অনলাইন ডেক্স::
আগামীকাল ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে জন্মদিনের সব কর্মসূচি বাতিল করাকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এর ফলে তার ‘শুভ বুদ্ধির উদয়’ বলে মনে করছে আওয়ামী লীগসহ দেশের প্রগতিশীল সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। দলটির নেতাদের আশা, খালেদা জিয়া আর কখনোই ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন করবেন না।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বলেন, এ সিদ্ধান্ত নেওয়ায় খালেদা জিয়াকে ধন্যবাদ। মনে হচ্ছে, তাঁর শুভ বুদ্ধির উদয় হয়েছে। সভাপতিম-লীর আরেক সদস্য নূহ-উল-আলম লেনিন বলেন, খালেদা জিয়া যদি ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন থেকে বিরত থাকেন, তাহলে তাঁর জন্যও ভালো, গণতন্ত্রের জন্যও ভালো।
দলটির একজন সভাপতিম-লী ও তিনজন সম্পাদকম-লীর সদস্য বলেন, দেশের চলমান ‘সংকট’ ও বন্যা পরিস্থিতির কারণে খালেদা জিয়া এবার জন্মদিন উদ্যাপন না করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেটা তাঁদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়নি। তাঁদের মতে, খালেদা জিয়া রাজনীতিতে এখন গর্তের মধ্যে পড়ে রয়েছেন। যেকোনো উপায়ে প্রধানমন্ত্রীর ‘নৈকট্য’ ও ‘আনুকূল্য’ পেতে চাইছেন তিনি। ফলে প্রধানমন্ত্রীর সবচেয়ে শোকের, কষ্টের ও বিষাদের দিনটিকে বেছে নিয়েছেন। এ জন্য আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন খালেদা জিয়া। তবে জন্মদিনের কর্মসূচি বাতিলের কারণ হিসেবে শোক দিবসের কথা উল্লেখ না করায় খালেদা জিয়ার সিদ্ধান্তকে ‘ভাঁওতাবাজি’ বলেছেন দলটির দুজন মধ্যমসারীর নেতা।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ১৫ আগস্ট যে খালেদা জিয়ার জন্মদিন নয়, এটা দেশের মানুষ জানে। তাই জন্মদিনের কর্মসূচি বাতিল করে তিনি বিরাট কাজ করে ফেলেছেন, এটা বলা যাবে না। আর তিনি কর্মসূচি বাতিলের যে দুটি কারণ উল্লেখ করেছেন, তা ভাঁওতাবাজি ছাড়া আর কিছুই নয়।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। আওয়ামী লীগসহ দেশের বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সরকারিভাবে এই দিনটিকে শোক দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ঠিক এই দিনেই বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্মদিন উদ্যাপন নিয়ে বিতর্ক আছে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনেও।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ওবায়দুল কাদের বলেন, তাঁর এই শুভবুদ্ধির উদয় রাজনীতির জন্য ভালো। কারণ, জাতীয় শোক দিবসে এ ধরনের কাজ দেশের মানুষ পছন্দ করে না। তিনি আরেক দিনও তো জন্মদিন পালন করতে পারেন। তিনি বলেন, ‘তাঁর (খালেদা জিয়া) জন্মদিন আসলে কোনটি, তা নিয়ে দেশের মানুষ বিভ্রান্ত। বিভিন্ন নথিতে তাঁর জন্মদিন পাঁচটা। তাঁর উচিত আসল জন্মদিনের তারিখটা ঠিক করে জাতিকে জানানো।’
খালেদা জিয়া ১৯৯১ সালে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর ১৯৯৩ সালের ১৫ আগস্ট জন্মদিন উদ্যাপন শুরু করেন; তবে তা ছিল ঘরোয়াভাবে ও অনাড়ম্বরভাবে। বিএনপি ক্ষমতা হারিয়ে বিরোধী দলে যাওয়ার পর ১৯৯৬ সাল থেকে এ দিনটিতে কেক কেটে জন্মদিন উদ্যাপন শুরু হয়। ১৯৯৬ সালের ১৫ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রীর মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে খালেদা জিয়া প্রথমবারের মতো নেতা-কর্মীদের নিয়ে কেক কেটে জন্মদিন উদ্যাপন করা শুরু করেন।
তখন থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতা-কর্মীরা খালেদা জিয়াকে জন্মদিন পালন না করার আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন।