স্টাফ রিপোর্টার:
ভারী বর্ষণের আশঙ্কায় সুনামগঞ্জের হাওরের বোরো কৃষকদের পাকা ধান দ্রুত কাটার কাটার জন্য সর্তকবার্তা জারি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ৩০ এপ্রিল থেকে পরবর্তী ৭২ ঘন্টা সুনামগঞ্জ জেলায় ভারি থেকে মাঝারি বর্ষণের আশঙ্কা রয়েছে। বর্ষণ হলে সুনামগঞ্জে প্রায় ২৫০ মিমি বৃষ্টিপাত হতে পারে। যার ফলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি ও আকস্মিক বন্যার সৃষ্টি হয়ে হাওরের সকল পাকা ধান তলিয়ে যেতে পারে। এই আশঙ্কা বার্তা জারি করে শুক্রবার জেলার প্রতিটি উপজেলার মসজিদ-মন্দিরসহ বিভিন্ন স্থানে প্রচারণা চালানো হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী খুশি মোহন সরকার বৃহষ্পতিবার রাতে এই লিখিত সতর্কবার্তা জারি করেন।
পাউবো জারিকৃত সতর্কবার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে বাংলাদেশ ও ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর, বন্যা পুর্ভাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন নিউমারিকেল মডেলের প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী সুনামগঞ্জে ২৯ এপ্রিল থেকে ৭২ ঘন্টার জন্য বাংলাদেশের উত্তরপূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন মেঘালয় এবং আসাম এলাকায় ভারি ও মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। এতে সুনামগঞ্জ, সিলেট, নেত্রকোণা, শেরপুরসহ কয়েকটি জেলায় আগাম বন্যাঝূকিতে পড়তে পারে। এই সময় এ অঞ্চলের নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ছাড়িয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বন্যাও হতে পারে। সকল নদ নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে হাওরের বোরো ধান তলিয়ে যেতে পারে। এমতাবস্থায় হাওরের পাকা বোরো ধান জরুরি ভিত্তিতে কেটে ফেলার জন্য কৃষিকদের প্রতি আহ্বান জানায় পানি উন্নয়ন বোর্ড। পাশাপাশি এ বিষয়ে কৃষকদের মধ্যে প্রচারণা চালানোর জন্য স্থানীয় মসজিদ, মন্দির, হাট বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় এই প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এই চিঠির অনুলিপি স্থানীয় প্রশাসনসহ স্থানীয় সরকারে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছেও পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে মাইকিং প্রচারণা চালিয়ে কৃষকদের সচেতন করার কথা বলা হয়েছে।
এদিকে কৃষকরা জানিয়েছেন হাওরের বোরো ফসল পেকে গেলেও শ্রমিকের অভাবে তারা হাওরের পাকা ধান কাটতে পারছেনা। সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন গত ১৭ এপ্রিল সুনামগঞ্জ জেলাং অন্যান্য পেশায় নিয়োজিত শ্রমিকদের হাওরে এসে ধান কাটার জন্য লিখিত আহ্বান জানিয়েছে। এই আহ্বানের কপি স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান, নির্বাহী অফিসার, ইউপি চেয়ারম্যানদের কাছে পাঠানো হয়েছে। গত ২৪ এপ্রিল সুনামগঞ্জ পুলিশ বিভাগও একই দাবি জানিয়েছে জেলার ভিন্ন পেশার শ্রমিকদের। জাতীয় শ্রমিক লীগ সুনামগঞ্জ জেলা শাখা গত ২৬ এপ্রিল জেলার সকল বালু-পাথর মহাল ও শুল্কস্টেশনের শ্রমিকদের কিছুদিন নির্ধারিত কাজ রেখে হাওরে এসে ধান কাটার জন্য আহ্বান জানিয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারি প্রকৌশল রঞ্জন কুমার দাস বলেন, আগামী ২৯ এপ্রিল থেকে ২ মে পর্যন্ত বাংলাদেশের উত্তর পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন মেঘালয় ও আসামে ভারি ও মাঝারি বৃষ্টি হবে। এতে নদ নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে ওঠে বন্যাপরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। এ কারণে আমরা কৃষকদেরকে দ্রুত হাওরের ধান কেটে ফেলার আহ্বান জানিয়েছি। বিভিন্ন স্থানে আমরা মাইকিং করেছি।