1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪০ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

মাধ্যমিক উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা কেন জেলা কলেজে ভর্তি হতে চায়না: ইভা রায়

  • আপডেট টাইম :: মঙ্গলবার, ২৬ জুন, ২০১৮, ৫.২৫ পিএম
  • ২৮৭ বার পড়া হয়েছে

মাধ্যমিক পাস করে আমাদের জেলার কোন শিক্ষার্থীই আর পারতপক্ষে জেলার কলেজে ভর্তি হতে আগ্রহী নয়।এর পিছনে অনেকগুলো কারণ দেখায় তারা।প্রথমত কলেজের সাম্প্রতিক রেজাল্ট খারাপ।দ্বিতীয়ত কলেজে ক্লাস হয় না।তৃতীয়ত কলেজে শিক্ষক নেই।থাকলেও ভাল শিক্ষকের অভাব।এসব অজস্র কারণ নিয়ে আমাদের অভিভাবকগণ তাঁঁদের বাচ্চাদের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত,শংকিত।সমাধান হিসাবে তাঁরা তাঁদের বাচ্চাকে কোন রকমে সিলেট বা ঢাকার কোন কলেজে ভর্তি করাচ্ছেন।
এখন প্রশ্ন হল রেজাল্ট কি প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভর করে,না কি ছাত্র ছাত্রীদের উপর?শিক্ষকদের যথাযথ নির্দেশনা ও পাঠদানের উপর, না কি অভিভাবকদের সচেতন যত্নশীলতার উপর? পরীক্ষা পদ্ধতি, প্রশ্নের উপর,না কি মূল্যায়ন পদ্ধতি উপর?উত্তরে বলব, দায় এড়ানোর সুযোগ নেই কারও।প্রতিটি বিষয় রেজাল্টের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।কিন্তু একটি বিষয় প্রায় সকলেই স্বীকার করবে যে রেজাল্ট ৮০ শতাংশ নির্ভর করে ছাত্র বা ছাত্রীর মানের উপর।অর্থাৎ কোন ছাত্র বা ছাত্রীর মেধা,পরিশ্রম ও নিষ্ঠার উপর।মেধা, পরিশ্রম ও নিষ্ঠার সমন্বয়ে যে কোন ছাত্র বা ছাত্রীর পক্ষে প্রায় যে কোন প্রতিকূলতা কাটিয়ে বের হয়ে আসার নজির অসংখ্য।অথচ এ বিষয়টি অনেকেরই চোখ এড়িয়ে যাচ্ছে।

জেলার সরকারি সকুলগুলোতে প্রাতিষ্ঠানিক সুযোগ সুবিধা ও শিক্ষকদের মান কি জেলার সরকারি কলেজগুলো থেকে ভাল?তাহলে স্কুল পর্যায়ে যে শিক্ষার্থীরা জেলায় পড়তে পারল,তারাই কলেজ পর্যায়ে এসে কেন পড়তে পারছে না?গত দু তিন বছর ধরে স্কুলের ভাল ছাত্র ছাত্রীদের ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ জেলার বাহির চলে গেছে।যেখানে গেছে সেখানকার রেজাল্ট কি শুধু প্রতিষ্ঠান আর শিক্ষকদের গুণে ভাল হচ্ছে?না কি ছাত্র ছাত্রী দিয়ে?আবার সেখানে পড়তে গিয়ে অনেক ছাত্র ছাত্রী ও অভিভাবককে এমন অনেক পরিস্থিতির মধ্য দিয়েও অনেক সময় যেতে হয় যা একান্তই অনাকাঙ্খিত।
বলা বাহুল্য হবে কিনা জানি না যে জেলার সরকারি কলেজগুলোতে যাঁরা আছেন তাঁদের প্রায় সকলেই বি সি এস পরীক্ষা পাস করে এসেছেন।এটি এমন একটি পরীক্ষা যেখানে মাত্র প্রায়১% পরীক্ষার্থী সফল হয়।ঢাকা, সিলেট বা অন্য বড় শহরের সরকারি কলেজের শিক্ষকরাও ওই একই পরীক্ষা পাস করে এসেছেন।ওইসব কলেজের শিক্ষরা বদলি হয়ে এখানে আসলে পরিচয় বদলে যায়।তাই শিক্ষকের মান নিয়ে প্রশ্ন কতটুকু যৌক্তিক?

দেশের একটি প্রান্তিক জেলা হওয়ার কারণে শিক্ষকস্বল্পতা এ কলেজে আগেও ছিল,এখনও আছে।অতীতে আরও অনেক বেশি শিক্ষক স্বল্পতার মধ্যেও কলেজকে বর্তমান অবস্থার মত ইমেজ সংকটে পড়তে হয় নি।এ কলেজে পড়াশুনা করেই অনেক গুণীজন নিজ গুণে দেশের,সমাজের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অধিষ্ঠান করছেন। কলেজের মুখ উজ্জ্বল করেছেন।জেলার সবচেয়ে বৃহৎ বিদ্যাপীঠটি তার অতীত গৌরবময় ঐতিহ্যকে হারাতে বসেছে।এটি অত্যন্ত দূঃখের।
তবে আশার কথা হচ্ছে কলেজে নব নিযুক্ত অধ্যক্ষ মহোদয় প্রফেসর নীলিমা চন্দ ম্যাডাম প্রথমেই কলেজকে কাঙ্খিত জায়গায় নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে আন্তরিক প্রচেষ্টা ও উদ্যোগ গ্রহণের দৃপ্ত প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।এছাড়া উপাধ্যক্ষ হিসাবে আমরা পেয়েছি আর এক গুণী মানুষকে।আমরা আশাবাদী,আমাদের সকল সফলতা ও বিফলতার কেন্দ্রবিন্দু, আমাদের ছাত্র ছাত্রীরা তাদের মেধা,শ্রম ও নিষ্ঠা নিয়ে আমাদের সহযাত্রী হলে কলেজ তার গৌরবোজ্জ্বল অতীতকে ফিরে পেতে দেরি হবে না।অভিভাবকদের প্রধান আশংকার জায়গা রেজাল্ট। বড় কলেজগুলোতে যে মানের ছাত্র ছাত্রী পাঠিয়ে অভিভাবকরা ভরসা করছেন,এ কলেজেও একই মানের ছাত্র ছাত্রী দিয়ে ভরসা করলে আশা করি নিরাশ হতে হবে না।উপরন্তু সন্তানকে বাহিরে রেখে পড়াশুনার খরচ অনেকটা বেঁচে যাবে। সন্তানও জীবনের একটি vulnerable period এ চোখের সামনে থাকে। বিষয়গুলো যৌক্তিকভাবে ভেবে না দেখে কলেজ নিয়ে অতি মাত্রায় নেতিবাচক প্রচারনায় মেতে উঠে বা ভেসে গেলে পরিশেষে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কে?
আমার নিজ জেলা হবিগঞ্জে ও একই অবস্থা।আমার বহু নিকটাত্মীয়রাও একই আশংকায় বৃন্দাবন কলেজকে নিয়ে।হয়তো আরও অনেক জেলা শহরের কলেজেকে নিয়ে একই ভাবনা।সন্তান ভর্তির ব্যাপারে অভিভাবকদের দৃষ্টিভঙ্গি খানিকটা যৌক্তিক হলে হয়তো অবস্থার পরিবর্তন সম্ভব হতো।আস্থার জায়গা ফিরে পেতে হলে ভরসা করতে হবে।সম্ভাবনাময় জেলা কলেজগুলোও গৌরবময় ঐতিহ্য ফিরে পাবে।আখেরে লাভ হবে পুরো জেলাবাসীর।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!