বিশেষ প্রতিনিধি, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ
নেই সরকারি কোনো অনুমোদন। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলাব্যপী দিব্যি চালিয়ে যাচ্ছে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম। অন্যান্য ক্ষুদ্রঋণ সংস্থার তুলনায় বেশি সুদের হার গ্রহণ ও মাত্র আড়াই মাসে সুদ সমেত সম্পূর্ণ টাকা ফেরতের মতো কার্যক্রম পবিচালনা করছে ফাইভ স্টার গ্রাম উন্নয়ন সংস্থা নামের একটি ভূইফোঁর সংস্থা। সংস্থাটি পরিচালনা করছেন উপজেলার পাথারিয়া ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের শাহ আলম নামের এক লোক।
জানা যায়, উপজেলার শান্তিগঞ্জ বাজার, পাগলা বাজার, দিরাই রাস্তা (মদনপুর পয়েন্ট)সহ উপজেলার একাধিক বাজারের ক্ষুদ্র থেকে মধ্যম মুদির দোকান ব্যবসায়ীদের সাথে এমন ঋণের লেনদেন করেন সংস্থাটি। ঋণ গ্রহিতা দোকানীরা গত ২ বছর খানেক আগে উপজেলার পাথারিয়া ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের (বর্তমানে শান্তিগঞ্জ এলাকার পার্বতীপুর বসবাসকারী) শাহ আলম ফাইভ স্টার গ্রাম উন্নয়ন সংস্থার নামে সরকারী অথবা বেসরকারী কোন অনুমোদন ছাড়াই উচ্চহার সুদে দোকানে দোকানে গিয়ে ক্ষুদ্র্ঋণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতি ১০ হাজারে ১ হাজার টাকা জামানত নিয়ে ১০ কিস্তিতে অর্থাৎ প্রতি সপ্তাহে ১ কিস্ত হলে ১০ কিস্তিতে আড়াই মাসে টাকা আদায় করছেন। প্রতি কিস্তিতে গ্রাহকের কাছ থেকে ১১ শত টাকা হারে আদায় করা হচ্ছে। জামানত হিসেবে নেওয়া হয় গ্রাহকের ব্ল্যাঙ্ক চেক ও নগদ ১ হাজার টাকা। দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা অফিসসূত্রে জানা যায়, দক্ষিন সুনামদগঞ্জে সরকারিবাবে ফাইভ স্টার গ্রাম উন্নয়ন সংস্থা নামের কোনো সংস্থাকে কোনো কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোতি দেওয়া হয়নি। অনেক খোঁজাখোঁজি করে এ নামে কোনো সংস্থা পাওয়া যায়নি।
এ সংস্থা থেকে ঋণ গ্রহণ করেন দিরাই রাস্তা (মদনপুর পয়েন্ট) আইয়ূবুর রহমান, আবিদুর রহমান, এশাদুর রহমান, কামরূপদলং গ্রামের জমিরুল হক ও পার্বতীপুর গ্রামের সুয়েব আহমদ। তারা এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমরা ফাইভ স্টার সংস্থা থেকে ১০ হাজার টাকা ঋণ উঠিয়েছি। জামানত হিসেবে ১ হাজার টাকা দিয়েছি। আমরা শাহ্ আলম ভাইয়ের কাছে প্রতি সপ্তাহে ১১শ টাকা কিস্তি দেই।’
পার্বতীপুর গ্রামের নূরুল হকের ছেলে বাদশা মিয়া বলেন, ‘ফাইভ স্টার সংস্থা থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋণ তুলার জন্য ৩ হাজার টাকা জামানত দিয়েছি। তিনি আমাকে লোনও দিচ্ছেন না, আমার টাকাও ফেরত দিচ্ছেন না। আমাকে শুধু হাটাচ্ছেন।’
এ ব্যাপারে সংস্থাটির পরিচালক হিসেবে পরিচিত শাহ আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, ‘আমরা একটি ক্ষুদঋণ প্রকল্প খুলতে চেয়েছিলাম কিন্তু অনুমোদন না পেয়ে খুলতে পারি নাই।’ ঋণ দেওয়া ও উঠানোর ব্যাপার অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমি ঋণ দেইও না উঠাইও না।’
এ ব্যাপারে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার হারুন অর রশিদ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ফাইভ স্টাার গ্রাম উন্নয়ন সংস্থার নামে ক্ষুদ্রঋণদান কর্মসূচী আমাদের উপজেলায় কেউ অনুমোদন নেয় নাই, অনুমোদন ছাড়া কেউ যদি তা করে থাকে তাহলে তা আমরা খতিয়ে দেখব।’