অনলাইন::
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অথবা ফেসবুকের আবিষ্কার হয়েছিল যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে। প্রযুক্তির সাহায্যে দূরের মানুষের মাঝে দূরত্ব ঘোচানোর জন্য। কিন্তু বর্তমানে নানা ঘটনার পরিপেক্ষিতে মনে হচ্ছে, দূরত্ব ঘোচানোর বদলে বরং মানুষের মাঝে বিভেদ ও সংশয় সৃষ্টি করাই এর মূল লক্ষ্য । এর অপব্যবহারের প্রভাব পড়ছে সাধারণ মানুষের ওপর। একদল স্বার্থান্নেষী মহল সামাজিক মাধ্যমকে তাদের দেশবিরোধী আচরণের মাধ্যম হিসেবে গড়ে তুলেছে। তুচ্ছ কিছু ঘটনাকে অতিরঞ্জিত করে, চটকদার ছবি দিয়ে অপ-প্রচার চালিয়ে দেশের শান্তি ও সংহতি নষ্ট করার চেষ্টা করছে তারা।
যার সৃষ্টি হয়েছিল মানুষের মাঝে সঠিক খবরাখবর প্রকাশের জন্য, দূরের মানুষের মাঝে সেতুবন্ধন করার জন্য- সেই মাধ্যমই আজ মানুষের মাঝে বিভেধ সৃষ্টির মূল কারণ। এর প্রভাব পড়ছে দেশের সামাজিক, রাজনৌতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে। সবচাইতে বড় উদাহরণ হিসেবে আমরা বলতে পারি, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপ-প্রচার বিরূপ প্রভাব ফেলেছিলো সাধারণ মানুষের মাঝে। এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি আমাদের দেশে হোক সেটা আমরা চাই না।
বর্তমানে কিছুদিন যাবৎ বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু খবর ছড়ানো হচ্ছে পুলিশ ও সেনাবাহিনী কে কেন্দ্র করে। যা সম্পূর্ণ অনাকাঙ্খিত এবং দুই বাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান ভ্রাতৃত্ববোধ ও শৃঙ্খলা নষ্ট করতে পারে । এই ধরণের অপ-প্রচার আমাদের সাধারণ মানুষের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরী করছে। বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ে এই ধরণের কর্মকান্ড সম্পূর্ণ বেআইনি এবং ভিত্তিহীন। কেবল আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নয়, যেকোনো বিষয় নিয়েই অপপ্রচার আইনের দৃষ্টিতে অপরাধ।
ইতিমধ্যে সেনাপ্রধান এবং আইজিপি সহ দুই বাহিনীর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের উদ্যোগে অনাকাঙ্খিত তুচ্ছ ঘটনাটির সুষ্ঠ সমাধানের উদ্দেশ্যে খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন আইজিপি ও সেনাপ্রধান।
এসব তুচ্ছ অনাকাঙ্খিত ঘটনাকে অতিরঞ্জিত করে ফেসবুক, অনলাইন নিউজ পোর্টাল সহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে সহ ছড়িয়ে যারা দেশে অস্তিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির অপচেষ্টায় লিপ্ত তাদের বিরুদ্ধে অনতিবিলম্বে রাষ্ট্রদ্রোহী এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন এর ৫৭ ধারার মামলায় আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে বলেও তাঁরা জানান।
বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিক নির্দেশনায় পূর্বের যেকোনো সময়ের তুলনায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং পুলিশবাহিনী অনেক বেশি সুশৃঙ্খল এবং বিন্যস্ত।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পুলিশবাহিনী আমাদের দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় সর্বদা সচেষ্ট। দেশের যেকোনো ধরণের প্রয়োজনে সবার আগে এই দুই বাহিনী ঝাঁপিয়ে পরে। ভয়াবহ বন্যা, ভূমিধস কিংবা যেকোনো দুর্যোগে বাংলাদেশ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদা সচেষ্ট। রোহিঙ্গা ইস্যুতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে বাংলাদেশ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী , জঙ্গি হামলা প্রতিরোধ কিংবা সন্ত্রাসী হামলা মোকাবিলায় এই দুই বাহিনীর অগ্রগামী ভূমিকা রয়েছে। আমাদের উচিত তাদের যথাযথ সম্মান করা।
ভুল বা অপ-প্রচারে নয়, সঠিক পথে থেকে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার হোক। মানুষকে সাহায্যের জন্য যার আবিষ্কার, মানুষের উপকারী হোক তার দ্বারা। জরুরি প্রয়োজনে রক্ত যোগান, সাহায্যের আবেদন- এসব কাজে হোক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার। চলুন বিভেদ নয়, বন্ধন গড়ে তুলি। সব ধরণের অপ-প্রচারের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলি।