীগ সুনামগঞ্জ জেলা শাখার আহ্বায়ক সেলিম আহমেদ বলেন, আমাদের সরকার গতবার ফসল হারানোর পরই কৃষকদের পাশে দাড়িয়েছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সুনামগঞ্জে এসে নিজ হাতে কৃষককে সহায়তা দিয়ে এই এলাকার লাখো কৃষকের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। মওসুমের শুরুতে তিনি কৃষকদের সার বীজসহ নগদ টাকাও দিয়েছেন। হাওরের সংগ্রামী কৃষকদের পরিশ্রমে এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু শ্রমিকের অভাবে পাকা ধান কাটতে না পারায় পাহাড়ি ঢল, বৃষ্টি ও শিলায় ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। আমরা এ অবস্থা থেকে কৃষকদের সহযোগিতার জন্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানিয়েছি।