স্টাফ রিপোর্টার::
দীর্ঘদিন ধরে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তের শুল্কস্টেশন গুলো বন্ধ থাকায় বেকার শ্রমিকরা এবার দৃষ্টি দিয়েছেন সীমান্ত নদী যাদুকাটার দিকে। ফলে অনেক বেকার শ্রমিক এখন যাদুকাটা নদীতে পাথর ও কয়লা কুড়িয়ে জীবন-যাপন করছেন। পেটের দায়ে এসব শ্রমিকরা অনেক সময়ে বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করে ভারতের অভ্যন্তরে গিয়ে বিপত্তি বাধাচ্ছেন। এতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ছে সীমান্ত রক্ষী বাহিনী।
জানা গেছে প্রায় ২ বছর ধরে বড়ছড়া শুল্কস্টেশনসহ তাহিরপুর সীমান্তের তিনটি শুল্কস্টেশনে কয়লা আমদানী বন্ধ রয়েছে। ফলে বিপুল সংখ্যক শ্রমিক বেকার হয়ে মানবেতন জীবন-যাপন করছেন। দীর্ঘদিন বেকার থাকার ফলে সেই শ্রমিকদের অনেকে পেটের টানে পার্শবর্তী সীমান্ত নদী যাদুকাটায় এসে নুড়ি পাথর ও বাংলা কয়লা কুড়াচ্ছে।
জানা গেছে শ্রমিকরা যাদুকাটার দিকে ঝুকে পড়ায় স্থানীয় একটি ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর রোষানলে পড়েছেন। আব্দুজ জহুর সেতু চালু হওয়ার ফলে বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা লাউড়েরগড় এলাকায় গিয়ে ন্যায্যমূল্যে বাংলা কয়লা ও নুড়ি পাথর শ্রমিকদের কাছ থেকে কিনে নিয়ে আসছেন। এতে স্থানীয় একটি ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর বেশি দামে পণ্য মজুদ করে রাখায় বাইরের ব্যবসায়ীরা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের পণ্য বেশি দামে কিনতে চাচ্ছেননা। তাই শ্রমিকদের চাদাঁবাজ ও দুষ্কৃতিকারী আখ্যা দিয়ে স্থানীয় কিছু ব্যবসায়ীরা অপপ্রচার ও নির্যাতন চালাচ্ছে। তারা প্রশাসনিক প্রভাব খাটিয়ে অনেক সময় শ্রমিকদের বিরুদ্ধে অভিযানও পরিচালনা করছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শ্রমিকরা।
জানা গেছে শুল্কস্টেশন বন্ধ থাকার কারণে যাদুকাটা নদীতে বর্তমানে প্রায় ১ হাজার ৫০০ নৌকায় প্রায় ৮-১০ হাজার শ্রমিক নুড়ি পাথর ও বাংলা কয়লা কুড়ানোর কাজ করছেন। কুড়ানো এই পণ্য বিক্রি করেই সংসার চালাচ্ছেন এসব শ্রমিকরা। তবে সম্প্রতি স্থানীয় প্রভাবশালী কিছু ব্যবসায়ী তাদের পণ্য আটকে থাকায় শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ এনে ঘটনা ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
মিয়ারচরের মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার আজাদ বলেন, গত কয়েক দিন ধরে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী ব্যবসায়ী চক্রের ইন্দনে যাদুকাটায় শ্রমিকরা কাজ করতে পারছেনা। এতে তারা মানবেতর জীবন-যাপন করছে। তাছাড়া শ্রমিকদের পক্ষে যারা কথা বলেছে ওই চত্র তাদের বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগ আনছে। ব্যবসায়ীদের স্বার্থে আঘাত পড়ায় শ্রমিকদের বিরুদ্ধে তারা অবস্থান করছে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, শুল্কস্টেশন বন্ধ হওয়ার পর বেকার শ্রমিকরা বেচে থাকার আশায় এখন যাদুকাটার দিকে দৃষ্টি দিয়েছেন। কিন্তু প্রভাবশালীরা এটা চায়না।