তৌহিদ চৌধুরী প্রদীপ::
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে ডাকপ্লেগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে ঝাঁকে ঝাঁকে হাঁস ও মোরগ। তবে কেন হার মোরগ মারা যাচ্ছে জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগের সংশ্লিষ্টরা ষ্পষ্ট করে বলতে পারছেনা। সম্প্রতি এ উপজেলার কয়েকটি গ্রামে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হাঁসের মৃত্যু হয়েছে।
খামারী ও কৃষকরা জানিয়েছেন ফার্মের মধ্যে দু-একটা হাঁসের মধ্যে রোগটি দেখা দিলে এক-দুই দিনের মধ্যেই হাঁস মারা যাওয়া শুরু করে। আর উপজেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগের সহকারি জানিয়েছেন ভাইরাস জনিত রোগ, যা পানিতে ভাসমান অবস্থায় থাকে, সম্ভবত এই কারনেই হাঁসের খামারে মড়ক দেখা দিয়েছে। জামালগঞ্জ উপজেলার সব কটি ইউনিয়নে ছোট বড় মিলিয়ে কয়েক শতাধিক হাস ও মুরগীর ফার্ম রয়েছে। নাম না জানা রোগের কারনে আবার অনেক হাসের ফার্মের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতংক। খামারী ও কৃষক পরিবারের সদস্যরা স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা সেবা দিয়েও কোন ধরনের ফল পাচ্ছেন না। রোগে বালাইয়ের কারনে খামারীরা তাদের হাস গুলো বিক্রি করে ফেলছেন। এর ফলে জামালগঞ্জের হাট বাজার গুলো ও ছোট বড় বাজার গুলোতে চলছে কম দামে চলছে হাস বিক্রি।
সম্প্রতি ফেনারবাক ইউনিয়নের লক্ষীপুরে গ্রামের সেকেল মিয়ার ১৪ শত হাস, সাচনা বাজার ইউনিয়নের সাবাজ মিয়ার ৫ শতাধিক হাস, ভীমখালী ইউনিয়নের মাহমুদপুর গ্রামের নাসির উদ্দিনের ৭ শতাধিক হাস, একই গ্রামের হুমায়ুন কবিরের শতাধিক হাস, আকিবুর রহমানের ৭০টি হাস, চান্দের নগরের আরুজা বেগমের ৮০ টি হাস, জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নের উত্তর কামলাবাজ গ্রামের মাষ্টার মিয়ার সাড়ে ৫ শতাধিক হাস মারা গেছে। ফেনারবাকের শরীফ পুরের খামারী, সুজাতপুর,রামপুরের একাধিক খামারীরও কয়েকশত হাঁস মারা গেছে। একই ভাবে বেহেলী ইউনিয়ন,জামালগঞ্জ সদর ইউনিয়নের একাধিক গ্রামে হাসের ফার্মের মধ্যে মড়ক দেখা দিয়েছে।
হাঁসের কোন মুরগীর ফার্মের মধ্যেও দেখা দিয়েছে নানান রোগ বালাই। খামারীদের দাবী দ্রুত এই বিষয় গুলিতে ব্যবস্থা গ্রহন না করা হলে জামালগঞ্জের সব গুলি হাসের খামার গুলি বন্ধ হয়ে যাবে। ক্ষতিগ্রস্থ জামালগঞ্জের হাসের খামারী জানিয়েছেন, আমাদের ফার্মের মধ্যে রোগ বালাই দেখা দেওয়ার দুই-একদিনের মধ্যে হাস মারা যাওয়া শুরু হয়ে দুই তিন দিনের মধ্যেই সব মারা যায়।
উপজেলা প্রানী সম্পদের সহকারী আব্দুল লতিফ বলেন, রোগ বালাই দেখা দেওয়ার পর আমি কয়েক জায়গায় গিয়ে দেখে এসেছি। আমার স্যার এই বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন। তবে আমার ধারনা পানি বাহিত রোগ যা ভাইরাস জাতীয়।
জামালগঞ্জ উপজেলা প্রানী সম্পদের ভেটেইনারী সার্জন ডা: মোমিনুর রহমান বলেন, বন্যার পানিতে ও হাওরের পচা ঘাস খেয়ে হাস গুলো আক্রান্ত হয়েছে। দূরের জায়গা গুলোতে যেতে পারিনি। উপজেলা সদরের আশেপাশে গিয়েছি। মৃত হাস গুলোর ময়না তদন্ত করা হয়েছিলো। সম্ভবত ডাক প্লেগে হাস মারা যাচ্ছে।